বই পরিচিতি ॥ অহনা by মোহিত কামাল
‘সন্দেহে মন পোড়ালে কিছুই রাখে না, কিছু থাকে নাÑভয়াবহ সেই অগ্নিকা-’Ñআর এমনই এক সন্দেহের বীজ বুনে স্বামী-শাশুড়ি কলঙ্কের কালিমা দিল অহনাকে, তার আর সংসার করা হলো না। (অহনা এই গল্পের মূল চরিত্র। ইংরেজীতে ডন (উধহি), বাংলায় অহনা অর্থ ভোরের প্রথম আলো। প্রথম আভা! প্রথম কিরণ।)
শ্বশুরবাড়ি এসে অহনার একবারও পিরিয়ড হয়নি, প্রথমেই তার কনসিভ হয়ে যায়। সেই থেকে তাদের সন্দেহের বীজ বোনা শুরু। আর তাই সে বাবার বাড়ি ফিরে এসে শুরু করল নতুন করে পথচলা, অনাগত মেয়ে প্রিয়ন্তিকে নিয়ে। আবার পড়াশোনা শুরু করে সে, ভার্সিটিতে ভর্তি হয়। এখানে পরিচয় জয়ী নামের একটি মেয়ের সাথে যার মাঝে সে তার মেয়েকে দেখতে পায়। জয়ীর বাবা-মায়ের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেছে, তারা দু’জন দুই দেশের বাসিন্দা। দু’জনই আবার নতুন করে সংসার সাজিয়েছেন। মাঝখান থেকে ছিটকে পড়ে জয়ী। সে থাকে তার নানা-নানুর কাছে। অত্যন্ত বুদ্ধিমতী এবং আধুনিক মেয়ে।
জয়ী অহনার সুমধুর সম্পর্ককেও কলুষিত করে পাভেল। জয়ী অহনার কাছে এলে তার দুঃখগুলোকে সুখে রূপান্তর করতে পারে। ইচ্ছে করলেই দুঃখ সরিয়ে জয়ী সুখ কুড়িয়ে নিতে পারে। খুঁজে পায় দুষ্পাপ্য মানিক রতন ‘সুখ’কে।
অহনা পাভেলকে ভালবেসে তার অস্তিত্ব অঙ্কুরিত করছে তার দেহে। ওই অঙ্কুরটিকে বড় করতে চায়, পরিচর্যা করে আলো বাতাস দিতে চায়। কিন্তু সমাজের ক্লেদাক্ত মন কিভাবে গ্রহণ করবে তাকে?
মা ছেলের সন্দিহান উপলব্ধি দেখে পায়ের তলায় মাটি সরতে থাকে অহনার। মাকে প্রশ্ন করে, ‘সুনিপুণ এক খালি পেটে বুনেছে নতুন বীজ, সেই-ই যদি হয় নির্মম কাঠুরিয়া, কেটে ফেলতে চায় বীজের শেকড়, তার সঙ্গে থাকার চেয়ে তোমার কাছে থাকা কি শ্রেয় নয়? আশ্রয় কি পাব না তোমার কাছে?’ এক বুক অভিমান নিয়ে অহনার মায়ের কাছে চলে আসা।
পাভেলের মা সোফিয়া জামান অহনার চলে যাওয়ার পর সেই বাড়িতে ফোন করে অহনার মাকে প্রশ্ন করে, ‘বিয়ের পূর্বে কি কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অহনার?’ প্রশ্ন শুনে অহনার মা ফাতেমা শারমিনের মনে হলো অহনার জীবন চাঁদরের আড়ালে ঢুকে গেছে বিষধর সাপ, হিংস্র বাঘিনী তুলছে ভয়ঙ্কর গর্জন। শকুন চোখের অব্যর্থ আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে অহনা।
এদিকে অহনার স্বামীর (পাভেলের) প্রাক্তন প্রেমিকা ‘পিংকি’ তার মন ভাল করার জন্য আসা-যাওয়া শুরু করে তার বাসায়।
এক সময় তার খালি বাসায় যাওয়ার অফারও সে (পাভেল) ফেলে দিতে পারেনি। যদিও মনের মণিকোঠায় সেই ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়, ‘কোন অশ্লীলতা, নীচতা মানায় না আমার সন্তানের বাবাকে।’ অহনার এই বাক্য বার বার ঘায়েল করে তাকে। পিংকির উষ্ণতায় তার উত্তাপ জ্বালাতে পারে না শীতল হয়ে যায় সে। তার যে রকম চরিত্র, সে একইভাবে তার স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই রকম মনে করছে। আর তাই নিজের দোষটা সে ক্ষমার লিস্টে না তুলে অহনাকে মনগড়া কল্পনার কালো কালি লেপে দিচ্ছে বার বার। যা শেষ পর্যন্ত তাদের ডিভোর্সে গড়ায়। এই হচ্ছে আমাদের সমাজের একটি চিত্র। বইটি লিখেছেন মোহিত কামাল।
তিনি একজন মনোচিকিৎসক, মনোশিক্ষাবিদ। এই পর্যন্ত তার ২৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে। যার মধ্যে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কলাম ইত্যাদি উল্লেখ্য। তিনি বিভিন্ন পুরস্কার এবং পদকে ভূষিত হন।
ময়মনসিংহ সংস্কৃতি পুরস্কার ১৪১৬Ñকথাশিল্পী (চেনা বন্ধু অচেনা পথ, ১০ বিদ্যাপ্রকাশ)।
সেরা ঔপন্যাসিক (না ’০৯ বিদ্যাপ্রকাশ) : এ-ওয়ান টেলিমিডিয়া স্বাধীনতা এ্যাওয়ার্ড ২০০৮।
বেগম রোকেয়া সম্মাননা পদক, শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক ২০০৮ (সুখপাখি আগুনডানা, উড়ালমন বিদ্যাপ্রকাশ)। সাপ্তাহিক দি নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্রেসের উদ্যোগে। স্বাধীনতা সংসদ নববর্ষ পুরস্কার ১৪১৫ কথা সাহিত্য (সুখপাখি আগুনডানা, উড়ালমন, বিদ্যাপ্রকাশ)।
এছাড়া তিনি প্রফেশনাল ফিল্ডে বিশেষ কৃতিত্ব : ওয়ার্ল্ড সাইক্রিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত জাপানে ১২তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইক্রিয়াট্রির ফেলোশিপ প্রোগ্রামে বিশ্বের প্রথম সেরা ফেলো হিসাবে কৃতিত্ব অর্জন করেন। তার ধারালো কলমের আঁচড়ে অনবদ্য সৃষ্টি অহনা।
মনিরা ফেরদৌস
জয়ী অহনার সুমধুর সম্পর্ককেও কলুষিত করে পাভেল। জয়ী অহনার কাছে এলে তার দুঃখগুলোকে সুখে রূপান্তর করতে পারে। ইচ্ছে করলেই দুঃখ সরিয়ে জয়ী সুখ কুড়িয়ে নিতে পারে। খুঁজে পায় দুষ্পাপ্য মানিক রতন ‘সুখ’কে।
অহনা পাভেলকে ভালবেসে তার অস্তিত্ব অঙ্কুরিত করছে তার দেহে। ওই অঙ্কুরটিকে বড় করতে চায়, পরিচর্যা করে আলো বাতাস দিতে চায়। কিন্তু সমাজের ক্লেদাক্ত মন কিভাবে গ্রহণ করবে তাকে?
মা ছেলের সন্দিহান উপলব্ধি দেখে পায়ের তলায় মাটি সরতে থাকে অহনার। মাকে প্রশ্ন করে, ‘সুনিপুণ এক খালি পেটে বুনেছে নতুন বীজ, সেই-ই যদি হয় নির্মম কাঠুরিয়া, কেটে ফেলতে চায় বীজের শেকড়, তার সঙ্গে থাকার চেয়ে তোমার কাছে থাকা কি শ্রেয় নয়? আশ্রয় কি পাব না তোমার কাছে?’ এক বুক অভিমান নিয়ে অহনার মায়ের কাছে চলে আসা।
পাভেলের মা সোফিয়া জামান অহনার চলে যাওয়ার পর সেই বাড়িতে ফোন করে অহনার মাকে প্রশ্ন করে, ‘বিয়ের পূর্বে কি কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অহনার?’ প্রশ্ন শুনে অহনার মা ফাতেমা শারমিনের মনে হলো অহনার জীবন চাঁদরের আড়ালে ঢুকে গেছে বিষধর সাপ, হিংস্র বাঘিনী তুলছে ভয়ঙ্কর গর্জন। শকুন চোখের অব্যর্থ আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে অহনা।
এদিকে অহনার স্বামীর (পাভেলের) প্রাক্তন প্রেমিকা ‘পিংকি’ তার মন ভাল করার জন্য আসা-যাওয়া শুরু করে তার বাসায়।
এক সময় তার খালি বাসায় যাওয়ার অফারও সে (পাভেল) ফেলে দিতে পারেনি। যদিও মনের মণিকোঠায় সেই ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়, ‘কোন অশ্লীলতা, নীচতা মানায় না আমার সন্তানের বাবাকে।’ অহনার এই বাক্য বার বার ঘায়েল করে তাকে। পিংকির উষ্ণতায় তার উত্তাপ জ্বালাতে পারে না শীতল হয়ে যায় সে। তার যে রকম চরিত্র, সে একইভাবে তার স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই রকম মনে করছে। আর তাই নিজের দোষটা সে ক্ষমার লিস্টে না তুলে অহনাকে মনগড়া কল্পনার কালো কালি লেপে দিচ্ছে বার বার। যা শেষ পর্যন্ত তাদের ডিভোর্সে গড়ায়। এই হচ্ছে আমাদের সমাজের একটি চিত্র। বইটি লিখেছেন মোহিত কামাল।
তিনি একজন মনোচিকিৎসক, মনোশিক্ষাবিদ। এই পর্যন্ত তার ২৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে। যার মধ্যে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কলাম ইত্যাদি উল্লেখ্য। তিনি বিভিন্ন পুরস্কার এবং পদকে ভূষিত হন।
ময়মনসিংহ সংস্কৃতি পুরস্কার ১৪১৬Ñকথাশিল্পী (চেনা বন্ধু অচেনা পথ, ১০ বিদ্যাপ্রকাশ)।
সেরা ঔপন্যাসিক (না ’০৯ বিদ্যাপ্রকাশ) : এ-ওয়ান টেলিমিডিয়া স্বাধীনতা এ্যাওয়ার্ড ২০০৮।
বেগম রোকেয়া সম্মাননা পদক, শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক ২০০৮ (সুখপাখি আগুনডানা, উড়ালমন বিদ্যাপ্রকাশ)। সাপ্তাহিক দি নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্রেসের উদ্যোগে। স্বাধীনতা সংসদ নববর্ষ পুরস্কার ১৪১৫ কথা সাহিত্য (সুখপাখি আগুনডানা, উড়ালমন, বিদ্যাপ্রকাশ)।
এছাড়া তিনি প্রফেশনাল ফিল্ডে বিশেষ কৃতিত্ব : ওয়ার্ল্ড সাইক্রিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত জাপানে ১২তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইক্রিয়াট্রির ফেলোশিপ প্রোগ্রামে বিশ্বের প্রথম সেরা ফেলো হিসাবে কৃতিত্ব অর্জন করেন। তার ধারালো কলমের আঁচড়ে অনবদ্য সৃষ্টি অহনা।
মনিরা ফেরদৌস
No comments