মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাজুড়ে মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে- ইয়েমেনে দূতাবাসে ঢুকে ভাংচুর, পতাকায় অগ্নিসংযোগ

ইসলাম বিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী বেনগাজীতে মার্কিন কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পর গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ মুসলমানরা। শত শত মানুষ এ সময় দূতাবাসের ভিতরে


ঢুকে ভাংচুর চালায়। দূতাবাসের কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিক্ষোভকারীরা মার্কিন পতাকা নামিয়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের তাড়িয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে মিসরের রাজধানী কায়রোয়। গতকাল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে মরক্কো, সুদান, গাজা উপত্যকা, তিউনিসিয়া, ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, বাংলাদেশে। সহিংসতার আশঙ্কায় নরওয়ে সফর বাতিল করেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। তবে বারাক ওবামা লিবিয়ায় হামলাকারীদের জঙ্গী হিসেবে আখ্যায়িত করে হত্যাকা-ের জন্য কঠোর শাস্তি দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আগামী নবেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে রকেট হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ চার মার্কিন নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনার পাশাপাশি দেশে দেশে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বারাক ওবামার জন্য খুবই স্পর্শকাতর হিসেবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরা অন লাইনের।
ইসলামবিরোধী চলচ্চিত্র নিয়ে ক্ষোভের জেরে বহস্পতিবার ইয়েমেনের রাজধানী সানায় শত শত বিক্ষুব্ধ ইয়েমেনী যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে চড়াও হয়। নিরাপত্তা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাইরের নিরাপত্তা দফতরগুলোতে প্রথম হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। দফতরগুলোর দরজা-জানালা ভেঙ্গে দূতাবাসের মূল ফটকের দিকে এগিয়ে যায় তারা। ফটক ভাঙ্গার চেষ্টাকালে নিরাপত্তারক্ষীরা ফাঁকা গুলি, টিয়ার গ্যাস এবং জল কামান ছুড়েও হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হয়। আল জাজিরা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের দূতাবাস ভবনের দেয়াল বেয়ে ওঠার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। দূতাবাস চত্বরে গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আমরা দূতাবাস প্রাঙ্গণে আগুন জ্বলতে দেখেছি। নিরাপত্তা বাহিনীও ফাঁকা গুলি ছুড়ছিল। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সরে গেলেও পরে আবার ফিরে আসে। নিরাপত্তা বাহিনী পরে দূতাবাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে জানানো হয়েছে বিবিসি’র খবরে। তবে এরপরও দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ চলতে থাকার খবর পাওয়া গেছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ইসলাম ধর্ম অবমাননাকারী চলচ্চিত্র নির্মাণের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে কেন অবমাননা করাকে মিসরের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। আমি এর নিন্দা জানাই। তবে আমাদের দেশে যারা অতিথি রয়েছে তাদের রক্ষার দায়িত্বও আমাদের। তিউনিসিয়ায় বিক্ষোভকারীরা মার্কিন পতাকায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাব ওবামা মিসর ও লিবীয় নেতাদের ফোন করে সেখানে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন। ওবামা মার্কিন কূটনীতিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সুবিধাদি সম্পর্কে নেতাদর স্মরণ করিয়ে দেন। ওবামা বলেন, ইসলাম ধর্মকে অবমাননাকারী যে কোন চেষ্টাকে আমি প্রত্যাখ্যান করি।

No comments

Powered by Blogger.