সিরিয়ার অস্ত্র নিয়ে উদ্বেগ by রোকেয়া রহমান
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের প্রায় দুই বছর হতে চলেছে। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ শুরু হওয়া বাশারবিরোধী আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যে ঝরে গেছে বহু প্রাণ। তবে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এবার হয়তো অবসান হতে যাচ্ছে সিরীয় সংঘাতের।
অনেক উত্থান-পতনের পর দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা এখন বিরোধী মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে। তাঁদের নজর এখন রাজধানী দামেস্কের ওপর। দামেস্ক অবশ্য ইতিমধ্যেই যুদ্ধের শিকার হয়েছে। গত রোববার যুদ্ধজনিত কারণেই রাজধানীর বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় লাখদার ব্রাহিমি লেবানন থেকে সিরিয়া পৌঁছান সড়কপথে।
এই প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত পাশ্চাত্যের নেতারা। তাঁরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন সিরিয়ার কথিত গণবিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্রগুলো নিয়ে। এসব রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য কোনো আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেনি পশ্চিমা দেশগুলো। মার্কিন কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এসব রাসায়নিক অস্ত্র অবিলম্বে সুরক্ষিত করা না গেলে তা মার্কিনবিরোধী মুসলিম চরমপন্থী বা অন্য কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাতে পড়তে পারে।
সরকার ও বিরোধী বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যেই চলছে কূটনৈতিক উদ্যোগ। আন্তর্জাতিক শান্তিদূত লাখদার ব্রাহিমি সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশারের সঙ্গে গত সোমবারই আলোচনা করেছেন। তবে ‘ভবিষ্যতে করণীয় অনেক পদক্ষেপ’ নিয়ে কথা হয়েছে, এ ছাড়া কিছুই বলেননি ব্রাহিমি। অন্যদিকে সরকারি বার্তা সংস্থা বলেছে, সিরিয়ার জনগণের স্বার্থে গৃহীত যেকোনো ব্যবস্থা, যা দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখবে প্রেসিডেন্ট বাশার তাঁর পক্ষে থাকবেন। অর্থাৎ স্পষ্ট করেই বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপবিরোধী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন সিরীয় নেতা। তাঁর এসব কথা হস্তক্ষেপ ঠেকিয়ে রাখতে কতটা সফল হবে, বলা মুশকিল। কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্রমেই অধৈর্য হয়ে পড়ছে। গত আগস্টে জাতিসংঘ-আরব লিগের যৌথ দূত নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে লাখদার ব্রাহিমি এ নিয়ে তৃতীয়বার দামেস্ক গেলেন। তবে শান্তি-প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো অগ্রগতি করতে সক্ষম হননি তিনি। নতুন আর কী করতে পারবেন, তা-ও স্পষ্ট নয়।
এই প্রেক্ষাপটে মরিয়া হয়ে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা বাড়ছে পশ্চিমা রাজধানীগুলোতে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেস সদস্য মাইক রজার্স উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সিরিয়ার কাছে খুবই বিপজ্জনক মজুদ আছে। এর মধ্যে কিছু এমনভাবে রাখা হয়েছে, যাতে তা মুহূর্তের নোটিশে মোতায়েন করা সম্ভব হয়। সিরিয়ার এসব মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র শেষ পর্যন্ত ইরাকের কথিত গণবিধ্বংসী অস্ত্রের মতো ভিত্তিহীন প্রমাণ হয় কি না, সময়ই তা বলতে পারে। তবে এ মুহূর্তে পশ্চিমী দেশগুলো খুবই উদ্বিগ্ন।
ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এই ধুয়া তুলে ২০০৩ সালে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী ইরাকে হামলা চালায়। শেষ পর্যন্ত সেই অস্ত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইরাকের সঙ্গে সিরিয়ার তফাতটা হচ্ছে সাদ্দাম হোসেন গণবিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার না করলেও বাশার আল-আসাদ তাঁদের কাছে তা আছে বলে স্বীকার করেছেন। বাশার অবশ্য বলেছেন, ওই অস্ত্র কখনোই তাঁর নিজ জনগণের ওপর ব্যবহার করা হবে না।
ইরাক ও আফগানিস্তানের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে পাশ্চাত্য সিরিয়ায় সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করে আসছে। গাদ্দাফিকে হটাতে একমত হলেও লিবিয়ায় পশ্চিমা হস্তক্ষেপ মূলত বিমান থেকে চালানো হামলাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু একই সঙ্গে পাশ্চাত্য সিরিয়ার রাসায়নিকসহ বিপজ্জনক অস্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না।
মার্কিন কংগ্রেসম্যান মাইক রজার্স বলেছেন, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা যদি না করা হয়, তাহলে তা গোটা অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এসব অস্ত্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর হাতে পড়তে পারে।
রজার্স বলেন, ‘আমি মনে করি, আরব লিগ, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের মিত্রদের ওই পরিকল্পনা তৈরিতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে। এই পরিকল্পনা যদি আমরা না করতে পারি, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীলতার মুখে পড়বে।’
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের একটি কারণ হচ্ছে সম্প্রতি মার্কিন সরকার কর্তৃক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় নাম ওঠা সংগঠন জাভাত আল-নুসরা সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের কাছে শেখ সুলেইমান সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ওই ঘাঁটিতে রাসায়নিক অস্ত্রের ওপর গবেষণা চালানো হতো। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাভাত আল-নুসরা এখন আলেপ্পোর কাছে সাফিরাহ নামে আরেকটি ঘাঁটি দখলের পথে। সেখানে গোলাবারুদ তৈরি করা হয়।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক মেজর জেনারেল আদনান সিলু এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিপজ্জনক মাস্টার্ড গ্যাসের প্রধান ভান্ডারগুলো কয়েক হাজার সিরীয় সেনা পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু সেগুলো দখল করা অসম্ভব কিছু নয়। আসাদবিরোধী জোট ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বা কোনো ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠী এসব রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডার যেকোনো সময় দখল করে ফেলতে পারে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা সম্প্রতি জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি নৈরাজ্যকর হয়ে ওঠায় তাঁরা তাঁদের পরিকল্পনা হালনাগাদ করেছেন। রাসায়নিক অস্ত্র আছে, এমন সব স্থাপনার ওপর নজর রাখতে তাঁরা ইসরায়েল, জর্ডান ও ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
সিএনএন বলছে, মার্কিন সরকার এবং তার কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশ রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডারের ওপর নজরদারি করা এবং তা নিরাপদ রাখার জন্য সিরীয় বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ দিতে বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাড়া করেছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
দেশের পরিস্থিতির অবনতিতে সিরিয়ার জনগণ চিন্তিত হলেও তাদের বেশির ভাগ এখনো চায় না পশ্চিমারা তাদের বিষয়ে নাক গলাক। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিরীয় সাংবাদিক মালিক আবদেহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার বিরোধীদের অস্ত্র সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আর এ কারণে বিরোধীরা মনে করে, আসাদের পতন হওয়ার পর সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর নৈতিক অধিকার পশ্চিমাদের নেই।
এই প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত পাশ্চাত্যের নেতারা। তাঁরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন সিরিয়ার কথিত গণবিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্রগুলো নিয়ে। এসব রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য কোনো আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেনি পশ্চিমা দেশগুলো। মার্কিন কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এসব রাসায়নিক অস্ত্র অবিলম্বে সুরক্ষিত করা না গেলে তা মার্কিনবিরোধী মুসলিম চরমপন্থী বা অন্য কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাতে পড়তে পারে।
সরকার ও বিরোধী বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যেই চলছে কূটনৈতিক উদ্যোগ। আন্তর্জাতিক শান্তিদূত লাখদার ব্রাহিমি সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশারের সঙ্গে গত সোমবারই আলোচনা করেছেন। তবে ‘ভবিষ্যতে করণীয় অনেক পদক্ষেপ’ নিয়ে কথা হয়েছে, এ ছাড়া কিছুই বলেননি ব্রাহিমি। অন্যদিকে সরকারি বার্তা সংস্থা বলেছে, সিরিয়ার জনগণের স্বার্থে গৃহীত যেকোনো ব্যবস্থা, যা দেশটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখবে প্রেসিডেন্ট বাশার তাঁর পক্ষে থাকবেন। অর্থাৎ স্পষ্ট করেই বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপবিরোধী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন সিরীয় নেতা। তাঁর এসব কথা হস্তক্ষেপ ঠেকিয়ে রাখতে কতটা সফল হবে, বলা মুশকিল। কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্রমেই অধৈর্য হয়ে পড়ছে। গত আগস্টে জাতিসংঘ-আরব লিগের যৌথ দূত নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে লাখদার ব্রাহিমি এ নিয়ে তৃতীয়বার দামেস্ক গেলেন। তবে শান্তি-প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো অগ্রগতি করতে সক্ষম হননি তিনি। নতুন আর কী করতে পারবেন, তা-ও স্পষ্ট নয়।
এই প্রেক্ষাপটে মরিয়া হয়ে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা বাড়ছে পশ্চিমা রাজধানীগুলোতে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেস সদস্য মাইক রজার্স উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সিরিয়ার কাছে খুবই বিপজ্জনক মজুদ আছে। এর মধ্যে কিছু এমনভাবে রাখা হয়েছে, যাতে তা মুহূর্তের নোটিশে মোতায়েন করা সম্ভব হয়। সিরিয়ার এসব মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র শেষ পর্যন্ত ইরাকের কথিত গণবিধ্বংসী অস্ত্রের মতো ভিত্তিহীন প্রমাণ হয় কি না, সময়ই তা বলতে পারে। তবে এ মুহূর্তে পশ্চিমী দেশগুলো খুবই উদ্বিগ্ন।
ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এই ধুয়া তুলে ২০০৩ সালে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী ইরাকে হামলা চালায়। শেষ পর্যন্ত সেই অস্ত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইরাকের সঙ্গে সিরিয়ার তফাতটা হচ্ছে সাদ্দাম হোসেন গণবিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার না করলেও বাশার আল-আসাদ তাঁদের কাছে তা আছে বলে স্বীকার করেছেন। বাশার অবশ্য বলেছেন, ওই অস্ত্র কখনোই তাঁর নিজ জনগণের ওপর ব্যবহার করা হবে না।
ইরাক ও আফগানিস্তানের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে পাশ্চাত্য সিরিয়ায় সম্ভাব্য হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করে আসছে। গাদ্দাফিকে হটাতে একমত হলেও লিবিয়ায় পশ্চিমা হস্তক্ষেপ মূলত বিমান থেকে চালানো হামলাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু একই সঙ্গে পাশ্চাত্য সিরিয়ার রাসায়নিকসহ বিপজ্জনক অস্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগও মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছে না।
মার্কিন কংগ্রেসম্যান মাইক রজার্স বলেছেন, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা যদি না করা হয়, তাহলে তা গোটা অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এসব অস্ত্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর হাতে পড়তে পারে।
রজার্স বলেন, ‘আমি মনে করি, আরব লিগ, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের মিত্রদের ওই পরিকল্পনা তৈরিতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে। এই পরিকল্পনা যদি আমরা না করতে পারি, তাহলে গোটা মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীলতার মুখে পড়বে।’
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের একটি কারণ হচ্ছে সম্প্রতি মার্কিন সরকার কর্তৃক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় নাম ওঠা সংগঠন জাভাত আল-নুসরা সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের কাছে শেখ সুলেইমান সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ওই ঘাঁটিতে রাসায়নিক অস্ত্রের ওপর গবেষণা চালানো হতো। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাভাত আল-নুসরা এখন আলেপ্পোর কাছে সাফিরাহ নামে আরেকটি ঘাঁটি দখলের পথে। সেখানে গোলাবারুদ তৈরি করা হয়।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক মেজর জেনারেল আদনান সিলু এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিপজ্জনক মাস্টার্ড গ্যাসের প্রধান ভান্ডারগুলো কয়েক হাজার সিরীয় সেনা পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু সেগুলো দখল করা অসম্ভব কিছু নয়। আসাদবিরোধী জোট ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বা কোনো ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠী এসব রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডার যেকোনো সময় দখল করে ফেলতে পারে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা সম্প্রতি জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখার ব্যাপারে একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি নৈরাজ্যকর হয়ে ওঠায় তাঁরা তাঁদের পরিকল্পনা হালনাগাদ করেছেন। রাসায়নিক অস্ত্র আছে, এমন সব স্থাপনার ওপর নজর রাখতে তাঁরা ইসরায়েল, জর্ডান ও ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
সিএনএন বলছে, মার্কিন সরকার এবং তার কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশ রাসায়নিক অস্ত্রের ভান্ডারের ওপর নজরদারি করা এবং তা নিরাপদ রাখার জন্য সিরীয় বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ দিতে বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাড়া করেছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
দেশের পরিস্থিতির অবনতিতে সিরিয়ার জনগণ চিন্তিত হলেও তাদের বেশির ভাগ এখনো চায় না পশ্চিমারা তাদের বিষয়ে নাক গলাক। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিরীয় সাংবাদিক মালিক আবদেহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার বিরোধীদের অস্ত্র সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আর এ কারণে বিরোধীরা মনে করে, আসাদের পতন হওয়ার পর সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর নৈতিক অধিকার পশ্চিমাদের নেই।
No comments