সবার সংগঠন করার বাস্তবসম্মত পথ খোলা রাখুন-বিধি ভেঙে নিবন্ধন

বর্তমান সরকার শ্রম আইন সংশোধন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের সংখ্যা পাঁচটি থেকে একটিতে নামিয়ে আনার পর প্রথম একটি সংগঠনের নিবন্ধন দেওয়া হলো। নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।


যে সংগঠনটির সদস্যসংখ্যা বেশি এবং আগে আবেদন করেছে, সেটির অন্তর্ভুক্তির বাস্তবসম্মত কোনো পথ খোলা না রেখে অন্যটিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
একটি সংগঠন নিবন্ধন পাওয়ার ফলে অন্যটির আর সেই সুযোগ নেই। এখন এই সংগঠনের সদস্যদের নিবন্ধিত সংগঠনটির সদস্য হতে হবে। বিরোধী পক্ষ থেকে এসে কোনো সংগঠনের ভেতর নিজেদের স্বর তুলে ধরা বাস্তবে খুব কঠিন ব্যাপার। এ জন্য সমঝোতার ভিত্তিতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উভয়কে একত্র করে একটি সমাধানে পৌঁছানো উচিত ছিল।
কিন্তু একতরফাভাবে একটি সংগঠনকে নিবন্ধন দেওয়ায় অন্য অংশটি বাইরে থেকে গেল। ফলে বন্দরে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়ে গেছে। নিবন্ধনবঞ্চিত সংগঠনটির পক্ষ থেকে আন্দোলন আর আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা তেমন ইঙ্গিতই বহন করে। তা ছাড়া সরকার-সমর্থিত সংগঠনটিকে একতরফা নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়টি ভিন্নমতের প্রতি সরকারের অসহিষ্ণু আচরণকে উন্মোচিত করে, যা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ।
এভাবে হঠকারী সিদ্ধান্ত না নিয়ে আন্দোলন শুরুর আগেই সরকারের দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। শ্রমিকদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে ট্রেড ইউনিয়ন-চর্চা চালানোর জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে সরকার। এ জন্য সরকারের সদিচ্ছাই যথেষ্ট। নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয় আলোচনার মাধ্যমে এই হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নিয়মতান্ত্রিক পথে সবার জন্য শ্রমিক সংগঠন করার পথ খোলা রাখবে; শ্রম অসন্তোষ যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.