এইদিনে-এ দিন গর্বের, অহংকারের by জাহীদ রেজা নূর
একুশে ফেব্রুয়ারি কি বাঙালি ফিরে এল স্বদেশে? প্রচণ্ড এক ধাক্কা এসে কি তাকে দাঁড় করাল আত্মপরিচয়ের প্রশ্নের কাছে? এতদিন ধরে ভাষা নিয়ে যে আলোচনা. বিতর্ক, আন্দোলন চলে আসছিল, তারই চূড়ান্ত রূপ হয়ে কি সামনে এল বায়ান্নর একুশ?
একুশে দেখি উজ্জ্বল কিছু মুখ, যাঁদের চোখের তারায় একটি জাতির আত্মস্থ হওয়ার নিদর্শন।
পেছনে ফিরে কী দেখি? ১৯৪৭ সালের ১৭ মে হায়দরাবাদে এক উর্দু সম্মেলনে মুসলিম লীগ নেতা চৌধুরী খালিকুজ্জামান ঘোষণা দেন, পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা হবে উর্দু। গলা মেলালেন আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জিয়াউদ্দিন। প্রতিবাদে ২৯ জুলাই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ আজাদ পত্রিকায় বললেন, বাংলাই হওয়া উচিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, তবে দুটি রাষ্ট্রভাষা করা গেলে উর্দুর কথা বিবেচনা করা যায়।
সে বছর নভেম্বরে ড. এনামুল হক লিখেছিলেন, ‘উর্দু বহিয়া আনিবে পূর্ব পাকিস্তানবাসীর মরণ। রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মৃত্যু।’ কেন এ কথা বলেছিলেন তিনি? কারণ, তখন শোষণের পশ্চাত্ভূমি হয়ে উঠেছিল পূর্ব বাংলা। নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের বেশির ভাগ মানুষের বাস ছিল পূর্ব বাংলায়। ১৯৫১ সালের আদমশুমারিতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানবগোষ্ঠীর মধ্যে বাঙালি ৫৪ দশমিক ছয় শতাংশ, পাঞ্জাবি ২৮ দশমিক চার শতাংশ এবং উর্দুভাষী সাত দশমিক দুই শতাংশ। বাঙালির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল অভ্রান্ত, উর্দু পাকিস্তানের বিশেষ কোনো অঞ্চলের ভাষা ছিল না। স্বভাবতই পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষ আশা করেছিল, এ অঞ্চলের উন্নয়নে সচেষ্ট হবে পাকিস্তানি শাসকেরা। কিন্তু সেটা হয়নি। পাকিস্তানের রাজধানী হলো পশ্চিম পাকিস্তানে, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত সবই পশ্চিমাঞ্চল ঘিরেই বেড়ে উঠল। শিল্পায়ন, আমদানি, বিদেশি সাহায্য কেন্দ্রীভূত হলো পশ্চিমে। পূর্ব বাংলা যে ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ হয়ে উঠছে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল।
সচেতন জনগণের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা-সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ সংগ্রাম পরিষদ সারা পূর্ববঙ্গে ধর্মঘট আহ্বান করে। ১৯ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া বক্তৃতায় জিন্নাহ বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে আপনাদের বলে দিতে চাই যে উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়।’ শ্রোতাদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন ওঠে। ২৩ মার্চ জিন্নাহর বক্তৃতার সমালোচনা করে এ কে ফজলুল হকের বিবৃতি প্রচারিত হয়। ২৪ মার্চ কার্জন হলে জিন্নাহ ভাষা সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ‘নো’, নো’ বলে প্রতিবাদ করে ওঠেন অনেকে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মতিনও।
১৯৫১ সালে চট্টগ্রামে একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘ভালোবাসুন, দেশকে ভালোবাসুন, দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ভালোবাসুন, আজকের দিনে আমার মতে সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক এক কথায় বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিমনাদের সামনে এই ভালোবাসার মন্ত্র ছাড়া কোনো মন্ত্র নেই, এই ভালোবাসার শপথ ছাড়া কোনো শপথ নেই।’
আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ লিখেছেন: ‘মুসলমান হিসাবে আরব-পারস্যের সঙ্গে চিরকাল আমরা আন্তরিক যোগ অনুভব করিয়াছি। আবার এই দেশ, আবহাওয়া ও অন্নে গঠিত দেহে নাড়ির সম্পর্ক ছিল একান্তভাবে এই দেশের সঙ্গেই। ফলত, আমাদের সাধনা চিরকাল দুই ধারায় প্রবাহিত হইয়াছে।...একদিকে ধর্মবোধে স্বাতন্ত্র্য-সাধনা, অপরদিকে জাতীয়তাবোধে সমন্বয়-সাধনা।’
এর কিছু উদাহরণ: কবি সৈয়দ সুলতান তাঁর ওফাতে রসুল বইটি লিখেছিলেন বাংলা ভাষায়। কেন অন্য কোনো ভাষায় না লিখে তিনি বাংলার আশ্রয় নিলেন, তা তিনি ব্যাখ্যা করছেন এভাবে: ‘বঙ্গদেশী সকলেরে কিরূপে বুঝাইব/বাখানি আরব ভাষা এ বুঝাইতে নারিব/যারে যেই ভাষে প্রভু করিছে সৃজন/সেই ভাষ তাহার অমূল্য সেই ধন।’
চট্টগ্রামের কবি বদিউদ্দিন ছিফতে ঈমান বইতে লিখছেন: ‘দিন ইসলামের কথা শুন দিয়া মন/দেশী ভাষে রচিলে বুঝিব সর্বজন।’
অন্যদিকে নিজ ভাষাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার প্রবণতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন সন্দ্বীপের কবি আবদুল হাকিম। তিনি তার নূর নামায় লিখলেন: ‘যে সব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।/সে সবার কিবা রীত নির্ণয় ন জানি/মাতা পিতামহক্রমে বঙ্গেত বসতি।/দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।/দেশী ভাষা বিদ্যা যার মন না যুয়ায়।/নিজ দেশ তেয়াগি কেন বিদেশে ন যায়?’
তবে কেন হূদয়ের তন্ত্রীতে বেজে উঠবে না ভাষার প্রতি ভালোবাসার সুর? তবে কেন মানুষ ভাঙবে না ১৪৪ ধারা? তবে কেন রচিত হবে না জাতির জীবনের অমর এক অধ্যায়ের?
সবার জানা কথা আরেকবার বলতে হয়। উপরে যা বলা হলো, তা ভাষা আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করার পেছনে কাজ করেছে। প্রস্তুতিটা ছিল আরও ব্যাপক। কতটাই বা বলতে পারা যায়? ২০ ফেব্রুয়ারি জারি হলো ১৪৪ ধারা। সে রাতেই সর্বদলীয় পরিষদের সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হলো। কিন্তু ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভাঙার। এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্র জমায়েত, ১৪৪ ধারা ভাঙার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, দশজনী মিছিলের অগ্রযাত্রা বদলে দিল আন্দোলনের ধারা। সে দিনই তিনটার পর লাঠি চালনা আর কাঁদুনে গ্যাসের পাশাপাশি গুলি চালাল পুলিশ। নিহত হলেন বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকে। গুরুতর আহত সালামও মারা গেলেন ৭ এপ্রিল। ২২ ফেব্রুয়ারি মারা গেলেন শফিউর রহমান। নিহতদের তালিকায় আবদুল আউয়াল, ওহিউল্লাহ, সিরাজুদ্দিনের নামও শোনা যায়। কিন্তু তাঁদের কথা পরে আর কেউ বলেনি। কেন বলেনি? ভয়ে? আতঙ্কে? এ প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
এ দিবস শোকের। গর্বের। অহংকারের।
পেছনে ফিরে কী দেখি? ১৯৪৭ সালের ১৭ মে হায়দরাবাদে এক উর্দু সম্মেলনে মুসলিম লীগ নেতা চৌধুরী খালিকুজ্জামান ঘোষণা দেন, পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা হবে উর্দু। গলা মেলালেন আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জিয়াউদ্দিন। প্রতিবাদে ২৯ জুলাই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ আজাদ পত্রিকায় বললেন, বাংলাই হওয়া উচিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, তবে দুটি রাষ্ট্রভাষা করা গেলে উর্দুর কথা বিবেচনা করা যায়।
সে বছর নভেম্বরে ড. এনামুল হক লিখেছিলেন, ‘উর্দু বহিয়া আনিবে পূর্ব পাকিস্তানবাসীর মরণ। রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মৃত্যু।’ কেন এ কথা বলেছিলেন তিনি? কারণ, তখন শোষণের পশ্চাত্ভূমি হয়ে উঠেছিল পূর্ব বাংলা। নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের বেশির ভাগ মানুষের বাস ছিল পূর্ব বাংলায়। ১৯৫১ সালের আদমশুমারিতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানবগোষ্ঠীর মধ্যে বাঙালি ৫৪ দশমিক ছয় শতাংশ, পাঞ্জাবি ২৮ দশমিক চার শতাংশ এবং উর্দুভাষী সাত দশমিক দুই শতাংশ। বাঙালির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল অভ্রান্ত, উর্দু পাকিস্তানের বিশেষ কোনো অঞ্চলের ভাষা ছিল না। স্বভাবতই পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষ আশা করেছিল, এ অঞ্চলের উন্নয়নে সচেষ্ট হবে পাকিস্তানি শাসকেরা। কিন্তু সেটা হয়নি। পাকিস্তানের রাজধানী হলো পশ্চিম পাকিস্তানে, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত সবই পশ্চিমাঞ্চল ঘিরেই বেড়ে উঠল। শিল্পায়ন, আমদানি, বিদেশি সাহায্য কেন্দ্রীভূত হলো পশ্চিমে। পূর্ব বাংলা যে ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ হয়ে উঠছে, সেটাও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল।
সচেতন জনগণের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা-সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ সংগ্রাম পরিষদ সারা পূর্ববঙ্গে ধর্মঘট আহ্বান করে। ১৯ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন। ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া বক্তৃতায় জিন্নাহ বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে আপনাদের বলে দিতে চাই যে উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, অন্য কোনো ভাষা নয়।’ শ্রোতাদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন ওঠে। ২৩ মার্চ জিন্নাহর বক্তৃতার সমালোচনা করে এ কে ফজলুল হকের বিবৃতি প্রচারিত হয়। ২৪ মার্চ কার্জন হলে জিন্নাহ ভাষা সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করেন। ‘নো’, নো’ বলে প্রতিবাদ করে ওঠেন অনেকে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মতিনও।
১৯৫১ সালে চট্টগ্রামে একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলন হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বেগম সুফিয়া কামাল। তিনি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘ভালোবাসুন, দেশকে ভালোবাসুন, দেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ভালোবাসুন, আজকের দিনে আমার মতে সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক এক কথায় বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিমনাদের সামনে এই ভালোবাসার মন্ত্র ছাড়া কোনো মন্ত্র নেই, এই ভালোবাসার শপথ ছাড়া কোনো শপথ নেই।’
আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ লিখেছেন: ‘মুসলমান হিসাবে আরব-পারস্যের সঙ্গে চিরকাল আমরা আন্তরিক যোগ অনুভব করিয়াছি। আবার এই দেশ, আবহাওয়া ও অন্নে গঠিত দেহে নাড়ির সম্পর্ক ছিল একান্তভাবে এই দেশের সঙ্গেই। ফলত, আমাদের সাধনা চিরকাল দুই ধারায় প্রবাহিত হইয়াছে।...একদিকে ধর্মবোধে স্বাতন্ত্র্য-সাধনা, অপরদিকে জাতীয়তাবোধে সমন্বয়-সাধনা।’
এর কিছু উদাহরণ: কবি সৈয়দ সুলতান তাঁর ওফাতে রসুল বইটি লিখেছিলেন বাংলা ভাষায়। কেন অন্য কোনো ভাষায় না লিখে তিনি বাংলার আশ্রয় নিলেন, তা তিনি ব্যাখ্যা করছেন এভাবে: ‘বঙ্গদেশী সকলেরে কিরূপে বুঝাইব/বাখানি আরব ভাষা এ বুঝাইতে নারিব/যারে যেই ভাষে প্রভু করিছে সৃজন/সেই ভাষ তাহার অমূল্য সেই ধন।’
চট্টগ্রামের কবি বদিউদ্দিন ছিফতে ঈমান বইতে লিখছেন: ‘দিন ইসলামের কথা শুন দিয়া মন/দেশী ভাষে রচিলে বুঝিব সর্বজন।’
অন্যদিকে নিজ ভাষাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার প্রবণতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন সন্দ্বীপের কবি আবদুল হাকিম। তিনি তার নূর নামায় লিখলেন: ‘যে সব বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।/সে সবার কিবা রীত নির্ণয় ন জানি/মাতা পিতামহক্রমে বঙ্গেত বসতি।/দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।/দেশী ভাষা বিদ্যা যার মন না যুয়ায়।/নিজ দেশ তেয়াগি কেন বিদেশে ন যায়?’
তবে কেন হূদয়ের তন্ত্রীতে বেজে উঠবে না ভাষার প্রতি ভালোবাসার সুর? তবে কেন মানুষ ভাঙবে না ১৪৪ ধারা? তবে কেন রচিত হবে না জাতির জীবনের অমর এক অধ্যায়ের?
সবার জানা কথা আরেকবার বলতে হয়। উপরে যা বলা হলো, তা ভাষা আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করার পেছনে কাজ করেছে। প্রস্তুতিটা ছিল আরও ব্যাপক। কতটাই বা বলতে পারা যায়? ২০ ফেব্রুয়ারি জারি হলো ১৪৪ ধারা। সে রাতেই সর্বদলীয় পরিষদের সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হলো। কিন্তু ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভাঙার। এরপর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্র জমায়েত, ১৪৪ ধারা ভাঙার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, দশজনী মিছিলের অগ্রযাত্রা বদলে দিল আন্দোলনের ধারা। সে দিনই তিনটার পর লাঠি চালনা আর কাঁদুনে গ্যাসের পাশাপাশি গুলি চালাল পুলিশ। নিহত হলেন বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকে। গুরুতর আহত সালামও মারা গেলেন ৭ এপ্রিল। ২২ ফেব্রুয়ারি মারা গেলেন শফিউর রহমান। নিহতদের তালিকায় আবদুল আউয়াল, ওহিউল্লাহ, সিরাজুদ্দিনের নামও শোনা যায়। কিন্তু তাঁদের কথা পরে আর কেউ বলেনি। কেন বলেনি? ভয়ে? আতঙ্কে? এ প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
এ দিবস শোকের। গর্বের। অহংকারের।
No comments