সোনালী ব্যাংকের শিলিগুড়ি শাখা গিলে খাচ্ছেন কর্মকর্তারা by আবুল কাশেম
পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে থাকা সোনালী ব্যাংকের শাখাটি গিলে খাচ্ছেন এর কর্মকর্তারা। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে তিন গুণ বেশি দরে অফিস ভাড়া নেওয়া, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয়ের নামে স্থানীয় কর্মীদের বছরে চারবার বেতন বাড়ানোসহ নানা নামে শাখাটির অর্থ আত্মসাৎ করছেন তাঁরা।
আপ্যায়ন ভাতার বাইরেও চা ভাতা, অহেতুক ট্যাক্সিক্যাব ভাড়া, নিয়ম ভঙ্গ করে নিজের চিকিৎসা খরচের পুরোটাই ব্যাংক থেকে নিচ্ছেন শাখাটির কর্মকর্তারা। সঙ্গে বাপের চিকিৎসা খরচও। এমনকি নিজেদের পত্রিকা বিলও দেওয়া হচ্ছে ব্যাংকের টাকায়। ফলে প্রতিবছরই লোকসান করছে শাখাটি। সোনালী ব্যাংক শিলিগুড়ি শাখার এসব অনিয়ম উঠে এসেছে জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স ও দূতাবাস অডিট অধিদপ্তরের সরেজমিন নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শাখাটির ব্যবস্থাপক মোদাচ্ছের হাসান অফিসের জন্য একটি ফ্ল্যাট ভাড়ার চুক্তি করেছেন মাসে ৪২ হাজার রুপিতে। তৃতীয় তলার ওই ফ্ল্যাটটির আয়তন দুই হাজার বর্গফুট। অথচ একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় সমান আয়তনের ফ্ল্যাটটি অন্যত্র ভাড়া দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৯০ রুপিতে। একই ভবনে একই সময়ে অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে বাড়ি ভাড়া নেওয়ায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারের ক্ষতি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিলিগুড়ি শাখার জন্য স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে প্রতিবছর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করার নিয়ম রয়েছে। ভারতের মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে এ শাখায় কর্মরত স্থানীয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে বছরে চারবার করে। এর সঙ্গে বাড়ছে তাঁদের অন্যান্য ভাতাও। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি এভাবে চলতে থাকলে একসময় তাঁদের বেতন শাখা ম্যানেজারের বেতনের চেয়েও বেশি হবে। এতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছরে (২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থবছর) শাখার ম্যানেজার মো. মোদাচ্ছের হাসান ১৯টি ভাউচারে শুধু চিকিৎসা ভাতা হিসেবে খরচ দেখিয়েছেন সাত হাজার ৫১৬ রুপি। প্রচলিত বিধি মোতাবেক চিকিৎসা খরচের ১০ শতাংশ নিজের বহন করার কথা থাকলেও এখানে পুরোটাই নেওয়া হয়েছে ব্যাংক থেকে। এমনকি শাখার ক্যাশিয়ার মো. নূর আলমের বাবার চিকিৎসার খরচ হিসেবেও ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে ৩৮ হাজার ২৫৯ রুপি। চিকিৎসা খরচের নামে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আদায় করার পরামর্শ দিয়েছে নিরীক্ষা দল।
জয়েন্ট কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স মো. ওয়াদুদ হোসেন ও উপপরিচালক আককাছ আলী প্রামাণিক স্বাক্ষরিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থবছরে শাখাটির ক্যাশিয়ার নূর আলম ও সুমন্ত মুখার্জি ভ্রমণ ভাতা খাত থেকে ট্যাক্সি ভাড়া বাবদ ৭০ হাজার ৯২০ রুপি নিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংক শিলিগুড়ি শাখাটির অবস্থান সেবক রোডে। এখান থেকে ক্লিয়ারিংয়ের জন্য হিলকাট রোডে অবস্থিত অ্যাঙ্সি ব্যাংকে যেতে হয়। কিন্তু এই যাতায়াতের পথে কোনো ট্যাক্সিই চলাচল করে না। আর ট্যাক্সি ভাড়া হিসেবে অর্থ নিলেও নূর আলম ব্যাংকের ক্যাশ শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, ক্যাশ শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলে ব্যাংকের বাইরে অন্য কাজের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ নেই।
শাখা ম্যানেজার মো. মোদাচ্ছের হাসানের ব্যক্তিগত মালামাল পরিবহনের খরচ বাবদ এক লাখ ৬২ হাজার রুপিও নেওয়া হয়েছে ব্যাংক শাখা থেকে। বিধি মোতাবেক এই অর্থ ভ্রমণ ভাতা বিলে সমন্বয় করার কথা থাকলেও তা করেননি তিনি। এ ছাড়া ম্যানেজার মোদাচ্ছের ও বদলি হওয়া ম্যানেজার এ কে এম সেলিম আহমেদ অতিথি আপ্যায়ন ভাতা বাবদ প্রতি মাসে ১০১ ডলার হারে শাখা থেকে মোট দুই হাজার ৪২৪ ডলার অর্থ নিয়েছেন। এর মধ্যে মোদাচ্ছের নিয়েছেন এক হাজার ৮৪৪ ডলার এবং সেলিম আহমেদ নিয়েছেন ৫৮০ ডলার। বিধি অনুযায়ী আপ্যায়ন ভাতা বাবদ অর্থ ব্যয় করার ক্ষেত্রে অতিথিদের তালিকা করে তা প্রধান কার্যালয়ে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো তালিকাই নেই তাঁদের কাছে।
শিলিগুড়ি শাখার কর্মকর্তারা এতসব অনিয়মে ডুবে থাকায় ব্যাংক ব্যবসা প্রসারে তাঁদের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে প্রতিবছরই খরচ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে লোকসানও। ২০০৯ সালে ৩৬ লাখ রুপি আয়ের বিপরীতে শাখাটির কর্মকর্তারা খরচ করেছেন ৩৯ লাখ রুপি। পরের বছর ৩৯ লাখ আয় করে খরচ করেছেন ৪৪ লাখ রুপি। আর ২০১১ সালে ৪৪ লাখ রুপি আয় ও ৫২ লাখ রুপি ব্যয় করেছেন শাখাটির কর্মকর্তারা। এ শাখায় ২০১০ সালে আমানতের পরিমাণ ছিল দুই কোটি ১৪ লাখ, পরের বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখ রুপি। এভাবে মূলধনের পরিমাণ কমায় ব্যাংক ব্যবসার প্রসার না ঘটে বরং সংকুচিত হচ্ছে।
শাখাটির ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কর্মকাণ্ডের ওপর করা এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইব্রাহীম খালেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, এমন হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে পারে।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, শাখাটির ব্যবস্থাপক মোদাচ্ছের হাসান অফিসের জন্য একটি ফ্ল্যাট ভাড়ার চুক্তি করেছেন মাসে ৪২ হাজার রুপিতে। তৃতীয় তলার ওই ফ্ল্যাটটির আয়তন দুই হাজার বর্গফুট। অথচ একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় সমান আয়তনের ফ্ল্যাটটি অন্যত্র ভাড়া দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৯০ রুপিতে। একই ভবনে একই সময়ে অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে বাড়ি ভাড়া নেওয়ায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারের ক্ষতি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিলিগুড়ি শাখার জন্য স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে প্রতিবছর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করার নিয়ম রয়েছে। ভারতের মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে এ শাখায় কর্মরত স্থানীয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে বছরে চারবার করে। এর সঙ্গে বাড়ছে তাঁদের অন্যান্য ভাতাও। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি এভাবে চলতে থাকলে একসময় তাঁদের বেতন শাখা ম্যানেজারের বেতনের চেয়েও বেশি হবে। এতে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছরে (২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থবছর) শাখার ম্যানেজার মো. মোদাচ্ছের হাসান ১৯টি ভাউচারে শুধু চিকিৎসা ভাতা হিসেবে খরচ দেখিয়েছেন সাত হাজার ৫১৬ রুপি। প্রচলিত বিধি মোতাবেক চিকিৎসা খরচের ১০ শতাংশ নিজের বহন করার কথা থাকলেও এখানে পুরোটাই নেওয়া হয়েছে ব্যাংক থেকে। এমনকি শাখার ক্যাশিয়ার মো. নূর আলমের বাবার চিকিৎসার খরচ হিসেবেও ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে ৩৮ হাজার ২৫৯ রুপি। চিকিৎসা খরচের নামে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আদায় করার পরামর্শ দিয়েছে নিরীক্ষা দল।
জয়েন্ট কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স মো. ওয়াদুদ হোসেন ও উপপরিচালক আককাছ আলী প্রামাণিক স্বাক্ষরিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থবছরে শাখাটির ক্যাশিয়ার নূর আলম ও সুমন্ত মুখার্জি ভ্রমণ ভাতা খাত থেকে ট্যাক্সি ভাড়া বাবদ ৭০ হাজার ৯২০ রুপি নিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংক শিলিগুড়ি শাখাটির অবস্থান সেবক রোডে। এখান থেকে ক্লিয়ারিংয়ের জন্য হিলকাট রোডে অবস্থিত অ্যাঙ্সি ব্যাংকে যেতে হয়। কিন্তু এই যাতায়াতের পথে কোনো ট্যাক্সিই চলাচল করে না। আর ট্যাক্সি ভাড়া হিসেবে অর্থ নিলেও নূর আলম ব্যাংকের ক্যাশ শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, ক্যাশ শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকলে ব্যাংকের বাইরে অন্য কাজের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ নেই।
শাখা ম্যানেজার মো. মোদাচ্ছের হাসানের ব্যক্তিগত মালামাল পরিবহনের খরচ বাবদ এক লাখ ৬২ হাজার রুপিও নেওয়া হয়েছে ব্যাংক শাখা থেকে। বিধি মোতাবেক এই অর্থ ভ্রমণ ভাতা বিলে সমন্বয় করার কথা থাকলেও তা করেননি তিনি। এ ছাড়া ম্যানেজার মোদাচ্ছের ও বদলি হওয়া ম্যানেজার এ কে এম সেলিম আহমেদ অতিথি আপ্যায়ন ভাতা বাবদ প্রতি মাসে ১০১ ডলার হারে শাখা থেকে মোট দুই হাজার ৪২৪ ডলার অর্থ নিয়েছেন। এর মধ্যে মোদাচ্ছের নিয়েছেন এক হাজার ৮৪৪ ডলার এবং সেলিম আহমেদ নিয়েছেন ৫৮০ ডলার। বিধি অনুযায়ী আপ্যায়ন ভাতা বাবদ অর্থ ব্যয় করার ক্ষেত্রে অতিথিদের তালিকা করে তা প্রধান কার্যালয়ে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো তালিকাই নেই তাঁদের কাছে।
শিলিগুড়ি শাখার কর্মকর্তারা এতসব অনিয়মে ডুবে থাকায় ব্যাংক ব্যবসা প্রসারে তাঁদের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে প্রতিবছরই খরচ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে লোকসানও। ২০০৯ সালে ৩৬ লাখ রুপি আয়ের বিপরীতে শাখাটির কর্মকর্তারা খরচ করেছেন ৩৯ লাখ রুপি। পরের বছর ৩৯ লাখ আয় করে খরচ করেছেন ৪৪ লাখ রুপি। আর ২০১১ সালে ৪৪ লাখ রুপি আয় ও ৫২ লাখ রুপি ব্যয় করেছেন শাখাটির কর্মকর্তারা। এ শাখায় ২০১০ সালে আমানতের পরিমাণ ছিল দুই কোটি ১৪ লাখ, পরের বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখ রুপি। এভাবে মূলধনের পরিমাণ কমায় ব্যাংক ব্যবসার প্রসার না ঘটে বরং সংকুচিত হচ্ছে।
শাখাটির ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কর্মকাণ্ডের ওপর করা এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ইব্রাহীম খালেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, এমন হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে পারে।
No comments