চট্টগ্রাম টেস্টের জয়ে রচিত হলো নতুন ক্রিকেট ইতিহাস by ইশতিয়াক পারভেজ
সংশয়ে শুরু সংহারে শেষ। বিশাল হারে শুরু হওয়া বছরের সমাপ্তি হলো অসাধারণ জয়ে। ‘মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে’- কবির কথা মতোই হারের পর হারে জর্জরিত বাংলাদেশের ক্রিকেটে উদিত হলো নতুন সূর্য। ওয়ানডে বা টি-২০ নয়, অসাধারণ এক টেস্ট সিরিজ খেলে ক্রিকেটপ্রেমীদের সব দুঃখ বেদনা ভুলিয়ে দিলেন মুশফিক বাহিনী। চট্টগ্রাম টেস্টের জয়ে রচিত হলো নতুন ক্রিকেট ইতিহাস। সিরিজে একটি, দু’টি করে তিনটি টেস্টেই জিম্বাবুয়েকে হারালো বাংলাদেশ। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ২৬২ রানে গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশে জয়ী হয় ১৮৬ রানে। অথচ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে এই সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জের ছিল। জিততে না পারলে র্যাঙ্কিংয়ে যেমন নিচে থাকতে হতো তেমনি লজ্জার সীমা থাকতো না। অবশেষে ফল, বাংলাদেশ ৩ : জিম্বাবুয়ে ০।
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অভিষেকের দেড় দশকে এমন ব্যবধানে জয়ের নজির একেবারেই বিরল। টেস্ট ক্রিকেটে সদ্য হাঁটি হাঁটি করে ১৫ বছরে পা রেখেছে টাইগাররা। প্রথম ১৪ বছরে সিরিজের ৩ টেস্টেই জয়ের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। ঠিক ১২৮ বছর আগে ইংল্যান্ড এই কীর্তি গড়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে। এর আগে ২০০৯ সালে ২ ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টে ঢাকায় ৩ উইকেট ও দ্বিতীয়টি খুলনায় ১৬২ রানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে নিয়েছিল আগেই। এরপর ছিল হোয়াইট ওয়াশের পালা। আর সেটাও বীরদর্পেই সেরে নিলো মুশফিকুর রহীম বাহিনী। গতকাল শেষ দিনে পেসার শফিউল ইসলাম শেষ দুটি উইকেট তুলে নিলে বঙ্গোপসাগরের ঢেউ যেন জয়ের উল্লাস হয়ে আছড়ে পড়ে সাগরিকা স্টেডিয়ামে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথম ইনিংসে তামিম-ইমরুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৫০৩ রান। জবাব দিতে নেমে স্পিনে নাকাল জিম্বাবুয়ে। ১২৯ রান পিছয়ে থেকে তাদের ইনিংস থেমে যায় ৩৭৪ রানে। এরপর টাইগারা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া সর্বোচ্চ ৪৪৮ রানের লিড তাড়া করতে নেমে খেই হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়। চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের নায়ক হিসেবে ম্যাচ সেরা হন মুমিনুল হক। অন্যদিকে সাকিব আল হাসানের হন সিরিজসেরা। আর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ারের পুরস্কার পান তাইজুল ইসলাম। সিরিজে বাংলাদেশের স্পিনাররাই ছিলেন রুদ্রমূর্তিতে। ঘূর্ণি জাদুতে ৩৯টি উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব, তাইজুল, জুবায়ের, মাহমুদুল্লাহ ও শুভাগত হোম। গতকাল শেষ টেস্টের ৫ম দিনেও স্পিনারই জয়ের ভিত গড়ে দেন। সিরিজে ব্যাট-বল হাতে আড়ালে থাকা শুভাগত দিনের প্রথম উইকেট উপহার দেন। চতুর্থ দিন জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৭১ রান। অপরাজিত থাকা সিকান্দার রাজা ৪৩ ও মাসাকাদজা ২৬ রানে দিন শুরু করেন। স্কোর বোর্ডে ২৬টি রান যোগও করে ফেলেন এই দু’জন। কিন্তু রানের জন্য বেশ তাড়া ছিল মাসাকাদজার। শুভাগত হোমকে পেয়ে একটু মারমুখীই হতে চেয়েছিলেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ধরা পড়েন সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী মাসাকাদজা। ৯১ বলে করেন ৩৮ রান। ভেঙ্গে যায় ৯৩ রানের জুটি। মাসাকাদজা আউট হলেও সিকান্দার রাজা তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি। অধিনায়ককে নিয়ে আবারও লড়াই শুরু করেন রাজা। কিন্তু ৭৫ বলে ৬৫ রান করে শুভাগতকেই উপহার দেন দ্বিতীয় উইকেট। অফস্পিনের ভেলকিতে সুইপ করতে গিয়ে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন মিড উইকেটে। এখানেই শুরু জিম্বাবুয়ের পরাজয়ের গল্প। এমনিতেই তাদের জিততে হলে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড ভাঙতে হতো। সেই অসম্ভবকে সম্ভব শেষ পর্যন্ত করতে পারেনি তারা। রাজার বিদায়ের পর ২৪ রান করে অধিনায়কও রণে ভঙ্গ দেন। তাকে প্রথম ইনিংসের মতো সাজঘরের পথ দেখান জুবায়ের। শুধু এক প্রান্ত আগলে রাখেন রেগিস চাকাভা। অন্য প্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিল। প্রথম ইনিংসের মতো চিগুম্বাবুরা আবারও সুযোগ পান চাকাভার সঙ্গে জুটি গড়ার। কিন্তু তাকে মাত্র ৪ রানেই ফিরিয়ে দেন জুবায়ের। ক্রেইগ আরভিন ১ রানের সময় আউটের আবেদন হলেও রিভিউতে বেঁচে যান। তবে করতে পারেন মাত্র ১৬টি রান। মাহমুদুল্লাহকে প্রথম উইকেট উপহার দিয়ে তিনি সাজঘওে ফেরেন। তারপর ২ রান করা মুতাম্বিকে দাঁড়াতেই দেননি তাইজুল। স্পিনারদের সাফল্যে যেন চুপ করে বসে থাকতে পারছিলেন না চতুর্থ দিন দলকে প্রথম উইকেট উপহার দেয়া পেসার রুবেল। নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান পানিয়াঙ্গারাকে। রুবেলের পর প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট নেয়া শফিউল জিম্বাবুয়ের ইনিংসে শেষ পেরেক ঠুকেন। ৮৩.৪ ও ৮৩.৬ ওভারের সময় সিঙ্গি মাসাকাদজা ও মুসায়ংগুয়ে শূন্য হাতেই ফেরান তিনি। ৭টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ১৮১ বলে ৮৯ রান করে আপরাজিত থাকেন চাকাভা। তবে ৩৮.৩ ওভারে সময়ই তিনি আউট হতে পারতেন। কিন্তু রিভিউ সিস্টেম তাকে বাঁচিয়ে দেয়। অন্যদিকে প্রতম দুই টেস্টে ১৭ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের আতঙ্ক হয়ে ওঠা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দুই ইনিংস মিলিয়ে পান মাত্র ১টি উইকেট। সেই সঙ্গে ২৫০ রান করলেও ২০টি তিন ম্যাচের সিরিজে ২০টি উইকেট তুলে নিতে না পারায় তার বিরল রেকর্ডটিও হলো না। গোটা সিরিজে তিনি নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি চট্টগ্রামেই শুরু হবে ২১শে নভেম্বর। তার আগে ১৯শে নভেম্বর বিসিবি একাদশের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে জিম্বাবুয়ে দল।
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অভিষেকের দেড় দশকে এমন ব্যবধানে জয়ের নজির একেবারেই বিরল। টেস্ট ক্রিকেটে সদ্য হাঁটি হাঁটি করে ১৫ বছরে পা রেখেছে টাইগাররা। প্রথম ১৪ বছরে সিরিজের ৩ টেস্টেই জয়ের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। ঠিক ১২৮ বছর আগে ইংল্যান্ড এই কীর্তি গড়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে। এর আগে ২০০৯ সালে ২ ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম টেস্টে ঢাকায় ৩ উইকেট ও দ্বিতীয়টি খুলনায় ১৬২ রানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে নিয়েছিল আগেই। এরপর ছিল হোয়াইট ওয়াশের পালা। আর সেটাও বীরদর্পেই সেরে নিলো মুশফিকুর রহীম বাহিনী। গতকাল শেষ দিনে পেসার শফিউল ইসলাম শেষ দুটি উইকেট তুলে নিলে বঙ্গোপসাগরের ঢেউ যেন জয়ের উল্লাস হয়ে আছড়ে পড়ে সাগরিকা স্টেডিয়ামে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথম ইনিংসে তামিম-ইমরুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৫০৩ রান। জবাব দিতে নেমে স্পিনে নাকাল জিম্বাবুয়ে। ১২৯ রান পিছয়ে থেকে তাদের ইনিংস থেমে যায় ৩৭৪ রানে। এরপর টাইগারা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া সর্বোচ্চ ৪৪৮ রানের লিড তাড়া করতে নেমে খেই হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়। চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের নায়ক হিসেবে ম্যাচ সেরা হন মুমিনুল হক। অন্যদিকে সাকিব আল হাসানের হন সিরিজসেরা। আর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ারের পুরস্কার পান তাইজুল ইসলাম। সিরিজে বাংলাদেশের স্পিনাররাই ছিলেন রুদ্রমূর্তিতে। ঘূর্ণি জাদুতে ৩৯টি উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব, তাইজুল, জুবায়ের, মাহমুদুল্লাহ ও শুভাগত হোম। গতকাল শেষ টেস্টের ৫ম দিনেও স্পিনারই জয়ের ভিত গড়ে দেন। সিরিজে ব্যাট-বল হাতে আড়ালে থাকা শুভাগত দিনের প্রথম উইকেট উপহার দেন। চতুর্থ দিন জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৭১ রান। অপরাজিত থাকা সিকান্দার রাজা ৪৩ ও মাসাকাদজা ২৬ রানে দিন শুরু করেন। স্কোর বোর্ডে ২৬টি রান যোগও করে ফেলেন এই দু’জন। কিন্তু রানের জন্য বেশ তাড়া ছিল মাসাকাদজার। শুভাগত হোমকে পেয়ে একটু মারমুখীই হতে চেয়েছিলেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ধরা পড়েন সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী মাসাকাদজা। ৯১ বলে করেন ৩৮ রান। ভেঙ্গে যায় ৯৩ রানের জুটি। মাসাকাদজা আউট হলেও সিকান্দার রাজা তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি। অধিনায়ককে নিয়ে আবারও লড়াই শুরু করেন রাজা। কিন্তু ৭৫ বলে ৬৫ রান করে শুভাগতকেই উপহার দেন দ্বিতীয় উইকেট। অফস্পিনের ভেলকিতে সুইপ করতে গিয়ে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন মিড উইকেটে। এখানেই শুরু জিম্বাবুয়ের পরাজয়ের গল্প। এমনিতেই তাদের জিততে হলে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড ভাঙতে হতো। সেই অসম্ভবকে সম্ভব শেষ পর্যন্ত করতে পারেনি তারা। রাজার বিদায়ের পর ২৪ রান করে অধিনায়কও রণে ভঙ্গ দেন। তাকে প্রথম ইনিংসের মতো সাজঘরের পথ দেখান জুবায়ের। শুধু এক প্রান্ত আগলে রাখেন রেগিস চাকাভা। অন্য প্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিল। প্রথম ইনিংসের মতো চিগুম্বাবুরা আবারও সুযোগ পান চাকাভার সঙ্গে জুটি গড়ার। কিন্তু তাকে মাত্র ৪ রানেই ফিরিয়ে দেন জুবায়ের। ক্রেইগ আরভিন ১ রানের সময় আউটের আবেদন হলেও রিভিউতে বেঁচে যান। তবে করতে পারেন মাত্র ১৬টি রান। মাহমুদুল্লাহকে প্রথম উইকেট উপহার দিয়ে তিনি সাজঘওে ফেরেন। তারপর ২ রান করা মুতাম্বিকে দাঁড়াতেই দেননি তাইজুল। স্পিনারদের সাফল্যে যেন চুপ করে বসে থাকতে পারছিলেন না চতুর্থ দিন দলকে প্রথম উইকেট উপহার দেয়া পেসার রুবেল। নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান পানিয়াঙ্গারাকে। রুবেলের পর প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট নেয়া শফিউল জিম্বাবুয়ের ইনিংসে শেষ পেরেক ঠুকেন। ৮৩.৪ ও ৮৩.৬ ওভারের সময় সিঙ্গি মাসাকাদজা ও মুসায়ংগুয়ে শূন্য হাতেই ফেরান তিনি। ৭টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ১৮১ বলে ৮৯ রান করে আপরাজিত থাকেন চাকাভা। তবে ৩৮.৩ ওভারে সময়ই তিনি আউট হতে পারতেন। কিন্তু রিভিউ সিস্টেম তাকে বাঁচিয়ে দেয়। অন্যদিকে প্রতম দুই টেস্টে ১৭ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের আতঙ্ক হয়ে ওঠা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান দুই ইনিংস মিলিয়ে পান মাত্র ১টি উইকেট। সেই সঙ্গে ২৫০ রান করলেও ২০টি তিন ম্যাচের সিরিজে ২০টি উইকেট তুলে নিতে না পারায় তার বিরল রেকর্ডটিও হলো না। গোটা সিরিজে তিনি নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি চট্টগ্রামেই শুরু হবে ২১শে নভেম্বর। তার আগে ১৯শে নভেম্বর বিসিবি একাদশের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে জিম্বাবুয়ে দল।
No comments