চারদিক-রঙে রঙে রাঙিয়ে ফাগুয়া by মুজিবুর রহমান
চা-বাগানের শতকরা ৯৮ ভাগ শ্রমিক সনাতনী ধর্মাবলম্বী। কথায় আছে, বারো মাসে তেরো পার্বণ (উৎসব)। অর্থাৎ সারা বছরই একটা না একটা উৎসব লেগেই থাকে। এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না চা-বাগানগুলোতেও। চা-শ্রমিকেরা ছোট থেকে বড় যেকোনো পূজা পালন করেন যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে।
কোথাও যেন খাদ বা আয়োজনের কমতি না থাকে। শারদীয় দুর্গোৎসব হিন্দুদের, বিশেষ করে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি প্রধান উৎসব। পরে আসে কালীপূজা, সরস্বতী পূজা, জন্মাষ্টমী, ব্রহ্ম তারকযজ্ঞ ও নামযজ্ঞ। চা-শ্রমিকেরাও এই পূজাগুলো গুরুত্ব দিয়ে পালন করে থাকে। তবে চা-বাগানে তিন-চার দিনব্যাপী রঙে রঙে রাঙিয়ে রং খেলা বা ফাগুয়া অর্থাৎ হলি উৎসব পালন করা হয় কমলগঞ্জের ফাঁড়িসহ ২২টি চা-বাগানে। এ উৎসবটি ওদের মনও রাঙিয়ে দেয়। এ মাসের শেষ দিকে হবে এই হলি উৎসব।
বাংলা মাস ফাল্গুন থেকে চা-বাগানে চলে এসেছে ফাগু বা ফাগুয়া। ফাল্গুন পূর্ণিমায় হিন্দুধর্মীয় চা-শ্রমিকেরা তিন-চার দিনের রং মাখামাখি, রং ছোড়াছুড়ি করে থাকে। এ সময় পুরো চা-বাগান এলাকা নানা রঙে রঙিন হয়ে যায়। চিরসবুজ চা-বাগানে লাল, নীল, হলুদ, কালো, সবুজ নানা রঙের ছড়াছড়ি। এ সময় চা-বাগান এলাকায় পরিচিতজন অন্য ধর্মের হলেও তার গায়ে কিছু রং মাখতে হবে। চা-শ্রমিকেরা এখন ফাগুয়া পালন এমনভাবে করছে যে এটাকে চা-শ্রমিকদের প্রধান উৎসব বলা চলে।
এত দারিদ্র্যের মধ্যেও রং উৎসবে চা-শ্রমিকেরা প্রাণভরে আনন্দ উপভোগের পেছনে তাদের বিশ্বাসে ধর্মীয় একটি যুক্তি রয়েছে। শমশেরনগর চা-বাগানের দীননাথ পণ্ডিতের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, হিন্দুধর্মীয় শাস্ত্রে আছে, রাক্ষস অসুর হিরণ্য কর্ষকের কথা। এই রাক্ষস এমনই প্রতাপশালী ছিল যে সে ধর্ম-কর্ম কিছুই পালন করত না।
সে ভগবান নারায়ণকে বিশ্বাস করত না। কিন্তু তারই ছেলে প্রহ্লাদ ছিল ভগবান নারায়ণের ভক্ত। রাক্ষস তা জেনে ছেলের ওপর এতই ক্ষুব্ধ ছিল যে তাকে শাস্তিস্বরূপ একটি পর্বতের ওপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। কিন্তু ভগবান নারায়ণ তাকে এ সময় বিপদ থেকে রক্ষা করেন। দ্বিতীয়বার রাক্ষস ছেলে প্রহ্লাদকে একটি স্বর্পকুণ্ডে ফেলে দেয়। কিন্তু এখানেও ভগবান নারায়ণ তাকে রক্ষা করেন। রাক্ষসের বোন ধুন্ডি রাক্ষসী ছিল। সে ছিল আগুনের বরপ্রাপ্ত। রাক্ষস এবার ছেলে প্রহ্লাদকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য বোন ধুন্ডি রাক্ষসীর কোলে তুলে দেয়। ধুন্ডি রাক্ষসী ভাইপোকে কোলে নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করে। প্রহ্লাদ ধুন্ডি রাক্ষসীর কোলে বসেই নারায়ণের নাম জপ করতে থাকলে এখানেও নারায়ণ প্রহ্লাদকে রক্ষা করেন আর ধুন্ডি রাক্ষসীকে পুড়িয়ে মারেন। এভাবে ভগবান নারায়ণের দয়ায় রাক্ষসের হাত থেকে প্রহ্লাদ বেঁচে যায়। ধ্বংস হয় রাক্ষসের। এটাকে একটি বড় বিজয় হিসেবে প্রতিবছর ফাল্গুন পূর্ণিমায় হিন্দুধর্মীয় লোকজন আনন্দ উৎসব পালন করে। উৎসব পালন করা হয় রঙে রঙে নিজেদের রাঙিয়ে দিয়ে।
তবে চা-বাগানে রং উৎসবকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পালন করা হয়। প্রথমে শুরু হয় কাদাখেলা। তারপর কাঠি নৃত্য বা কাঠিখেলা। তিন দিন ধরে চা-বাগান এলাকায় কাঠিনৃত্য করে নেচে-গেয়ে একে অন্যের গায়ে রং ছোড়ে, রং মাখিয়ে ফাগুয়ার উৎসব পালন করে থাকে। বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ার মধ্যে আমাদের দেশে তেমন রং খেলা হয় না বললেই চলে। ভারতে ব্যাপক আয়োজনে রং উৎসব হলি পালন করা হয়। তবে বাংলাদেশের সব কয়টি চা-বাগানে রং উৎসব ফাগুয়া পালন করে চা-শ্রমিকেরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায়। রং উৎসবে চা-বাগান এলাকায় একবার এসে না দেখলে বাস্তবে তার বিবরণ দেওয়া কষ্টকর।
বাংলা মাস ফাল্গুন থেকে চা-বাগানে চলে এসেছে ফাগু বা ফাগুয়া। ফাল্গুন পূর্ণিমায় হিন্দুধর্মীয় চা-শ্রমিকেরা তিন-চার দিনের রং মাখামাখি, রং ছোড়াছুড়ি করে থাকে। এ সময় পুরো চা-বাগান এলাকা নানা রঙে রঙিন হয়ে যায়। চিরসবুজ চা-বাগানে লাল, নীল, হলুদ, কালো, সবুজ নানা রঙের ছড়াছড়ি। এ সময় চা-বাগান এলাকায় পরিচিতজন অন্য ধর্মের হলেও তার গায়ে কিছু রং মাখতে হবে। চা-শ্রমিকেরা এখন ফাগুয়া পালন এমনভাবে করছে যে এটাকে চা-শ্রমিকদের প্রধান উৎসব বলা চলে।
এত দারিদ্র্যের মধ্যেও রং উৎসবে চা-শ্রমিকেরা প্রাণভরে আনন্দ উপভোগের পেছনে তাদের বিশ্বাসে ধর্মীয় একটি যুক্তি রয়েছে। শমশেরনগর চা-বাগানের দীননাথ পণ্ডিতের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, হিন্দুধর্মীয় শাস্ত্রে আছে, রাক্ষস অসুর হিরণ্য কর্ষকের কথা। এই রাক্ষস এমনই প্রতাপশালী ছিল যে সে ধর্ম-কর্ম কিছুই পালন করত না।
সে ভগবান নারায়ণকে বিশ্বাস করত না। কিন্তু তারই ছেলে প্রহ্লাদ ছিল ভগবান নারায়ণের ভক্ত। রাক্ষস তা জেনে ছেলের ওপর এতই ক্ষুব্ধ ছিল যে তাকে শাস্তিস্বরূপ একটি পর্বতের ওপর থেকে নিচে ফেলে দেয়। কিন্তু ভগবান নারায়ণ তাকে এ সময় বিপদ থেকে রক্ষা করেন। দ্বিতীয়বার রাক্ষস ছেলে প্রহ্লাদকে একটি স্বর্পকুণ্ডে ফেলে দেয়। কিন্তু এখানেও ভগবান নারায়ণ তাকে রক্ষা করেন। রাক্ষসের বোন ধুন্ডি রাক্ষসী ছিল। সে ছিল আগুনের বরপ্রাপ্ত। রাক্ষস এবার ছেলে প্রহ্লাদকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য বোন ধুন্ডি রাক্ষসীর কোলে তুলে দেয়। ধুন্ডি রাক্ষসী ভাইপোকে কোলে নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়ানোর চেষ্টা করে। প্রহ্লাদ ধুন্ডি রাক্ষসীর কোলে বসেই নারায়ণের নাম জপ করতে থাকলে এখানেও নারায়ণ প্রহ্লাদকে রক্ষা করেন আর ধুন্ডি রাক্ষসীকে পুড়িয়ে মারেন। এভাবে ভগবান নারায়ণের দয়ায় রাক্ষসের হাত থেকে প্রহ্লাদ বেঁচে যায়। ধ্বংস হয় রাক্ষসের। এটাকে একটি বড় বিজয় হিসেবে প্রতিবছর ফাল্গুন পূর্ণিমায় হিন্দুধর্মীয় লোকজন আনন্দ উৎসব পালন করে। উৎসব পালন করা হয় রঙে রঙে নিজেদের রাঙিয়ে দিয়ে।
তবে চা-বাগানে রং উৎসবকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে পালন করা হয়। প্রথমে শুরু হয় কাদাখেলা। তারপর কাঠি নৃত্য বা কাঠিখেলা। তিন দিন ধরে চা-বাগান এলাকায় কাঠিনৃত্য করে নেচে-গেয়ে একে অন্যের গায়ে রং ছোড়ে, রং মাখিয়ে ফাগুয়ার উৎসব পালন করে থাকে। বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ার মধ্যে আমাদের দেশে তেমন রং খেলা হয় না বললেই চলে। ভারতে ব্যাপক আয়োজনে রং উৎসব হলি পালন করা হয়। তবে বাংলাদেশের সব কয়টি চা-বাগানে রং উৎসব ফাগুয়া পালন করে চা-শ্রমিকেরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায়। রং উৎসবে চা-বাগান এলাকায় একবার এসে না দেখলে বাস্তবে তার বিবরণ দেওয়া কষ্টকর।
No comments