যোগাযোগ ব্যবস্থা-রাজধানীর অদূরেই এমন হাল!
বাঁশের মাচায় ঝুলিয়ে এক রোগীকে বহন করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছেন দু'জন_ এমন মর্মস্পর্শী ছবি প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবারের সমকালে। ছবিটি পাঠানো হয়েছে মানিকগঞ্জের শিবালয়ের আলোকদিয়া গ্রাম থেকে।
রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী জেলা মানিকগঞ্জে হাল আমলে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আশির দশক থেকে অনেক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা এনজিওর কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠেছে জেলার বিভিন্ন জনপদ। শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামেও তাদের কর্মকাণ্ড বিস্তৃত, এমন তথ্যই দেওয়া হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে তারা বিশেষভাবে মনোযোগী, এমন দাবিও রয়েছে। সরকারে যারা থাকে, তারাও দাবি করে উন্নয়নের। মানিকগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরা তাতে কণ্ঠ মেলান। কিন্তু ছবিও যে অনেক কথা বলে। বাংলাদেশে সব এলাকায় পাকা সড়ক থাকবে, এমন কথা নেই। কিন্তু তাই বলে অনেক এলাকাজুড়ে রিকশা-ভ্যান চলার মতো সড়কও থাকবে না, এটা মেনে নেওয়া কঠিন। সমকালের ছবিটি দেখলে যে কেউ আঁতকে উঠবেন। যেখানে আমরা ডিজিটাল যুগে সবকিছুতেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে বলে বড়াই করি, সেখানে ঢাকার উপকণ্ঠে এখনও রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে বহু যুগ আগের এমন ব্যবস্থার আশ্রয় কেন নিতে হবে? রোগে আক্রান্ত হওয়াটাই যেন সেখানে পাপ! এলাকায় হাসপাতালের অভাব তো রয়েছেই, তার ওপর যেখানে হাসপাতাল আছে সেখানে যাওয়ার মতো রাস্তাঘাট নেই। বাঁশের মাচায় বহন করা রোগীটি কেমন চিকিৎসা পেয়েছেন হাসপাতালে, সেটা জানা নেই। কিন্তু যে ধকল সহ্য করে চরাঞ্চলের ওই রোগী হাসপাতালে পেঁৗছেছেন, তাতে রোগ-যন্ত্রণা যে খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল তাতে সন্দেহ নেই। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতাল ছাড়া বিকল্প নেই। কিন্তু এর চেয়েও বেশি সত্য হচ্ছে, গরিবের জন্য সুচিকিৎসার ব্যবস্থা প্রায় নেই এসব হাসপাতালে। আমরা কেবল ইকলাস আলী নামের রোগীটির দ্রুত আরোগ্য কামনা করতে পারি। সমকালে প্রকাশিত ছবিটি যদি তার প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের কিছুটা মনোযোগ আকৃষ্ট করতে পারে, সেটা হবে বাড়তি পাওনা।
No comments