ঘিরে রেখেছে আপনজনরা- প্রেসিডেন্ট বাশার কি নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন!
সিরিয়ার লড়াইয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের খুব কাছের মানুষগুলো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তারা প্রেসিডেন্ট আসাদকে বাস্তবতা বুঝতে দিচ্ছেন না। অথবা এমনও হতে পারে, তারা তাকে তাদের অনুরোধ রাখতে বাধ্য করছেন।
সিরিয়ার মিলিটারি পুলিশ প্রধান লেফটেনেন্ট জেনারেল আবদুল আজিজ আল শালাল পক্ষ ত্যাগ করার পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়েছে। ওদিকে আসাদের ঘনিষ্ঠজন, যারা তাকে ঘিরে রেখেছেন তারা তাকে বুঝাচ্ছেন তাদের এখনও লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ এখনও তারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারেন। এখানে মনে রাখার বিষয় হলো গত দুই বছরে এই লড়াইয়ে সিরিয়ায় কমপক্ষে ৪৪০০০ মানুষ নিহত হয়েছে।
তার মধ্যে রয়েছে শিশু ও নারী। বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্যারিসভিত্তিক বিশেষজ্ঞ করিম বিতার বলেছেন, আসাদের মুষ্টিমেয় কয়েকজন ঘনিষ্ঠজনের হাতে ক্ষমতা চলে গিয়েছে। তারা ক্রমাগত উন্মত্ত হয়ে উঠছেন। প্রেসিডেন্ট আসাদকে যারা এভাবে ঘিরে আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম তার ভাই মেহের (৪৪)। তিনি সেনাবাহিনীর অভিজাত শাখা ফোর্থ ডিভিশনের প্রধান। এছাড়া রয়েছেন আসাদের ব্যবসায়ী চাচা মোহাম্মদ মাখলুফ (৮০), চাচাতো ভাই রামি মাখলুফ (৪৩) ও দামেস্কের নিরাপত্তা প্রধান হাজেম মাখলুফ (৪১)। প্রেসিডেন্ট আসাদের মতো তাদের প্রায় সবাই সিরিয়ার সংখ্যালঘু সমপ্রদায় আলায়িত-এর সদস্য। এছাড়া ২০০৯ সাল থেকে প্রেসিডেন্সিয়াল বিষয়ক মন্ত্রী মানসুর আযম (৫২), আল জাজিরার সাবেক সাংবাদিক লুনা আল শিবলও প্রেসিডেন্ট আসাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তারা দু’জনেই দ্রুজ সমপ্রদায়ের। প্রেসিডেন্ট আসাদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলায়িত হাসাম সুক্কর, সুন্নি সমপ্রদায়ের জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালক আলী মামলুক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান রোস্তম গাজালিও তার নিকটজন। বিশ্লেষক করিম বিতার বলেন, এই গ্রুপের বুদ্ধির কাছে আটকা পড়েছেন বাশার আল আসাদ। এই গ্রুপটিই এখন সিরিয়া সরকারের সব সিদ্ধান্ত নেয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আল শারা’র মতো সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, সরকার যন্ত্রের সদস্যরা, সেনাবাহিনীর কমান্ডের কোন কোন অংশ বুঝতে পেরেছে বিদ্রোহী বা সরকারি সেনা কেউই সর্বাত্মক বিজয় পাবে না এ লড়াইয়ে। করিম বিতার বলেন, এই যখন অবস্থা তখন তারা সমঝোতার পন্থা খুঁজছে। এর অর্থ হলো- প্রেসিডেন্ট আসাদের বিদায় হলেও যেন তারা সেই সঙ্গে ক্ষমতা থেকে ধুয়ে মুছে না যান সেই পথ ঠিক রাখা। দামেস্কপন্থি লেবাননের একটি পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক আল শারা বলেছেন, লড়াই অবসানের জন্য তিনি এখন সমঝোতার পক্ষে। প্রেসিডেন্ট বিদ্রোহীদের ওপর যে দমননীতি চালাচ্ছেন তাতে এই লড়াইয়ের সমাধান মিলবে না। তবে রাজনৈতিক সংলাপ হলেও প্রেসিডেন্ট আসাদ চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে চাপ দিয়ে যাবেন।
No comments