দাম বাড়ায় ডিম আমদানি ফের উন্মুক্ত
দাম হালিপ্রতি ৪২ টাকায় উঠে যাওয়ায় আবারও ডিম আমদানি উন্মুক্ত করে সরকার। গতকাল রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ডিম আমদানিতে আগে থেকে অনুমোদন নেওয়ার নিয়মটি তুলে দেওয়া হয়েছে। খাওয়ার ডিমের পাশাপাশি, বাচ্চা ফোটানোর ডিম ও এক দিন বয়সী মুরগির বাচ্চা আমদানিও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হলেও ডিম আমদানি উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্তটি গত ৪ সেপ্টেম্বর নেওয়া হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর আগে রমজান উপলক্ষে এক দফা ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যে সুযোগ ৩১ আগস্ট শেষ হয়।
রোজার আগে আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর ডিমের হালিপ্রতি দাম ৪০ টাকা থেকে ৩৩-৩৪ টাকায় নেমেছিল। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু আমদানির অনুমতি নয়, রোজায় চাহিদা কমে যাওয়াও কারণ বলে দাবি করেছিলেন আড়ত মালিকরা। তবে ঈদের পরে আবার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। গতকাল ঢাকার বাজারে ৪২ টাকা হালি দরে ডিম বিক্রি হয়েছে। আর এক ডজন ডিম কিনতে ক্রেতাদের ব্যয় করতে হয়েছে ১২০ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাস আগে প্রতি হালি ডিমের দাম ছিল ৩১-৩২ টাকা। এক মাসে দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আর এক বছর আগে ডিমের হালিপ্রতি দাম ২৬-২৭ টাকা ছিল বলে সংস্থাটির বাজার দরের তালিকায় দেখা যায়।
ডিমের দাম এত বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণ সরবরাহ সংকট বলে উল্লেখ করে পোলট্রি খাত-সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু ডিম খাওয়ার পরিমাণ ৩১-৩৩টি। দেশে দৈনিক প্রায় আড়াই কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। তবে বিভিন্ন সময় এ চাহিদা ওঠানামা করে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডিমের উৎপাদন হতো। গত অর্থবছরে সেটা কমে চার হাজার কোটিতে নেমেছে।
বছরের এ সময়টায় হাঁসের ডিমের উৎপাদন কম থাকে। আবার কার্তিকে গিয়ে বাড়ে। এটাও ডিমের দাম বাড়ার একটা কারণ বলে উল্লেখ করেন ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভোক্তাদের চাহিদা মোতাবেক বাজারে হাঁস-মুরগি ও পাখির ডিম, হ্যাচিং ডিম ও এক দিনের মুরগির বাচ্চার সরবরাহ ঠিক রাখার স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বর্তমান আমদানিনীতি আদেশের কিছু বিধান নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে শিথিল করেছে। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ৪ সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে হাঁস-মুরগি ও পাখির ডিম, হ্যাচিং ডিম ও এক দিনের মুরগির বাচ্চা আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি গ্রহণ করার প্রয়োজন হবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এগুলো অবাধে আমদানি করা যাবে।
ডিম আমদানির সুযোগ দেওয়ায় দাম কমবে কি না জানতে চাইলে তেজগাঁও ডিমের আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, দাম কমবে কি না তা বোঝা যাবে বাজারে আমদানি করা ডিম আসার পর। আমদানির অনুমতি দেওয়া আতঙ্কে দাম কিছুটা কমে। তবে কিছুদিন পরেই আগের মতো হয়ে যায়। তিনি বলেন, ঈদের পরে খামারে মুরগি ওঠানো হয়েছে। ফলে ডিমের সরবরাহ কিছুদিনের মধ্যে বাড়বে। তখন দাম কমবে।
No comments