টিকফা চুক্তি

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ‘ট্রেড এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট’ (টিকফা) চুক্তি বেশ কিছুদিন ধরে স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির ওয়াশিংটন সফরের সময় মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম জে. বার্নসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিষয়টি


আলোচিত হয়েছে বলে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশসহ এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য মার্কিন বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরলে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ টিকফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী পণ্যের উচ্চ শুল্কহার কমাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একটি বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের আর্থিক সম্পৃক্ততা ও বিনিয়োগ রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় বাজারও যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মৎস্য শিল্প, পাটজাত পণ্য এবং অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারকে বড় ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করার লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে অত্যন্ত স্বচ্ছ বোঝাপড়া থাকা দরকার। বর্তমান বিশ্ব-প্রেক্ষাপটে কোন দেশের আর্থিক ভিতকে মজবুত করার জন্য রফতানি বাণিজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকতে পারে না।প্রতি বছর উভয় দেশের মধ্যে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি রপ্তানি হয়। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করা ও দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধিতে রফতানি বাণিজ্যকে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কার্যকর করার লক্ষ্যে রফতানির পরিমাণও বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরী। আর শুধু রফতানি বাড়ালেই হবে না। রফতানি পণ্যের শুল্ক হারও যাতে সহনীয় হয় কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা দরকার। এই প্রেক্ষাপটে টিকফা চুক্তি বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।
টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে অনেক বিলম্ব হয়েছে। চুক্তিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়েছে নিবিড়ভাবে। চুক্তির ব্যাপারে উভয়পক্ষের মধ্যে এখনও যে মতভিন্নতা রয়েছে তা অবিলম্বে নিরসন করে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.