পাঠকের মন্তব্য- মানুষকে এত বোকা ভাবেন কেন?

প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে (pৎothom-alo.com) প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পাঠকের মতামত প্রকাশিত হয়। তাঁদের মতামত অন্যদের চিন্তার খোরাক জোগায়। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য সামান্য সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।


www.pৎothom-alo.com থেকে

সরকার ও জোটে অস্বস্তি
মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সাফল্য অনেকটাই ম্লান হয়ে যায় দুই প্রবীণ নেতার মন্ত্রিত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি। তারই প্রতিফলন ছিল গত শনিবার প্রথম আলোর প্রধান সংবাদে। এ সম্পর্কে শুভ শাহরিয়ার লিখেছেন: মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করার মতো সাহস বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু এর মূল কারণ ও তার ওপর ভিত্তি করে দলের ভুল শোধরানোর মতো উদার মনের পরিচয় আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেখাতে পারবেন কি না, এটাই প্রশ্ন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঠক: তোফায়েল আহমেদও একজন সাধারণ মানুষ। তিনি ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নন। তবে এ রকম অসময়ে মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি যে অনেক বড় মাপের একজন নেতা, এটা অন্তত এই প্রজন্মের মানুষ অনুভব করতে পেরেছে বলে আমার মনে হয়। অসময়ে মন্ত্রিত্বের আহ্বান জানিয়ে বরং ক্ষমতাসীন দল তাদের রাজনৈতিক মেধাহীনতা, অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে। তাদের এ ভুলের দায় মোটেই এই নেতার ঘাড়ে চাপানো উচিত নয়।
মানিউর রহমান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ গ্র্রহণ অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘আমি কাউকে ফোন করিনি। দলের সভাপতি হিসেবে আমার নির্দেশ অমান্য করলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রশ্ন উঠত।’ এই কথার মানে কী? প্রধানমন্ত্রী কি সচিব মহোদয়কে এই সাতজনের নামের তালিকা দেননি, যে সাতজন নতুন মন্ত্রীকে সরকারে নেওয়া হলো। কার নির্দেশে তাঁদের নাম এল? মন্ত্রিপরিষদ সচিব তাঁর একক ইচ্ছা ও পছন্দেই কি তাঁদের তালিকা তৈরি করেছিলেন এবং সবাইকে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন? তা হলে প্রশ্ন, সংসদীয় সরকারব্যবস্থায় মন্ত্রিসভা গঠন, মন্ত্রিসভা থেকে কাউকে বাদ দেওয়া বা নতুন কাউকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া—এসবের দায়িত্ব কার? মানুষ কি এতই বোকা?

মন্ত্রিত্বের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি জাতীয় পার্টিও
জাতীয় পার্টি তাদের আর কোনো সদস্যকে মন্ত্রিসভায় পাঠাতে অস্বীকার করেছে। তারা এখন একাই চলতে চায়। এ সম্পর্কে মাহতাফ হোসেন লিখেছেন: জাতীয় পার্টি আওয়ামী মহাজোট সরকারে যোগ দিয়েছে দলের চেয়ারম্যান এরশাদের মামলাসংক্রান্ত ভীতি থেকে। আওয়ামী লীগের খামখেয়ালিপনা মেনে যাচ্ছে। এখনো ওই জোটে আছে। আওয়ামী লীগের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করছে—সবই এরশাদের মামলাসংক্রান্ত ভীতি থেকে। কিন্তু শেষ সময়ে এ দলটা কী করবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে হ্যাঁ, একটা অনুমান তো করাই যায়। আর তা হলো সরকারের শেষ সময়ে এ দলটার সরকার থেকে বেরিয়ে এসে বিরোধী শিবিরে যোগ দিয়ে আন্দোলনে একাত্ম হওয়া। এর সম্ভাবনাই বেশি। কেননা, এরশাদ সাহেবের মতো ব্যক্তির জনগণের মুখের ভাষা, চোখের ভাষা না বোঝার কথা নয়। জনগণ এ মুহূর্তে কী চাইছে, তা না বুঝে ঝুঁকি নেওয়ার খেসারত তো ইতিপূর্বে তাঁকে অনেক দিতে হয়েছে।
মো. এইচ ইউ তালুকদার: এরশাদ খুবই সুচতুর লোক। এখন উনি বুঝতে পেরেছেন যে সরকারের অবস্থা খারাপের দিকে এবং সরকারের যত সব দুর্নীতির দায়ভার তাঁদের ঘাড়েও পড়তে পারে। তাই এরশাদ মহাজোটের ফাঁদের ভেতর থেকে বাইরে বের হতে চাইছেন।

গভীর রাতে সেতু থেকে লাশ ফেলা হয় মেঘনায়!
গত শুক্রবার প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি তুলে এনেছেন সুমন মোল্লা। এতে প্রথম আলোর পাঠকেরা অত্যন্ত বিস্মিত। পাঠক হাবিব সুমন লিখেছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘরে তালা দিতে বলেছেন। কারণ, প্রধানমন্ত্রী ওনাকে বেড পাহারা দেওয়া থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন; কিন্তু ব্রিজের পাহারা কেন ঠিকমতো দেওয়া হয় না? যারা মাঝেমধ্যে একই ঘটনা একই জায়গায় ঘটাচ্ছে, তাদের ধরার মতো বুদ্ধি আমাদের পুলিশের নেই! মানুষকে এত বোকা ভাবেন কেন?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঠক: পুলিশ সদস্যরা এ দেশের সব মানুষকেই কি গাধা মনে করেন? যেখানে এ রকম ঘটনা ঘটে বলে আপনাদের কাছে ফোন আসে, সেখানে শুধু এই এক জায়গায় কেন, দেশের সর্বত্র গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে না কেন? এতটুকু একটা দেশে আপনাদের এই নজরদারি কি খুবই কঠিন? মোটেই না। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার—এখনকার একজন তরুণ, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, তিনি কেবলই ছাত্ররাজনীতি করে বেড়ান না। তিনি আরও অনেক কিছুরই খবর রাখেন। আপনাদের এই অসভ্যতা দেশটাকে মেধাশূন্য করে ফেলবে। এ দেশে কোনো মেধাবী ছেলেমেয়ে থাকবে না। সবাই দিনমজুরের চাকরি নিয়ে হলেও এ দেশ ছেড়ে চলে যাবে।

চোরদেরই বলবেন, ‘তুই চোর-তুই চোর’
বিশিষ্ট কলাম লেখক এবিএম মূসা তাঁর ‘সময়ের প্রতিবিম্ব’ কলামে ‘তুই চোর’ কথার একটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যা পাঠকদের আপ্লুত করেছে। এ সম্পর্কে কামরুল লিখেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আওয়ামী লীগে কি যোগ্য লোকের অভাব ছিল? তোফায়েলের মতো নেতা মন্ত্রিত্ব পান না। হায় রে দেশ! মূসা ভাই, এভাবে কলম সবাই চালিয়ে যান।
ইমাম হোসেন: এ লেখাটি পড়ে আমি আবেগাপ্লুত। আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে হাতেখড়ির ইতিহাস জানি। তিনি বর্তমান আওয়ামী লিগের নেতা ছিলেন না। তিনি একটি সুউচ্চ দেয়াল ছিলেন, যেখানে সুবিধাবাদীরা ওই দেয়ালের নাগাল পেতেন না, এখন পাচ্ছেন।
আসাদ জামান: জাগ্রত হোক জাতির বিবেক। জাগ্রত হোক আওয়ামী লীগ এবং সব দলের বিবেকবান সব মানুষ।
আহসান: জাপানে থাকি। অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে দেশে পাঠাই। সেই টাকা চোরের ভুঁড়ি বড় করবে, তা আমি চাই না। আমার মতো অনেকের কষ্টের টাকায় চলছে দেশ। কিন্তু কিছু লোক সরকারের পরোক্ষ সহায়তায় বিনা কষ্টে দিন দিন আরামে ভুঁড়ি বড় করছে। কান টানলে মাথা চলে আসবে। তাই সরকার ভয়ে হলমার্ক, ডেসটিনি, শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারির নায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কারণ, এদের বেশির ভাগই পরোক্ষ বড় চোর। দুঃখ একটাই—কিছু করার নেই। তবু এবিএম মূসার মতো দূর থেকে চিৎকার করে বলছি, ‘তুই চোর-তুই চোর’। চোর তাড়াও, দেশ বাঁচাও।

অর্থায়নে অসুবিধা হলে শুধু গাড়ি চলার জন্য পদ্মা সেতু হবে
গত বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে শরিফ লিখেছেন: আমি মনে করি ১০০টা পদ্মা সেতু করলেও কোনো লাভ হবে না। মানুষ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, মাত্র ১৩ মাসে এত বড় প্রকল্প শেষ করা সম্ভব নয়; বরং দুর্নীতি আরও বেশি মাত্রায় হতে পারে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাদ দিয়ে শেয়ারবাজার ও ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতাদের এবং দুর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের কঠোর বিচার যদি ক্ষমতা ত্যাগের আগে করতে পারেন, তবেই জনগণ পদ্মা সেতুর কষ্ট ভুলতে পারবে।

(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন pৎothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.