শোক প্রকাশেও দলবাজি!-লাঞ্ছিত শহীদ মিনার

ঘটনাটা জাতীয়। একজন নিহত, পাঁচ জেলায় ৫৫ জন আহত এবং দুই সাংসদ লাঞ্ছিত। ছকটি পরিচিত।বাদী-বিবাদীরাও যেন অনেকটা পূর্বনির্ধারিত: আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপি, আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে এবং বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘাত হয়েছে। সবই ঘটেছে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে।


আসন নিয়ে, কে আগে যাবে কে পরে যাবে তা নিয়ে, এমনকি ছবি তোলা নিয়েও সংঘর্ষ হয়েছে। সংসদ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত দলবাজি, গ্রুপ-বাজির এই বেপরোয়া আচরণে শহীদ মিনার লজ্জিত, ফুলগুলো ব্যথিত আর শোকে স্তব্ধ নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা।
একুশের শোক ও গাম্ভীর্য যাদের বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না, তাদের শহীদ মিনারে যাওয়ার প্রয়োজন কী! বাংলাদেশে একুশকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর মানুষের কোনো অভাব নেই। তাঁদের ছাড়াও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে। এর পরও তাঁরা আসেন শোক জানাতে নয়, লোক-দেখানো দলীয় কর্মসূচি পালন করতে। যাঁদের যে গুণ, তাঁরা সেটাই সর্বত্র প্রদর্শন করেন। একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর প্রধান গুণ হলো দম্ভ ও সন্ত্রাসী ক্ষমতা, তাঁরা যেখানে যান সেখানেই এর ছাপ রাখেন। কেবল এবারের একুশেই নয়, প্রতিবছরই এমনটা ঘটতে দেখা যায়। এমনকি অতীতে জাতীয় শহীদ মিনারে জাতীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতেই দুটি প্রধান দল সংঘাতে লিপ্ত হয়ে একুশের পবিত্র মুহূর্তকে কালিমালিপ্ত করার রেকর্ড গড়েছিল।
যাঁদের মধ্যে স্থান-কাল-পাত্রের বোধ নেই, অসহিষ্ণুতা যাঁদের মজ্জাগত, তাঁরা যদি রাজনীতির নামে এহেন কাজ করতে থাকেন, তাতে তাঁদের নাক কাটা না পড়লেও লজ্জায় দেশবাসীর মাথা নত হয়ে যায়।
দেশকে, দিবসকে, জাতীয় ঐতিহ্যকে এভাবে কলঙ্কিত ও লাঞ্ছিত করার অধিকার কারও নেই।

No comments

Powered by Blogger.