ধন্যবাদ পাঠকদের-অনুপ পাস করেছে by ইমাম হাসান
‘আমাদের অনুপ এসএসসি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগে এ গ্রেডে পাস করেছে।’ আমাদের অনুপ? মা অর্পণা আবার ফোনে বলেন, ‘হ্যাঁ দাদা, আমি ওর মা হলেও সে তো আমার একার সন্তান না। অনুপ যে আমার সঙ্গে সঙ্গে আপনাদেরও। প্রথম আলোর পাঠকেরাই যে অনুপকে সুস্থ করে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে! তাই তো ও সবার অনুপ।’
পাঠক, অনুপকে মনে আছে তো আপনাদের? ২০০৬ সালের ২৯ মার্চ প্রথম আলোর নারীমঞ্চ পাতায় প্রথম ছাপা হয় অনুপের খবরটি। ২০০১ সালে শিশুটির দেহে ধরা পড়ে ক্যানসার। অনুপের বাবা ওর চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে ওদের জমানো টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে নতুন যুদ্ধে নামেন মা অর্পণা ভট্টাচার্য। শিশু অনুপ ভট্টাচার্যের আশঙ্কা, ‘মাও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো?’ প্রতিবেদন পড়ে প্রথম আলোর পাঠকেরা এগিয়ে আসেন। ভারতে চিকিৎসা শুরু হয় অনুপের। দফায় দফায় যেতে হয় কলকাতায়। ফলোআপ প্রতিবেদন পড়ে পড়ে প্রথম আলোর পাঠকেরা আবার টাকা পাঠান। তত দিনে একটা চোখ সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে তার। তার পরও অনুপ সুস্থ হয় এবং লেখাপড়া শুরু করে। আজ সে এসএসসি পাস করেছে। ঢাকার নবাবপুর নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। এসএসসির ফল প্রকাশের পরদিন মাকে নিয়ে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আসে অনুপ। ওর মায়ের চোখে তৃপ্তি। একই সঙ্গে আশঙ্কা। ছেলের কলেজের লেখাপড়া আর বছর বছর চেকআপ, পারবেন তো তিনি? তবে কৃতজ্ঞ তিনি প্রথম আলোর পাঠকদের কাছে। তাঁরাই তাঁকে ছেলেকে নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
No comments