অলিম্পিকে আবারও ব্যর্থতা- কর্তৃপক্ষ নির্বিকার
পৃথিবী অনেকটা কমলালেবুর মতো চ্যাপটা। তবে কমলালেবু ভর্তি ভিটামিনে আর পৃথিবী ভর্তি রহস্যে। বাংলাদেশ ঠিক কোন কারণে অলিম্পিকে অংশ নেয়, সে রহস্য গুগলে সার্চ দিয়েও কেউ খুঁজে বের করতে পারেননি। অনেকে মনে করেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্চ পাস্টের মধ্য দিয়ে আমরা সারা বিশ্বকে এটাই জানিয়ে দিই যে, ও পৃথিবী, দেখো, এটা বাংলাদেশের পতাকা।
আমরা প্রতিবার অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু আমরা তোমাদের মতো লোভী নই। আমরা সোনা-রুপার পেছনে অযথা দৌড়ঝাঁপ করি না। অনেকের ভ্রান্ত ধারণা, অলিম্পিকের অজুহাতে আমাদের কিছু কর্মকর্তা-খেলোয়াড়ের বিদেশে ভ্রমণের সুযোগ হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অবশ্য এসব ধারণা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নয়। অলিম্পিকের ইভেন্টগুলোয় বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা যেমন পাত্তা পায় না, ঠিক তেমনি কর্তৃপক্ষের কাছেও কোনো সমালোচনাই পাত্তা পায় না। অথচ কর্তৃপক্ষ চাইলেই অলিম্পিকে ব্যাপক সাফল্য পেতে পারে বাংলাদেশ। যে ইভেন্টগুলোয় বাংলাদেশের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত, সেগুলোয় আমরা কোনো প্রতিযোগী পাঠাই না, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। এই যেমন, বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ককে নিয়মিত ভারী ভারী নায়িকা উত্তোলন করেন। সেসব নায়কদের অলিম্পিকে পাঠালে নিশ্চিতভাবেই ভারোত্তোলনে স্বর্ণপদক আমরাই পেতাম। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মেরে এতটাই হাত পাকিয়েছেন যে হেভিওয়েট বক্সিংয়ে তাঁদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারত না। রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো থেকে বাছাইকৃত কিছু বোমাবাজকে পাঠালে গোলক নিক্ষেপে নিশ্চিন্তে স্বর্ণপদক ছিনিয়ে আনতাম আমরা। লোকাল বাসের হ্যান্ডেল ধরে ঝুলতে ঝুলতে জিমন্যাস্টিকসও আমরা ভালোই আয়ত্তে এনেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ ইভেন্টগুলোর কথা বেমালুম ভুলে গেল। এদিকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ বেশি নির্ঘুম রাত কাটায়। আরে ভাই, যোগ্য প্রতিযোগীদের না পাঠিয়ে অলিম্পিকে বারবার ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরলে মানুষের চোখে ঘুম আসবে কী করে? অথচ কর্তৃপক্ষ এই সহজ ব্যাপার বুঝতেই পারছে না। কী আর করা, এবারের অলিম্পিক তো গেল। আশা করি, পরবর্তী অলিম্পিকের আগেই কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপার নিয়ে ভাববে।
No comments