‘জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ছিলেন আপাদমস্তক দলনিরপেক্ষ সাংবাদিক’ -স্মরণসভায় বক্তারা
জগ্লুল
আহ্মেদ চৌধূরী ছিলেন আপাদমস্তক দলনিরপেক্ষ সাংবাদিক। তার নামের পেছনে কোন
রাজনৈতিক দলের সিল ছিল না। তরুণ সাংবাদিকদের কাছে তিনি ছিলেন আদর্শ। শুধু
দেশে নয়, বিদেশেও সাংবাদিকদের কাছে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। সাংবাদিকতার
দুঃসময়ে তিনি কিছু দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। নিতে নয়, দিতে শিখো- এই মন্ত্র
দিয়ে মানুষ করেছেন নিজের ছেলেমেয়েকেও। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে হবিগঞ্জ
অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত প্রয়াত সাংবাদিক জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর স্মরণসভায়
দেশের বিশিষ্ট বক্তারা এসব কথা বলেন। এই কীর্তিমান সাংবাদিক আরও কিছুদিন
বেঁচে থাকলে জাতি ও সাংবাদিক সমাজ অনেক উপকৃত হতো বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
সহজ-সরল ও প্রথিতযশা এই সাংবাদিকের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড আখ্যায়িত করে
দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। জগ্লুল আহ্মেদের
স্মৃতিচারণ করে এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, তিনি অত্যন্ত বিবেকবান
মানুষ ছিলেন। সবসময় মানুষের গুণগান বেশি বলতেন। খারাপ দিকগুলো বলতেন না।
তিনি বলেন, জগ্লুল আহ্মেদের সাংবাদিকতার বিশিষ্টতা নিয়ে বলার কিছু নেই।
তিনি দেশে-বিদেশে অনেক জায়গায় কাজ করেছেন। সাংবাদিকতার অনেকটা সময় ঢাকা
ক্লাবে কাটিয়েছেন। মৃত্যুর আগের দিন ঢাকা ক্লাবে তার সঙ্গে আমার দেখা। আমি
ক্লাবে ঢুকে দেখি- একটা টেবিলে চশমা আর মোবাইল ফোন পড়ে আছে। দূরে বসে
পত্রিকা পড়ছেন জগ্লুল আহ্মেদ। আমি বসতে পারি জিজ্ঞেস করতেই হ্যাঁ সূচক
জবাব দিয়ে তিনি বিনয়ের সঙ্গে বললেন, তাহলে আমি জিনিসগুলো সরিয়ে নিই। আমি
তাকে বললাম- সরানোর দরকার নেই। এটাই ছিল জগ্লুল আহ্মেদের সঙ্গে আমার শেষ
কথা। আল্লাহ্ তাকে বেহেশ্ত নসিব করুন। প্রথিতযশা এই সাংবাদিকের
স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোহবান চৌধুরী বলেন,
জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী বয়সে আমার এক বছরের ছোট। আমরা সম্পর্কে নানা-নাতি।
আমরা দু’জনই কূটনৈতিক সাংবাদিকতা করতাম। সাংবাদিকতার ৪ যুগ একসঙ্গে
কাটিয়েছি। আমরা যখন সাংবাদিকতা শুরু করি তখন হাতেগোনা কয়েকটি সংবাদপত্র
ছিল। কিন্তু তিনি মেধা দিয়ে নিজেকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছেন তাকে মানুষ
সারা জীবন স্মরণ করবে। তিনি বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ বাংলা-ইংরেজি দুই ভাষায়
সমানভাবে লিখতে পারতেন। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণে তার মতো
দক্ষতা খুব কম সাংবাদিকেরই আছে।
সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর স্মরণসভায় আমাকে কথা বলতে হবে- এটা আমি কখনও ভাবিনি। তার নাম জগ্লুল আহ্মেদ ছিল না। তার নাম ছিল সালেহ আহমেদ। তিনি যখন সাংবাদিকতা শুরু করেন তখন একদিন আমার কাছে এসে বললেন- আমরা একই এলাকার লোক একই নাম হলে আপনি বিব্রত হবেন। তাই আমার নাম সালেহ আহমেদ পরিবর্তন করে জগ্লুল আহ্মেদ করেছি। নাম নিয়ে তিনি আমাকে বিব্রত হতে না দিলেও তিনি নিজে অনেক জায়গায় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ছিলেন আপাদমস্তক দল-নিরপেক্ষ সাংবাদিক। কেউ তাকে কোন দলের সিল দিতে পারেনি। তার মৃত্যুর পর তার নামের পিছনে অন্য কোন বিশেষণ দেখিনি। রক্তের গ্রুপ ‘এ’ না ‘বি’ তা কেউ বলেনি। তিনি বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীকে আমরা আর ফিরে পাবো না। তবে তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন অনেক দিক-নির্দেশনা। তিনি বলেন, আমি মনে করি, সাংবাদিকদের বন্ধু থাকতে পারে কিন্তু কোন দল থাকতে পারে না। জগ্লুল আহ্মেদের কর্মদক্ষতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি যেভাবে লিখতেন সেভাবে আমাদের দেশে দুই-একজন সাংবাদিক পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মাহবুব আলী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদের পিতার সঙ্গে আমার পিতার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে তিনি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। বলেছিলেন- আমি জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী বলছি, আমাকে চিনতে পারছেন। ভুলে যাবেন না আপনার বাবার সঙ্গে আমার বাবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা। হয়তো মৃত্যুর আগে তিনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, পিতার আদর্শ অনুসরণ করে কিভাবে পথ চলতে হবে। জগ্লুল আহমেদের স্মৃতিচারণ করে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জালাল আহমেদ বলেন, তার সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৭৭ সাল থেকে। দেখা হলেই হবিগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় ‘বালা আছইননি’ বলে জিজ্ঞেস করতেন। তিনি নিরহঙ্কার মানুষ ছিলেন এবং অত্যন্ত সহজ-সরলভাবে জীবনযাপন করতেন। আল্লাহ্ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিক জগতের উজ্জ্বলতম নাম হলো জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। আমরা সম্পর্কে মামা-ভাগিনা। আমি তাকে মামা বলে সম্বোধন করলেও তিনিও আমাকে মামা ডাকতেন। সাংবাদিকতায় তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর বোন সেলিনা চৌধুরী বলেন, ভাই প্রতিদিনই আমার বাসায় আসতেন। নিজের ক্ষতি করে হলেও অন্যের জন্য কিছু করার নির্দেশনা দিতেন। প্রতিদিনই ভাইয়ের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতাম- কি দায়িত্ব দেবেন। এখন আর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। আপনারা সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।
জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর একমাত্র কন্যা অন্তরা আহ্মেদ চৌধূরী বলেন, বাবা সবসময় আমাদের একটা কথা শিখিয়েছেন- নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্য করো। অন্যকে কিভাবে সাহায্য করা যায়, এতিমদের কিভাবে সহায়তা করা যায়- সেই চিন্তা করো। আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
হবিগঞ্জ এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সিএম দিলওয়ার রানার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ ফখরুল হাসান মুরাদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন হাবিবুর রহমান। এছাড়া জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ভাই রোকনুজ্জামান চৌধুরীসহ তার আত্মীয়-স্বজন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের আগস্টে হবিগঞ্জ পিয়াইম গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। ১৯৭০ সালে উইকলি পিপলস-এ আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রিকায়ও দায়িত্ব পালন করেছেন। টকশোতে দক্ষিণ এশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন তিনি। গত ২৯শে ডিসেম্বর রাজধানীর পান্থপথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন প্রথিতযশা এই সাংবাদিক।
সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর স্মরণসভায় আমাকে কথা বলতে হবে- এটা আমি কখনও ভাবিনি। তার নাম জগ্লুল আহ্মেদ ছিল না। তার নাম ছিল সালেহ আহমেদ। তিনি যখন সাংবাদিকতা শুরু করেন তখন একদিন আমার কাছে এসে বললেন- আমরা একই এলাকার লোক একই নাম হলে আপনি বিব্রত হবেন। তাই আমার নাম সালেহ আহমেদ পরিবর্তন করে জগ্লুল আহ্মেদ করেছি। নাম নিয়ে তিনি আমাকে বিব্রত হতে না দিলেও তিনি নিজে অনেক জায়গায় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ছিলেন আপাদমস্তক দল-নিরপেক্ষ সাংবাদিক। কেউ তাকে কোন দলের সিল দিতে পারেনি। তার মৃত্যুর পর তার নামের পিছনে অন্য কোন বিশেষণ দেখিনি। রক্তের গ্রুপ ‘এ’ না ‘বি’ তা কেউ বলেনি। তিনি বলেন, জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীকে আমরা আর ফিরে পাবো না। তবে তিনি আমাদের দিয়ে গেছেন অনেক দিক-নির্দেশনা। তিনি বলেন, আমি মনে করি, সাংবাদিকদের বন্ধু থাকতে পারে কিন্তু কোন দল থাকতে পারে না। জগ্লুল আহ্মেদের কর্মদক্ষতা তুলে ধরে তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি যেভাবে লিখতেন সেভাবে আমাদের দেশে দুই-একজন সাংবাদিক পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
হবিগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মাহবুব আলী বলেন, জগ্লুল আহ্মেদের পিতার সঙ্গে আমার পিতার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে তিনি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। বলেছিলেন- আমি জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী বলছি, আমাকে চিনতে পারছেন। ভুলে যাবেন না আপনার বাবার সঙ্গে আমার বাবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা। হয়তো মৃত্যুর আগে তিনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, পিতার আদর্শ অনুসরণ করে কিভাবে পথ চলতে হবে। জগ্লুল আহমেদের স্মৃতিচারণ করে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জালাল আহমেদ বলেন, তার সঙ্গে আমার পরিচয় ১৯৭৭ সাল থেকে। দেখা হলেই হবিগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় ‘বালা আছইননি’ বলে জিজ্ঞেস করতেন। তিনি নিরহঙ্কার মানুষ ছিলেন এবং অত্যন্ত সহজ-সরলভাবে জীবনযাপন করতেন। আল্লাহ্ তাকে জান্নাতবাসী করুন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিক জগতের উজ্জ্বলতম নাম হলো জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। আমরা সম্পর্কে মামা-ভাগিনা। আমি তাকে মামা বলে সম্বোধন করলেও তিনিও আমাকে মামা ডাকতেন। সাংবাদিকতায় তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর বোন সেলিনা চৌধুরী বলেন, ভাই প্রতিদিনই আমার বাসায় আসতেন। নিজের ক্ষতি করে হলেও অন্যের জন্য কিছু করার নির্দেশনা দিতেন। প্রতিদিনই ভাইয়ের নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতাম- কি দায়িত্ব দেবেন। এখন আর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। আপনারা সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।
জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর একমাত্র কন্যা অন্তরা আহ্মেদ চৌধূরী বলেন, বাবা সবসময় আমাদের একটা কথা শিখিয়েছেন- নিজের জন্য নয়, অন্যের জন্য করো। অন্যকে কিভাবে সাহায্য করা যায়, এতিমদের কিভাবে সহায়তা করা যায়- সেই চিন্তা করো। আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।
হবিগঞ্জ এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সিএম দিলওয়ার রানার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সৈয়দ ফখরুল হাসান মুরাদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরীর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন হাবিবুর রহমান। এছাড়া জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী ভাই রোকনুজ্জামান চৌধুরীসহ তার আত্মীয়-স্বজন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের আগস্টে হবিগঞ্জ পিয়াইম গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জগ্লুল আহ্মেদ চৌধূরী। ১৯৭০ সালে উইকলি পিপলস-এ আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রিকায়ও দায়িত্ব পালন করেছেন। টকশোতে দক্ষিণ এশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন তিনি। গত ২৯শে ডিসেম্বর রাজধানীর পান্থপথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন প্রথিতযশা এই সাংবাদিক।
No comments