মেসির দুঃখ, সুয়ারেজের উল্লাস
দুটো ছবি পাশাপাশি ধরতে পারলে একটা মিলও খুঁজে নিতে পারেন। দুই জোড়া চোখই যেন চোখের জল সামলাতে ব্যস্ত। কিন্তু বড় অমিলটাও এখানে। উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ সামলাচ্ছেন আনন্দাশ্রু। আর আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির চোখ বাষ্পরুদ্ধ ব্যর্থতায়।
বিশ্বকাপ ২০১৪-এর দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বে কাল লুইসের ৪ গোলে নিজেদের মাঠে চিলিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে উরুগুয়ে। আর এরই খানিক আগে ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনা ১-১ গোলে ড্র করেছে বলিভিয়ার সঙ্গে। মিশন ব্রাজিলে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েই এখন শীর্ষে, তিন ম্যাচ থেকে তাদের জমেছে ৭ পয়েন্ট। আর্জেন্টিনা নেমে দাঁড়াল দুইয়ে। আসলে তিনে; কেননা কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে ও ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে ওই জায়গাটা তারা ভাগাভাগি করলেও কলম্বিয়া ম্যাচ খেলেছে একটি কম। আগামী মঙ্গলবার কলম্বিয়া নিজেদের মাঠে আর্জেন্টিনার সঙ্গে খেলবে তাদের তৃতীয় ম্যাচ। তাতে একটি পয়েন্ট পেলেই তারা আর্জেন্টিনাকে যাবে ছাড়িয়ে। আর আর্জেন্টিনা কাল যেমন খেলল পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বলিভিয়ার বিপক্ষে, কে বলতে পারে স্বাগতিকদের হাতে তিনটি পয়েন্টই উঠবে না?
কাল ৭৭ মিনিট খেলেই লুইস সুয়ারেজ যখন উঠে যাচ্ছেন, গোটা সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামও দাঁড়িয়ে পড়ল। মাঠের নায়ককে আনত শ্রদ্ধায় বরণ না করে পারা যায়? এর আগেই যে লিভারপুল স্ট্রাইকার ম্যাচের ফল গড়ে দেওয়া চারটি গোলই করে ফেলেছেন। গোলগুলো হয়েছে ৪২, ৪৫, ৬৭ ও ৭৩ মিনিটে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পাঁচ খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করে চিলির আর্জেন্টাইন কোচ ক্লদিও বোর্গি বিমানে উঠেছিলেন। কিন্তু মন্টেভিডিওর মাঠে এক লুইস সুয়ারেজই যে শেষ মুহূর্তে তাঁর গুছিয়ে নেওয়া দলটিকে এমন দুমড়েমুচড়ে শেষ করে দেবেন, তা কি ভাবতে পেরেছিলেন? গত বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে লাল কার্ড পাওয়া, হল্যান্ডের আয়াক্স থেকে গত বছর লিভারপুলে ভরসা হয়ে এসে ততটা ঔজ্জ্বল্য ছড়াতে না-পারা, বর্ণবাদ বিতর্কে জড়ানো—ক্যারিয়ারে কত যে চ্যালেঞ্জ! সুয়ারেজ আপন মহিমাতেই সেসব জিতে চলেছেন। উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেজ সুয়ারেজের প্রশংসায় উচ্চারণ করেছেন ওই কথাটাই, ‘সে যেভাবে ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জগুলো জিতে আসছে তাতে তার জন্য আমার বড় প্রশংসাই বরাদ্দ।’
ডিয়েগো ফোরলান ইনজুরির জন্য বাইরে, কিন্তু তাঁর অভাবটা বুঝতে না দিয়ে ম্যাচের নায়ক হলেন সবগুলো গোল করে। সুয়ারেজ ভেতরে ভেতরে ভেসে যাচ্ছিলেন আবেগে, ‘আপনার দুই চোখ বেয়ে জলের ধারা নামতে চায়, পেটের মধ্যে নড়াচড়া করে যেন কেমন এক অনুভূতি।’ উরুগুয়ের হয়ে এখনো সর্বোচ্চ গোলের মালিক ওই ফোরলান, ২৬ গোল নিয়ে তাঁর চেয়ে মাত্র ৬ গোল পেছনে সুয়ারেজ। এ ম্যাচের চার গোল নিয়ে সুয়ারেজ অবশ্য একটা দক্ষিণ আমেরিকান রেকর্ড ছুঁয়েছেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলে এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪ গোল করেছিলেন ব্রাজিলের রোমারিও, ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ২০০০ সালে। কাল তাঁর পাশে বসলেন সুয়ারেজ।
৫৫ মিনিটে মার্টিন ডেমিকেলিসের রক্ষণভুলে মার্সেলো মার্টিনস দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর বলিভিয়ানরা যে উল্লাস করেছে, সেটি ছিল জয়ের তুল্য। এটাই স্বাভাবিক, দুর্বল প্রতিপক্ষ, মাঠে নামার আগে মেসিকে কীভাবে আটকানো যায় সেটাই ভাবছিল বলিভিয়া, আর তারাই কি না প্রথমে গেল এগিয়ে! চার মিনিট পর যদিও মেসি ও গ্যাগোর সমন্বয় থেকে বল পেয়ে সমতা ফেরান বদলি স্ট্রাইকার ইজাকুয়েল লাভেজ্জি, বলিভিয়ার আনন্দ তাতে কমেনি। এই প্রথম পয়েন্ট পেল তারা। রক্ষণ আঁটসাঁট করে, মেসিকে খেলতে না দিয়ে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করারই পরিকল্পনা ছিল বলিভিয়া কোচ গুস্তাভো কুয়েন্তেরোসের। পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল!
তবে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট খোয়ানোর পেছনে ইকুয়েডরের রেফারি কার্লোস ভেরারও অবদান আছে। ২১ মিনিটে মেসিকে পেছন থেকে ফাউল করে ফেলে দেওয়ার পরও তিনি বল বাড়িয়েছিলেন গঞ্জালো হিগুয়েইনকে। হিগুয়েইন গোলও করেন। কিন্তু রেফারি মেসিকে ফাউল করার দায়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে দেন ফ্রি-কিক। ‘অ্যাডভান্টেজ রুল’ বলে একটা জিনিস আছে রেফারি তা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন। এটিকেই বড় করে দেখেছেন মেসি, ‘রেফারির এই সিদ্ধান্তে আমরা সবাই অবাক হয়ে গেছি। এটা সবকিছু বদলে দিতে পারত।’
তবে এই অজুহাত আর্জেন্টিনার মানুষ কি শুনতে চাইবে? মেসি এ ম্যাচেও ছিলেন সাধারণ। কয়েকটি সুযোগ পেয়ে মেরেছেন বাইরে। এখন শিরে সংক্রান্তি, তাই বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘আর একটি পয়েন্টও আমাদের হারালে চলবে না।’ আর পয়েন্ট হারানো চলবে না, মানে আর্জেন্টিনার জার্সিতে পুরোটা না হোক কিছুটা বার্সেলোনার মেসি তাঁকে সামনে হতেই হবে। কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা এই ম্যাচের আগেই স্বস্তিতে ছিলেন না, এখন তো রীতিমতো অস্বস্তিতে। একই দিনের অন্য ম্যাচগুলোতে কলম্বিয়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে, প্যারাগুয়ে প্রথম জয় পেয়েছে ইকুয়েডরের বিপক্ষে (২-১)। রয়টার্স, এএফপি।
কাল ৭৭ মিনিট খেলেই লুইস সুয়ারেজ যখন উঠে যাচ্ছেন, গোটা সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামও দাঁড়িয়ে পড়ল। মাঠের নায়ককে আনত শ্রদ্ধায় বরণ না করে পারা যায়? এর আগেই যে লিভারপুল স্ট্রাইকার ম্যাচের ফল গড়ে দেওয়া চারটি গোলই করে ফেলেছেন। গোলগুলো হয়েছে ৪২, ৪৫, ৬৭ ও ৭৩ মিনিটে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পাঁচ খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করে চিলির আর্জেন্টাইন কোচ ক্লদিও বোর্গি বিমানে উঠেছিলেন। কিন্তু মন্টেভিডিওর মাঠে এক লুইস সুয়ারেজই যে শেষ মুহূর্তে তাঁর গুছিয়ে নেওয়া দলটিকে এমন দুমড়েমুচড়ে শেষ করে দেবেন, তা কি ভাবতে পেরেছিলেন? গত বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে লাল কার্ড পাওয়া, হল্যান্ডের আয়াক্স থেকে গত বছর লিভারপুলে ভরসা হয়ে এসে ততটা ঔজ্জ্বল্য ছড়াতে না-পারা, বর্ণবাদ বিতর্কে জড়ানো—ক্যারিয়ারে কত যে চ্যালেঞ্জ! সুয়ারেজ আপন মহিমাতেই সেসব জিতে চলেছেন। উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেজ সুয়ারেজের প্রশংসায় উচ্চারণ করেছেন ওই কথাটাই, ‘সে যেভাবে ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জগুলো জিতে আসছে তাতে তার জন্য আমার বড় প্রশংসাই বরাদ্দ।’
ডিয়েগো ফোরলান ইনজুরির জন্য বাইরে, কিন্তু তাঁর অভাবটা বুঝতে না দিয়ে ম্যাচের নায়ক হলেন সবগুলো গোল করে। সুয়ারেজ ভেতরে ভেতরে ভেসে যাচ্ছিলেন আবেগে, ‘আপনার দুই চোখ বেয়ে জলের ধারা নামতে চায়, পেটের মধ্যে নড়াচড়া করে যেন কেমন এক অনুভূতি।’ উরুগুয়ের হয়ে এখনো সর্বোচ্চ গোলের মালিক ওই ফোরলান, ২৬ গোল নিয়ে তাঁর চেয়ে মাত্র ৬ গোল পেছনে সুয়ারেজ। এ ম্যাচের চার গোল নিয়ে সুয়ারেজ অবশ্য একটা দক্ষিণ আমেরিকান রেকর্ড ছুঁয়েছেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলে এর আগে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪ গোল করেছিলেন ব্রাজিলের রোমারিও, ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ২০০০ সালে। কাল তাঁর পাশে বসলেন সুয়ারেজ।
৫৫ মিনিটে মার্টিন ডেমিকেলিসের রক্ষণভুলে মার্সেলো মার্টিনস দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর বলিভিয়ানরা যে উল্লাস করেছে, সেটি ছিল জয়ের তুল্য। এটাই স্বাভাবিক, দুর্বল প্রতিপক্ষ, মাঠে নামার আগে মেসিকে কীভাবে আটকানো যায় সেটাই ভাবছিল বলিভিয়া, আর তারাই কি না প্রথমে গেল এগিয়ে! চার মিনিট পর যদিও মেসি ও গ্যাগোর সমন্বয় থেকে বল পেয়ে সমতা ফেরান বদলি স্ট্রাইকার ইজাকুয়েল লাভেজ্জি, বলিভিয়ার আনন্দ তাতে কমেনি। এই প্রথম পয়েন্ট পেল তারা। রক্ষণ আঁটসাঁট করে, মেসিকে খেলতে না দিয়ে পাল্টা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করারই পরিকল্পনা ছিল বলিভিয়া কোচ গুস্তাভো কুয়েন্তেরোসের। পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল!
তবে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট খোয়ানোর পেছনে ইকুয়েডরের রেফারি কার্লোস ভেরারও অবদান আছে। ২১ মিনিটে মেসিকে পেছন থেকে ফাউল করে ফেলে দেওয়ার পরও তিনি বল বাড়িয়েছিলেন গঞ্জালো হিগুয়েইনকে। হিগুয়েইন গোলও করেন। কিন্তু রেফারি মেসিকে ফাউল করার দায়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে দেন ফ্রি-কিক। ‘অ্যাডভান্টেজ রুল’ বলে একটা জিনিস আছে রেফারি তা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন। এটিকেই বড় করে দেখেছেন মেসি, ‘রেফারির এই সিদ্ধান্তে আমরা সবাই অবাক হয়ে গেছি। এটা সবকিছু বদলে দিতে পারত।’
তবে এই অজুহাত আর্জেন্টিনার মানুষ কি শুনতে চাইবে? মেসি এ ম্যাচেও ছিলেন সাধারণ। কয়েকটি সুযোগ পেয়ে মেরেছেন বাইরে। এখন শিরে সংক্রান্তি, তাই বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘আর একটি পয়েন্টও আমাদের হারালে চলবে না।’ আর পয়েন্ট হারানো চলবে না, মানে আর্জেন্টিনার জার্সিতে পুরোটা না হোক কিছুটা বার্সেলোনার মেসি তাঁকে সামনে হতেই হবে। কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা এই ম্যাচের আগেই স্বস্তিতে ছিলেন না, এখন তো রীতিমতো অস্বস্তিতে। একই দিনের অন্য ম্যাচগুলোতে কলম্বিয়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে, প্যারাগুয়ে প্রথম জয় পেয়েছে ইকুয়েডরের বিপক্ষে (২-১)। রয়টার্স, এএফপি।
No comments