শেয়ারবাজারে স্থিতি আনতে এফবিসিসিআইর সুপারিশ তৈরি
শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কিছু সুপারিশ তৈরি করেছে পুঁজিবাজারবিষয়ক এফবিসিসিআইর স্ট্যান্ডিং কমিটি। গতকাল বুধবার বিকেলে মতিঝিলের এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এফবিসিসিআইর 'স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ক্যাপিটাল মার্কেট'-এর বৈঠক শেষে কমিটির চেয়ারম্যান ও ডিএসই পরিচালক রকিবুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, 'কিভাবে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করে তোলা যায় সে বিষয়ে আজ কমিটি
আলোচনা হয়েছে।'এই কমিটিতে এফবিসিসিআইর পরিচালক, ডিএসইর পরিচালক পর্ষদের সদস্য, বিভিন্ন কমিটির কো চেয়ারম্যান ও বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন। রকিবুর রহমান জানান, কিভাবে সরকার ও এসইসির প্রস্তাবগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়_এ বিষয়টি ছাড়াও বিনিয়োগকারীদের দাবি-দাওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেগুলো কিভাবে দূর করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রকিবুর রহমান বলেন, 'বৈঠকে ভালো অনেক প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, যা দু-এক দিনের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ে জমা দেওয়া হবে। এসব সুপারিশ পর্যালোচনা করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হবে।' সরকারের প্রণোদনাগুলো বাস্তবায়নে এসব সুপারিশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান। সুপারিশের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার কেনা, তাদের শেয়ার ব্লক মার্কেটে কেনাবেচার নিয়ম করা, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানান। বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের তিনটি সংগঠন আলাদাভাবে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। বৈঠকে এফবিসিসিআই পরিচালক, ডিএসই পরিচালক ও বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিনিয়োগকারীদের আট দফা প্রস্তাব : পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত ২৮ লাখ বিনিয়োগকারী তথা দেড় কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের কথা ভেবে এফবিসিসিআইর পুঁজিবাজার সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে আট দফা প্রস্তাব রেখেছেন পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা। সভাপতি মিজান-উর-রশিদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রস্তাবগুলো হচ্ছে, এসইসি এবং ডিএসই কর্তৃক সমপ্রতি গৃহীত সব পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করা এবং সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং অব্যাহত রাখা।
পুঁজিবাজারের সর্বনিম্ন সূচক ৫৫০০ করে সার্কিট ব্রেকার করার সুপারিশ করা হয়েছে। অন্য প্রস্তাবগুলো হচ্ছে, মার্জিন লোনের পোর্টফোলিও বিক্রি বন্ধ রাখতে হবে, যা বাজারে ফোর্সড সেল বন্ধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে (৩০ শতাংশ) শেয়ার কিনতে হবে। প্রত্যেক ব্রোকারেজ হাউসকে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত স্থায়ী বিনিয়োগ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা করতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পোর্টফোলিও এসইসির কাছে দাখিল করতে হবে। এ ছাড়া বাইব্যাক প্রতিনিয়ত প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেওয়া ১০ শতাংশ কর রেয়াত কার্যকর করে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে। বৈঠক শেষে বিনিয়োগকারীদের নেতারা জানান, সরকার-ঘোষিত বাজার স্থিতিশীলকরণ প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি উপরিউক্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হলে তা বাজার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
No comments