পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট- শেষ করে বাঁচলেন ম্যাককালামরা
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যেন বিপাকে পড়ে গেলেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মাইক হেইসম্যানের প্রশ্ন, ‘পরাজয়ের মূল কারণ কোনটি?’ কোনটির কথা বলবেন কিউই অধিনায়ক! অসহায় হাসিতে তাই উত্তর, ‘কোনো এক দিকে আঙুল তোলা মুশকিল।
সব বিভাগেই তো আমরা উড়ে গেছি। দক্ষিণ আফ্রিকা আমাদের অনাবৃত করে ছেড়েছে।’ গ্রায়েম স্মিথ আবার ক্রিকেটীয় ভদ্রতার চূড়ান্ত দেখিয়ে ছাড়লেন, ‘ম্যাচ জিততে আমাদের অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে।’ বলেছেন বটে, কিন্তু নিজেও হয়তো বিশ্বাস করেন না। দক্ষিণ আফ্রিকানদের ঘাম ঝরানোর মতো কিছু কিউইরা করতে পারল কোথায়!সিরিজ শুরুর আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার ২-০ জয়ের ব্যাপারে সংশয় খুব একটা ছিল না। কিন্তু এতটা একপেশে সিরিজ হবে? র্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর দলের সঙ্গে লড়াইয়ে পাওয়ার চেয়ে হারানোর ভয়টাই বেশি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। মাঠের পারফরম্যান্সে স্মিথরা বুঝিয়ে দিলেন, র্যাঙ্কিং যা বলছে, দুই দলের ব্যবধান আসলে তার চেয়েও বেশি! দুই টেস্টেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস ব্যবধানে জয়, প্রথম টেস্ট শেষ আড়াই দিনে, দ্বিতীয়টি চতুর্থ দিন লাঞ্চের আগেই, প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডের ‘৪৫’ লজ্জা, দ্বিতীয় টেস্টে ৬২ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে কোনোরকমে ১২১, সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে একবারও অলআউট করতে না-পারা, সবকিছুই ফুটিয়ে তুলছে দুই দলের মেরু ব্যবধান।
ব্রাউনলি-ওয়াটলিংয়ের জুটি কাল খুব বেশি টানতে পারেনি নিউজিল্যান্ডকে। ফিফটির পরপরই ক্যালিসের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে কটবিহাইন্ড ডিন ব্রাউনলি। পথের কাঁটা হয়ে ওঠা জুটিটা ভেঙে যাওয়ার পর নতুন বলে বাকি কাজটুকু ঝটপট সেরে ফেলেছেন স্টেইন ও মরকেল। ৮৪ রানে পড়েছিল প্রথম ৪ উইকেট, ২৯ রানে শেষ ৬টি। মাঝে ওয়াটলিং-ব্রাউনলির ৯৮ রানের জুটি। প্রথম ইনিংসের সমান ৬৩ করে ওয়াটলিং বোল্ড স্টেইনের দারুণ এক আউটসুইঙ্গারে। তিন সেঞ্চুরিয়ান আমলা-এলগার-ডু প্লেসিসকে পেছনে ফেলে ম্যাচসেরা স্টেইনই (৮/৬৫)। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় জয় এই ইনিংস ও ১৯৩ রানের জয়।
স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার শ্রেষ্ঠত্ব আর নিউজিল্যান্ডের দুর্দশা ফুটে উঠছে সিরিজের ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানেও। বোলিংয়ের সেরা পাঁচে নেই কোনো নিউজিল্যান্ডার। মাত্র দুই ইনিংস ব্যাট করেও এক শর বেশি রান করা সাতজনের পাঁচজনই দক্ষিণ আফ্রিকার!
সব মিলিয়ে দুঃস্বপ্নের সিরিজটা শেষ হওয়ায় হয়তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচছেন ম্যাককালামরা। ১৯ জানুয়ারি পার্লে শুরু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। রঙিন পোশাকে যদি মানসম্মান কিছুটা উদ্ধার করা যায়! ওয়েবসাইট।
No comments