পবিত্র কোরআনের আলো-নূহ (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করে মহানবী (সা.)কে ধৈর্য ও সান্ত্বনার উপদেশ দেওয়া হয়েছে
৪৭. ক্বা-লা রাব্বি ইন্নী আঊযুবিকা আন্ আছআলাকা মা-লাইছা লী বিহী ই'লমুন; ওয়া ইল্লা- তাগ্ফির লি ওয়া তারহ্বামনী আকুম্ মিনাল খা-ছিরীন।
৪৮. ক্বীলা ইয়া-নূহুহ্বিত্ব বিছালামিম্ মিন্না- ওয়া বারাকা-তিন আ'লাইকা ওয়া আ'লা- উমামিম্ মিম্মাআ'ক; ওয়া উমামুন ছানুমাত্তিউ'হুম ছুম্মা ইয়ামাচ্ছুহুম্ মিন্না- আ'যা-বুন আলীম।
৪৮. ক্বীলা ইয়া-নূহুহ্বিত্ব বিছালামিম্ মিন্না- ওয়া বারাকা-তিন আ'লাইকা ওয়া আ'লা- উমামিম্ মিম্মাআ'ক; ওয়া উমামুন ছানুমাত্তিউ'হুম ছুম্মা ইয়ামাচ্ছুহুম্ মিন্না- আ'যা-বুন আলীম।
৪৯. তিলকা মিন আম্বা-য়িল গাইবি নূহ্বীহা- ইলাইক; মা- কুনতা তা'লামুহা- আনতা ওয়া লা- ক্বাওমুকা মিন্ ক্বাবলি হা-যা-; ফাছ্ববির্; ইন্নাল আ'-কি্ববাতা লিলমুত্তাক্বীন। [সুরা : হুদ, আয়াত : ৪৭-৪৯]
অনুবাদ : ৪৭. নূহ (আ.) বললেন, হে প্রভু, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই (অর্থাৎ বুঝি না) সে বিষয়ে ভবিষ্যতে তোমার কাছে কিছু চাওয়া থেকে আমি তোমার আশ্রয় চাই। তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো ও আমার প্রতি দয়া না করো, তবে আমিও সেসব লোকের দলভুক্ত হয়ে যাব, যারা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
৪৮. (আল্লাহর তরফ থেকে) বলা হলো, হে নূহ (আ.), এবার (নৌকা থেকে) নেমে যাও- আমার পক্ষ থেকে সেই শান্তি ও বরকতসহ, যা তোমার জন্য এবং তোমার সঙ্গে যে গোষ্ঠীগুলো আছে, তাদের জন্যও। আর কিছু গোষ্ঠী তো এমন রয়েছে, যাদের আমি শান্তিতে জীবনযাপন করতে দেব, এরপর (তাদের ক্রিয়াকর্মের কারণেই) আমার পক্ষ থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের চেপে ধরবে।
৪৯. (হে নবী মুহাম্মদ) এগুলো গায়েবের কিছু বার্তা, যা আমি ওহির মাধ্যমে আপনাকে জানাচ্ছি। এসব খবর আপনিও ইতিপূর্বে জানতেন না, আপনার কওমও (জাতি) জানত না। সুতরাং ধৈর্য ধারণ করুন। শেষ পরিণাম দায়িত্বনিষ্ঠদের অনুকূলে থাকবেই।
ব্যাখ্যা : ৪৭ নম্বর আয়াতে নূহ (আ.)-এর কিছু কথা উদ্ধৃত করা হয়েছে- অবাধ্য ছেলেকে রক্ষা করার প্রশ্নকে কেন্দ্র করে আল্লাহ তায়ালা নবী নূহ (আ.)-কে যে সতর্কতামূলক উপদেশ বাণী প্রদান করেছেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা করছেন।
৪৮ নম্বর আয়াতে নবী নূহ (আ.)-কে তাঁর আরোহী দল নিয়ে জমিনে নেমে আসার আহ্বান জানান। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের সালাম ও বরকতের সুসংবাদও দেন। কারণ তাঁরা সবাই মুমিন এবং সংকটহীন। এখানে দলগুলো বা গোষ্ঠীগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ তখন তারা মুষ্টিমেয় লোক হলেও তাদের বংশধরদের মধ্যেই বহু গোত্র ও জাতির জন্ম হবে- এ ইঙ্গিত এখানে দেওয়া হয়েছে। এসব গোত্রের লোকদের অনেকে সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে- এ ইঙ্গিত তো এখানে রয়েছেই। কারণ অবাধ্য ও অত্যাচারীদের নির্মূল করেই এই কাফেলার যাত্রা। তবে তাদের মধ্যে এমন গোষ্ঠীরও আবির্ভাব ঘটবে, যাদের আল্লাহ সুখী-সচ্ছল জীবন দান করবেন অথচ তারা আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির মধ্যে নিপতিত হবে। এই আয়াত এবং এই কাহিনীর বর্ণনা থেকে নবী নূহ (আ.)-এর একক বংশবিস্তার নয়, বরং নূহের কওমের মুমিন সম্প্রদায়ের বংশবিস্তারের প্রতিই ইঙ্গিত রয়েছে।
নূহ (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করার পর ৪৯ নম্বর আয়াতে নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে দুটি সত্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ১. এ ঘটনা খোদ নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর কওম কোরাইশ ও অকিতাবিরা জানতেন না। একমাত্র ওহির মাধ্যমে এগুলো জানা সম্ভব, যা রাসুল (সা.)-এর নবুয়ত প্রমাণ করে। ২. নিজ কওমের কাছ থেকে মহানবী (সা.) যে বিরোধ ও অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন, সে ব্যাপারে এ ঘটনার উদাহরণের মাধ্যমে তাঁকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ ও সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শেষ পরিণাম দায়িত্বনিষ্ঠদের অনুকূলে থাকে। অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের জয় হবেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ৪৭. নূহ (আ.) বললেন, হে প্রভু, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই (অর্থাৎ বুঝি না) সে বিষয়ে ভবিষ্যতে তোমার কাছে কিছু চাওয়া থেকে আমি তোমার আশ্রয় চাই। তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো ও আমার প্রতি দয়া না করো, তবে আমিও সেসব লোকের দলভুক্ত হয়ে যাব, যারা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে।
৪৮. (আল্লাহর তরফ থেকে) বলা হলো, হে নূহ (আ.), এবার (নৌকা থেকে) নেমে যাও- আমার পক্ষ থেকে সেই শান্তি ও বরকতসহ, যা তোমার জন্য এবং তোমার সঙ্গে যে গোষ্ঠীগুলো আছে, তাদের জন্যও। আর কিছু গোষ্ঠী তো এমন রয়েছে, যাদের আমি শান্তিতে জীবনযাপন করতে দেব, এরপর (তাদের ক্রিয়াকর্মের কারণেই) আমার পক্ষ থেকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের চেপে ধরবে।
৪৯. (হে নবী মুহাম্মদ) এগুলো গায়েবের কিছু বার্তা, যা আমি ওহির মাধ্যমে আপনাকে জানাচ্ছি। এসব খবর আপনিও ইতিপূর্বে জানতেন না, আপনার কওমও (জাতি) জানত না। সুতরাং ধৈর্য ধারণ করুন। শেষ পরিণাম দায়িত্বনিষ্ঠদের অনুকূলে থাকবেই।
ব্যাখ্যা : ৪৭ নম্বর আয়াতে নূহ (আ.)-এর কিছু কথা উদ্ধৃত করা হয়েছে- অবাধ্য ছেলেকে রক্ষা করার প্রশ্নকে কেন্দ্র করে আল্লাহ তায়ালা নবী নূহ (আ.)-কে যে সতর্কতামূলক উপদেশ বাণী প্রদান করেছেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা করছেন।
৪৮ নম্বর আয়াতে নবী নূহ (আ.)-কে তাঁর আরোহী দল নিয়ে জমিনে নেমে আসার আহ্বান জানান। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের সালাম ও বরকতের সুসংবাদও দেন। কারণ তাঁরা সবাই মুমিন এবং সংকটহীন। এখানে দলগুলো বা গোষ্ঠীগুলোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ তখন তারা মুষ্টিমেয় লোক হলেও তাদের বংশধরদের মধ্যেই বহু গোত্র ও জাতির জন্ম হবে- এ ইঙ্গিত এখানে দেওয়া হয়েছে। এসব গোত্রের লোকদের অনেকে সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে- এ ইঙ্গিত তো এখানে রয়েছেই। কারণ অবাধ্য ও অত্যাচারীদের নির্মূল করেই এই কাফেলার যাত্রা। তবে তাদের মধ্যে এমন গোষ্ঠীরও আবির্ভাব ঘটবে, যাদের আল্লাহ সুখী-সচ্ছল জীবন দান করবেন অথচ তারা আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির মধ্যে নিপতিত হবে। এই আয়াত এবং এই কাহিনীর বর্ণনা থেকে নবী নূহ (আ.)-এর একক বংশবিস্তার নয়, বরং নূহের কওমের মুমিন সম্প্রদায়ের বংশবিস্তারের প্রতিই ইঙ্গিত রয়েছে।
নূহ (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করার পর ৪৯ নম্বর আয়াতে নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে দুটি সত্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ১. এ ঘটনা খোদ নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর কওম কোরাইশ ও অকিতাবিরা জানতেন না। একমাত্র ওহির মাধ্যমে এগুলো জানা সম্ভব, যা রাসুল (সা.)-এর নবুয়ত প্রমাণ করে। ২. নিজ কওমের কাছ থেকে মহানবী (সা.) যে বিরোধ ও অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন, সে ব্যাপারে এ ঘটনার উদাহরণের মাধ্যমে তাঁকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ ও সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শেষ পরিণাম দায়িত্বনিষ্ঠদের অনুকূলে থাকে। অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের জয় হবেই।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments