উখিয়া রেজুখাল- একটি ব্রিজের জন্য...
উখিয়া উপজেলার রেজুখালের ওপর ব্রিজ না থাকায় পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার হাজারো গ্রামবাসীকে নিত্যদুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ ব্রিজের কারণে প্রতি বর্ষার সময় ৪ মাস ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ থাকে। পণ্যসামগ্রী বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। এমনকি বিজিবি সদস্যদের বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে রেজুখাল পার হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হয়।
সরজমিন জানা গেছে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওয়ালিদং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সৃষ্ট এ রেজুখালটি হাতিমোরা হয়ে ডেইলপাড়া-চাকবৈঠার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। উপজেলার রাজাপালং ও রত্নাপালং ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে জালিয়াপালং ইউনিয়ন হয়ে সরাসরি এটি ইনানী হয়ে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় এ খালে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা হয়ে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর সওদাগর জানায়, খালের পূর্বপাড়ের রাজাপালং ইউনিয়নের ৭/৮টি গ্রামসহ বৃহত্তর নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার লোকজন রেজুখাল দিয়ে পারাপার হয়ে উখিয়া সদরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। শুষ্ক মওসুমে পায়ে হেঁটে খাল পার হওয়া গেলেও বর্ষা মওসুমে ৪ মাস এলাকার লোকজনকে পানিবন্দি থাকতে হয়।
হাতিমোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র এই চার মাস পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে খাল পরিপূর্ণ থাকে। এতে পূর্বাঞ্চলীয় জনপদের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে পারে না। যে কারণে ওই ৪ মাস ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম থাকে। রেজুপাড়ার বাসিন্দা তোয়াই চাচিং চাকমা জানায়, পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ তরিতরকারি ও শাকসবজি শুষ্ক মওসুমে রেজুখাল পার হয় বাজারজাত করা সম্ভব হলেও বর্ষা মওসুমে ঝুঁকি নিয়ে খাল পার হয়ে পণ্যসামগ্রী বাজারজাত করতে হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুন্সি আলম মেম্বার জানায়, হাতিমোরা খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করা হলেও কোন কাজ হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউপি ও জাতীয় নির্বাচন এলে স্থানীয় ভোটারের দাবির প্রেক্ষিতে প্রার্থীরা রেজুখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও ভোটের পর তাদের আর দেখা মিলে না। রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, বহু আবেদন নিবেদনের পরেও ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এ সেতু দিয়ে বর্তমানে মানুষ চলাচল করলেও তার স্থায়িত্ব নেই। উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ জানান, রেজুখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
No comments