ভূরাজনীতির গতিধারা বদলে দিয়েছে আরব বসন্ত- গুরুত্ব কমে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ॥ ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থার বার্ষিক রিপোর্ট
আরব বসন্তপরবর্তী বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্ব কমে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করা হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম অবমাননা ভিডিওর প্রতিবাদকে মঙ্গলবার লিবিয়ায় চার মার্কিন কূটনৈতিক নিহত হওয়ার পরও দেশটির সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে ওবামা প্রশাসন জানিয়েছে। খবর এএফপির।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, গত বছর (২০১১) মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বিপ্লব ঘটেছে। তার ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মার্কিনীদের ব্যাপারে যেমন মোহভঙ্গ ঘটেছে, তেমনি ইসলামপন্থীরা মূলধারায় ওঠে আসার সুযোগ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার লন্ডনে সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, চীনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন এছাড়া উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া, ইতোমধ্যেই নেতৃত্বের যে পরিবর্তন ঘটেছে সব মিলিয়ে বিশ্ব রাজনীতির গতিপ্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে। ‘স্ট্যাটেজিক সার্ভে ২০১২ : দ্য এ্যানুয়েল রিভিউ অব ওয়ার্ল্ড এ্যাফেয়ার্স’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে শুধু মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জন্য নয় বরং পুরো ভূরাজনীতির চিত্র বদলে যাওয়ারই ধারণা দেয়া হয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যে পরিবর্তন বিশেষ করে চোখে পড়ার মতো। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, আরববিশ্বে পরিবর্তন, নিজস্ব ভবিষ্যত খুঁজে নিতে ইউরোপের লড়াই, রাশিয়ায় পুতিন পুনর্নির্বাচিত হওয়া এ ঘটনাগুলো বিশ্ব রাজনীতির ধারা বদলে দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো আগে দিকনির্দেশনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দিকে চেয়ে থাকত। কিন্তু এখন ওয়াশিংটনের ব্যয় সংকোচন, ইরাক যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং সাড়াজাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের ফাঁস করা বিব্রতকর সব তথ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আরব নেতাদের মোহ অনেকটাই কেটে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজের ভূমিকা কি হওয়া উচিত তা ঠিক করে উঠতে পারছে না। কারণ পরিবর্তনের ধারা এখনও চলছে। এটি এখনও কোন নির্দিষ্ট আকারে ধারণ করেনি। মঙ্গলবার দূতাবাস কর্মীদের ওপর হামলা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলেট ও কায়রোতে দূতাবাসের ওপর হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য নীতি নতুন করে পর্যালোচনা করে দেখার জন্য ইতোমধ্যেই ওবামা প্রশাসনের ওপর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়াকে পরিত্যাগ করলে সেখানে ইসলামপন্থী কিংবা আলকায়েদার উত্থান ঘটতে পারে।
No comments