এখনো মসিউরকে পদত্যাগ করতে বলা হয়নি
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের পদত্যাগ বা বাধ্যতামূলক ছুটি নিয়ে গতকাল রবিবার দিনভর গুঞ্জন ছিল। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত পদত্যাগ বা ছুটির বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেননি এই উপদেষ্টা। এমনকি তাঁর দল আওয়ামী লীগ বা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে এ বিষয়ে কোনো ধরনের প্রস্তাবও দেওয়া
হয়নি। তবে দল ও সরকারের দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ মৌখিকভাবে তাঁকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ বা পদত্যাগ করতে নিষেধ করছেন।
ড. মসিউর রহমান পদত্যাগ করলে বা তাঁকে 'কার্যকর ছুটি'তে পাঠানো হলে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের পথ সুগম হবে- শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন মন্তব্যের পর এ বিষয়ে গুঞ্জন শুরু হয়।
মসিউর রহমানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, পদত্যাগ করার বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে কেউই তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি। তবে দলের দায়িত্বশীল অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে মসিউর রহমানকে ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ তাঁকে ছুটিতে যাওয়ার বা পদত্যাগ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে মসিউর রহমান এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
একটি বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সৈয়দ আশরাফ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের কাছে জানতে চান, মসিউর রহমানকে ছুটিতে পাঠালে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে কি না। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রশ্নে ইতিবাচক জবাব দেন সৈয়দ আশরাফ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, মসিউর রহমানের পদত্যাগ বা ছুটি সম্পর্কে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আজ মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মসিউর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও অন্য মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে তাঁর জন্যও বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে একটি ফোল্ডার তৈরি করে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি মসিউর রহমানের পদত্যাগ প্রশ্নে বিশ্বব্যাংক কিছুটা নরম হয়েছে বলে জানান সরকারের এক নীতিনির্ধারক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, মসিউর রহমান পদত্যাগ না করলেও তাঁকে অবশ্যই কার্যকর ছুটিতে পাঠাতে হবে। অর্থাৎ ছুটিতে থাকাকালে তিনি সরকারের কোনো বৈঠক, সভা ও সেমিনারে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এই উপদেষ্টা এ শর্তও মেনে নিতে নারাজ।
এসব বিষয়ে কথা বলতে ড. মসিউর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয় নিয়ে বিশ্বব্যাংকের মনোভাব জানতে গতকাল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করতে রাত সাড়ে ৯টায় তিনি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। অবশ্য তাঁর ওয়াশিংটনে যাওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকরা গতকাল দিনভর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করলেও বিষয়টা নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
No comments