উন্নয়ন-বাধার পাহাড় জয়ের গল্প by ফজলে হাসান আবেদ
ব্র্যাকের জন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের জন্মের নিবিড় সম্পর্ক। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ঠিক পরপর এ সংস্থা যখন যাত্রা শুরু করে, তখন বাংলাদেশ ছিল এক ধ্বংসস্তূপ। দেশে যতটুকু অবকাঠামো ছিল, তার প্রায় সবই নয় মাসের যুদ্ধে ভেঙেচুরে শেষ হয়ে গিয়েছিল। অর্থনীতির অবস্থাও ছিল সঙ্গিন। এ পটভূমিতে আমাদের কাজ শুরু করতে হয়। সামনে ছিল পাহাড়সমান বাধা।
মনে হতো এ পাহাড় বুঝি দুস্তর, পাড়ি দেওয়া অসম্ভব। কিন্তু তার পরও আমাদের মনে হয়েছে যে জাতি গঠনের সেই শুরুর সময় মানুষের ভেতরের প্রবল আশাবাদ এবং জনগণের টিকে থাকার আশ্চর্য ক্ষমতাকে যদি ঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে বাধার পাহাড়গুলো আমরা পাড়ি দিতে পারব। আমরা বুঝেছিলাম মানুষের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা সম্ভাবনার কথা যদি তাদের উপলব্ধি করতে সাহায্য করতে পারি, তবে জনগণ নিজেরাই তাদের ইতিহাস রচনা করবে, বাধার পাহাড় জয়ের গল্প তারা নিজেরাই লিখবে। গত ৪০ বছরে এ দেশের মানুষ সে গল্প বারবারই লিখেছে। মানব-উন্নয়নের প্রায় প্রতিটি প্রধান সূচকে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। আমি এখানে কেবল কয়েকটির কথা উল্লেখ করছি।
স্বাধীনতার সময় স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিটি সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল একেবারে নিচের দিকে। আজ এ ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি দক্ষিণ এশিয়া ও তার বাইরের অনেক দেশের জন্যই ঈর্ষার বিষয়। গত ৪০ বছরে আমাদের শিশুমৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে আর মাতৃমৃত্যুর হার লাখে ৮০০ থেকে কমে ২০০-এর নিচে এবং জন্মের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৪০ বছর থেকে বেড়ে ৬৫ বছরে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে জন্মহার, যা ১৯৭২ সালে ছিল ৬ দশমিক ৫, তা নেমে গেছে ২ দশমিক ৭-এ। এ কথা সত্যি, বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব একক কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়। তবে আমাদের গর্ব এই, এসব সাফল্য লাভে ব্র্যাক সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং উদ্যোগকে সব সময় সহায়তা জুগিয়েছে। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে খাওয়ার স্যালাইনের প্রচার ও প্রসার, বিপুলসংখ্যক ‘নগ্নপদ স্বাস্থ্যসেবাকর্মী’ বানানো থেকে শুরু করে মায়েদের জন্য নিরাপদ প্রসবস্থান তৈরি, যক্ষ্মারোগ মোকাবিলা থেকে শুরু করে পয়োনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা, মোটকথা জনস্বাস্থ্য বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ড দেশের স্বাস্থ্যবিষয়ে প্রতিটি অর্জনে গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
দেশের সাক্ষরতার হার গত ৪০ বছরে ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমরা পৃথিবীর সেই সব উন্নয়নশীল দেশের একটি, যারা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে নারী-পুরুষ সমতা অর্জন করতে পেরেছি। এটি জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের দ্বিতীয় লক্ষ্য। স্বাস্থ্যের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও দেশের সব ধরনের অগ্রগতিতে আমাদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি শিশু ব্র্যাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করেছে, যাদের ৬০ শতাংশেরও বেশি মেয়ে। এই শিক্ষার্থীদের একটা বিশাল অংশ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এবং পড়শোনায় গড়ে মূলধারার শিক্ষার্থীদের চেয়ে এগিয়ে আছে। ব্র্যাক আজ বিশ্বের বৃহত্তম উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এর আওতায় রয়েছে ৩০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৫ হাজার প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া রয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় তার দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করেছে। দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে উৎকর্ষের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্রুত সুনাম অর্জন করছে।
স্বাধীনতার সময় প্রচলিত ও অপ্রচলিত খাত মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ছিল দুই কোটি ২০ লাখ। গত চার দশকে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও শ্রমশক্তি বেড়েছে তিনগুণ। মজুরি শ্রমের বাজারে বিপুলসংখ্যক নারীর প্রবেশ শ্রমশক্তি বৃদ্ধির একটি বড় কারণ। ক্ষুদ্রঋণ, প্রশিক্ষণ ও সহায়ক উপকরণাদি এবং বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে আমরা লাখ লাখ গরিব মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করেছি। দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থান করতে গিয়ে ব্র্যাক বাংলাদেশে অনেক শিল্প স্থাপনে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ভিত্তি গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এসব শিল্পের মধ্যে রয়েছে হস্তশিল্প, হাঁস-মুরগি পালন, দুগ্ধজাতপণ্য, বীজ উৎপাদন ইত্যাদি।
আমরা যেখানেই গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টির অবকাশ দেখতে পেয়েছি, সেখানে উদ্যোগ নিতে পিছপা হইনি। আমাদের সামাজিক বাণিজ্য-উদ্যোগ ও বিনিয়োগ হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং লাখ লাখ গ্রামীণ উদ্যোক্তার জন্য বাজারসংযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এসব সামাজিক বাণিজ্য-উদ্যোগ ও বিনিয়োগ থেকে উদ্বৃত্ত এসেছে। ফলে দাতাদের ওপর ব্র্যাকের নির্ভরতাও কমেছে। এখন এ সংস্থার বার্ষিক বাজেট ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং তার ৩০ শতাংশেরও কম আসছে দাতাদের কাছ থেকে।
আজ থেকে ঠিক ১০ বছর আগে, ২০০২ সালে আমরা আফগানিস্তানে কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে এর আন্তর্জাতিক কর্মসূচির সূচনা করি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ যেমন ছিল, ২০০২ সালের আফগানিস্তানও ছিল ঠিক তেমনি; যুদ্ধবিধ্বস্ত, দেশ ও জাতি পুনর্গঠনের কাজে হাজারো চ্যালেঞ্জ। বাহাত্তরের বাংলাদেশের মতোই সে দেশেও লাখ লাখ শরণার্থী তালেবান সরকারের পতনের পর দেশে ফিরছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে একই অবস্থা আমরাও মোকাবিলা করেছি, আর সে অভিজ্ঞতাই আমাদের আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রেরণা জুগিয়েছে। আফগানিস্তানে আমাদের প্রাথমিক সাফল্য থেকে সাহস ও প্রত্যয় নিয়ে আমরা সুনামি-পরবর্তী শ্রীলঙ্কায় কাজ শুরু করি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে আফ্রিকার উগান্ডা ও তানজানিয়ায় কাজ শুরু করি। ব্র্যাক আজ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার নয়টি দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্ষুদ্রঋণ ও কৃষিক্ষেত্রে নিজস্ব উন্নয়ন মডেলের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আছে, কিন্তু সেই সব চ্যালেঞ্জ ডিঙিয়ে এ দেশগুলোর উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নারী-পুরুষের সমতা অর্জন শুধু যে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অসমাপ্ত লড়াই তা-ই নয়, এটি আমাদের সময়েরও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও ৪০ বছর ধরে আমরা এ দেশের সব মানুষের মর্যাদা ও সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিরামহীনভাবে কাজ করে এসেছি, কিন্তু তার পরও আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব এখনো আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে শেকড় গেড়ে আছে। এখনো নারীরা পুরুষের তুলনায় কম মজুরির বিনিময়ে বেশি কাজ করে এবং এখনো কিছু নির্দিষ্ট পেশা ও কাজ থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়। আবার দেশের বেশির ভাগ মেয়েরই বাল্যবিবাহ হয় এবং তাদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়। আমি মনে করি, পৃথিবীর জনসংখ্যার অর্ধাংশের এ পরাধীনতা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবিচার। এ অবিচার দূর করতে আমাদের পিতৃতন্ত্রের সব রূপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সবাই এই যুদ্ধের সম্মুখসারিতে থাকব—এই আমার প্রত্যাশা।
আমাদের সামনে রয়েছে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ। তা আরও জটিল হতে থাকবে। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি। বাংলাদেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে এ কথা যেমন সত্যি, সেই সঙ্গে এ কথাও সত্যি, জনসংখ্যার চাপ, নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্য যে দেশগুলোতে আমরা কাজ করছি, সেখানে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন ও উদ্ভাবনী সমাধান বের করতে হবে। আর এ কাজে তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাণোচ্ছল, উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন ও উদ্যোগী তরুণ প্রজন্মের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে আমরা একটি নিবিড় ও সামগ্রিক কর্মকৌশল প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছি। এতে করে ওই তরুণেরা সমাজ পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবে বলে আমি আশাবাদী।
এটা দুর্ভাগ্যজনক যে অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশের সরকারি শিক্ষা কর্মসূচিগুলো আমাদের কিশোর-তরুণদের একুশ শতকের জ্ঞানভিত্তিক সমাজের অংশ করে তোলার উপযুক্ত যোগ্যতা ও সামর্থ্য ধারণ করে না। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হতে হবে সেটাই। পুরোনো শিক্ষাপদ্ধতি পরিহার করে নতুন পন্থায় শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে, যা তাদের পাঠ্যাংশ মুখস্থ করতে শেখাবে না; বরং তাদের চিন্তা করতে এবং সমস্যার সৃজনশীল সমাধান করতে শেখাবে। প্রাক-শৈশব উন্নয়ন, সামাজিক ও আবেগীয় শিক্ষার বিষয়ে আমাদের আরও বেশি করে ভাবতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে আরও সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে। তা ছাড়া বিশ্বের প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চমানের শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রাযুক্তিক উপায়গুলোও আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আজ আমি এটা জানাতে অত্যন্ত আনন্দ বোধ করছি যে, এর সবগুলো ক্ষেত্রেই আমরা কাজ শুরু করেছি।
স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের একজন মায়ের প্রসবকালীন মৃত্যুর ঝুঁকি নরওয়ের যেকোনো মায়ের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি। দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের গুণমান এখনো যথেষ্ট ভালো নয় এবং বড় বড় শহরের বাইরে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর অবস্থা খুবই শোচনীয়। সুতরাং আমাদের নাগরিকেরা যাতে তাদের সংগতির মধ্যে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে সে জন্য এ খাতে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো উন্নয়নে আমাদের প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। চিকিৎসকের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিয়ে হাজার হাজার মানসম্পন্ন নার্স ও ধাত্রী তৈরি করে তাদের মাধ্যমে উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
এত বছরের কাজের মধ্য দিয়ে একটি জিনিস বুঝতে পেরেছি যে, কোনো জনগোষ্ঠী এবং জাতি তখনই আত্মবিকাশের পথে পা বাড়ায়, যখন প্রত্যেক মানুষ যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে; বিশেষ করে আমাদের মতো দরিদ্র দেশে আমরা সব প্রয়োজন মেটানোর ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকতে পারি না। কিংবা এ রকম আশা করাও অনুচিত হবে যে, ব্যক্তিমালিকানার খাত আমাদের জন্য সব কাজ করে দেবে। একইভাবে দেশে যদি সবল ব্যক্তি খাত এবং সুশাসন না থাকে, তাহলে বেসরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষে এককভাবে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে না। প্রকৃতপক্ষে স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন সরকার, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাত ও বেসরকারি সংস্থাগুলো হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। তাই আমরা টিকাদান থেকে শুরু করে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে মানবাধিকার পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে সরকার, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও ব্যক্তি খাতের সঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে ব্যাপক পরিসরে বহুবিধ উদ্যোগ নিয়েছি। এ ধরনের যৌথ উদ্যোগ থেকে কত বিরাট মাপের সাফল্য আসতে পারে তা আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। আমি আশা করি, দেশে ও দেশের বাইরে সরকারি ও ব্যক্তি খাতের সঙ্গে আমাদের যৌথ কর্মকাণ্ড এবং সংযোগসূত্র তৈরি অব্যাহত থাকবে, যার মধ্য দিয়ে মানুষের জন্য আরও কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া সম্ভব হবে।
জীবনের গোধূলিবেলায় এসে আমি ভেবে স্বস্তি ও তৃপ্তি পাচ্ছি যে আমরা একটি সক্ষম ও উপযুক্ত নেতৃত্বদানকারী দল তৈরি করতে পেরেছি। এই নেতৃত্বের ওপর আমি আস্থাবান। আমি মনে করি, যে প্রতিষ্ঠানটি আমি গড়ে তুলেছি, তার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমি যখন তাঁদের আহ্বান জানাব, তখন তাঁরা আরও নিশ্চিতভাবে বৃহত্তর সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং প্রতিষ্ঠানকে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হবেন।
ফজলে হাসান আবেদ: ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন। ব্র্যাকের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণের আলোকে তৈরি।
স্বাধীনতার সময় স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিটি সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল একেবারে নিচের দিকে। আজ এ ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি দক্ষিণ এশিয়া ও তার বাইরের অনেক দেশের জন্যই ঈর্ষার বিষয়। গত ৪০ বছরে আমাদের শিশুমৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে আর মাতৃমৃত্যুর হার লাখে ৮০০ থেকে কমে ২০০-এর নিচে এবং জন্মের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু ৪০ বছর থেকে বেড়ে ৬৫ বছরে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে জন্মহার, যা ১৯৭২ সালে ছিল ৬ দশমিক ৫, তা নেমে গেছে ২ দশমিক ৭-এ। এ কথা সত্যি, বাংলাদেশের এ বিস্ময়কর ঘুরে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব একক কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়। তবে আমাদের গর্ব এই, এসব সাফল্য লাভে ব্র্যাক সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং উদ্যোগকে সব সময় সহায়তা জুগিয়েছে। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে খাওয়ার স্যালাইনের প্রচার ও প্রসার, বিপুলসংখ্যক ‘নগ্নপদ স্বাস্থ্যসেবাকর্মী’ বানানো থেকে শুরু করে মায়েদের জন্য নিরাপদ প্রসবস্থান তৈরি, যক্ষ্মারোগ মোকাবিলা থেকে শুরু করে পয়োনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা, মোটকথা জনস্বাস্থ্য বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ড দেশের স্বাস্থ্যবিষয়ে প্রতিটি অর্জনে গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
দেশের সাক্ষরতার হার গত ৪০ বছরে ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমরা পৃথিবীর সেই সব উন্নয়নশীল দেশের একটি, যারা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে নারী-পুরুষ সমতা অর্জন করতে পেরেছি। এটি জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের দ্বিতীয় লক্ষ্য। স্বাস্থ্যের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও দেশের সব ধরনের অগ্রগতিতে আমাদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি শিশু ব্র্যাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করেছে, যাদের ৬০ শতাংশেরও বেশি মেয়ে। এই শিক্ষার্থীদের একটা বিশাল অংশ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এবং পড়শোনায় গড়ে মূলধারার শিক্ষার্থীদের চেয়ে এগিয়ে আছে। ব্র্যাক আজ বিশ্বের বৃহত্তম উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এর আওতায় রয়েছে ৩০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৫ হাজার প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া রয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় তার দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করেছে। দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে উৎকর্ষের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্রুত সুনাম অর্জন করছে।
স্বাধীনতার সময় প্রচলিত ও অপ্রচলিত খাত মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ছিল দুই কোটি ২০ লাখ। গত চার দশকে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও শ্রমশক্তি বেড়েছে তিনগুণ। মজুরি শ্রমের বাজারে বিপুলসংখ্যক নারীর প্রবেশ শ্রমশক্তি বৃদ্ধির একটি বড় কারণ। ক্ষুদ্রঋণ, প্রশিক্ষণ ও সহায়ক উপকরণাদি এবং বাজারে প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে আমরা লাখ লাখ গরিব মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করেছি। দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থান করতে গিয়ে ব্র্যাক বাংলাদেশে অনেক শিল্প স্থাপনে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ভিত্তি গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এসব শিল্পের মধ্যে রয়েছে হস্তশিল্প, হাঁস-মুরগি পালন, দুগ্ধজাতপণ্য, বীজ উৎপাদন ইত্যাদি।
আমরা যেখানেই গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টির অবকাশ দেখতে পেয়েছি, সেখানে উদ্যোগ নিতে পিছপা হইনি। আমাদের সামাজিক বাণিজ্য-উদ্যোগ ও বিনিয়োগ হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং লাখ লাখ গ্রামীণ উদ্যোক্তার জন্য বাজারসংযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এসব সামাজিক বাণিজ্য-উদ্যোগ ও বিনিয়োগ থেকে উদ্বৃত্ত এসেছে। ফলে দাতাদের ওপর ব্র্যাকের নির্ভরতাও কমেছে। এখন এ সংস্থার বার্ষিক বাজেট ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি এবং তার ৩০ শতাংশেরও কম আসছে দাতাদের কাছ থেকে।
আজ থেকে ঠিক ১০ বছর আগে, ২০০২ সালে আমরা আফগানিস্তানে কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে এর আন্তর্জাতিক কর্মসূচির সূচনা করি। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ যেমন ছিল, ২০০২ সালের আফগানিস্তানও ছিল ঠিক তেমনি; যুদ্ধবিধ্বস্ত, দেশ ও জাতি পুনর্গঠনের কাজে হাজারো চ্যালেঞ্জ। বাহাত্তরের বাংলাদেশের মতোই সে দেশেও লাখ লাখ শরণার্থী তালেবান সরকারের পতনের পর দেশে ফিরছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে একই অবস্থা আমরাও মোকাবিলা করেছি, আর সে অভিজ্ঞতাই আমাদের আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রেরণা জুগিয়েছে। আফগানিস্তানে আমাদের প্রাথমিক সাফল্য থেকে সাহস ও প্রত্যয় নিয়ে আমরা সুনামি-পরবর্তী শ্রীলঙ্কায় কাজ শুরু করি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সালে আফ্রিকার উগান্ডা ও তানজানিয়ায় কাজ শুরু করি। ব্র্যাক আজ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার নয়টি দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্ষুদ্রঋণ ও কৃষিক্ষেত্রে নিজস্ব উন্নয়ন মডেলের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আছে, কিন্তু সেই সব চ্যালেঞ্জ ডিঙিয়ে এ দেশগুলোর উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
নারী-পুরুষের সমতা অর্জন শুধু যে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অসমাপ্ত লড়াই তা-ই নয়, এটি আমাদের সময়েরও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও ৪০ বছর ধরে আমরা এ দেশের সব মানুষের মর্যাদা ও সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিরামহীনভাবে কাজ করে এসেছি, কিন্তু তার পরও আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব এখনো আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে শেকড় গেড়ে আছে। এখনো নারীরা পুরুষের তুলনায় কম মজুরির বিনিময়ে বেশি কাজ করে এবং এখনো কিছু নির্দিষ্ট পেশা ও কাজ থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখা হয়। আবার দেশের বেশির ভাগ মেয়েরই বাল্যবিবাহ হয় এবং তাদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়। আমি মনে করি, পৃথিবীর জনসংখ্যার অর্ধাংশের এ পরাধীনতা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবিচার। এ অবিচার দূর করতে আমাদের পিতৃতন্ত্রের সব রূপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সবাই এই যুদ্ধের সম্মুখসারিতে থাকব—এই আমার প্রত্যাশা।
আমাদের সামনে রয়েছে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ। তা আরও জটিল হতে থাকবে। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি। বাংলাদেশ প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে এ কথা যেমন সত্যি, সেই সঙ্গে এ কথাও সত্যি, জনসংখ্যার চাপ, নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্য যে দেশগুলোতে আমরা কাজ করছি, সেখানে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন ও উদ্ভাবনী সমাধান বের করতে হবে। আর এ কাজে তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। প্রাণোচ্ছল, উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন ও উদ্যোগী তরুণ প্রজন্মের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে আমরা একটি নিবিড় ও সামগ্রিক কর্মকৌশল প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছি। এতে করে ওই তরুণেরা সমাজ পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবে বলে আমি আশাবাদী।
এটা দুর্ভাগ্যজনক যে অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশের সরকারি শিক্ষা কর্মসূচিগুলো আমাদের কিশোর-তরুণদের একুশ শতকের জ্ঞানভিত্তিক সমাজের অংশ করে তোলার উপযুক্ত যোগ্যতা ও সামর্থ্য ধারণ করে না। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হতে হবে সেটাই। পুরোনো শিক্ষাপদ্ধতি পরিহার করে নতুন পন্থায় শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে, যা তাদের পাঠ্যাংশ মুখস্থ করতে শেখাবে না; বরং তাদের চিন্তা করতে এবং সমস্যার সৃজনশীল সমাধান করতে শেখাবে। প্রাক-শৈশব উন্নয়ন, সামাজিক ও আবেগীয় শিক্ষার বিষয়ে আমাদের আরও বেশি করে ভাবতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে আরও সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে। তা ছাড়া বিশ্বের প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চমানের শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রাযুক্তিক উপায়গুলোও আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আজ আমি এটা জানাতে অত্যন্ত আনন্দ বোধ করছি যে, এর সবগুলো ক্ষেত্রেই আমরা কাজ শুরু করেছি।
স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের একজন মায়ের প্রসবকালীন মৃত্যুর ঝুঁকি নরওয়ের যেকোনো মায়ের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি। দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের গুণমান এখনো যথেষ্ট ভালো নয় এবং বড় বড় শহরের বাইরে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর অবস্থা খুবই শোচনীয়। সুতরাং আমাদের নাগরিকেরা যাতে তাদের সংগতির মধ্যে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে সে জন্য এ খাতে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো উন্নয়নে আমাদের প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। চিকিৎসকের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিয়ে হাজার হাজার মানসম্পন্ন নার্স ও ধাত্রী তৈরি করে তাদের মাধ্যমে উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
এত বছরের কাজের মধ্য দিয়ে একটি জিনিস বুঝতে পেরেছি যে, কোনো জনগোষ্ঠী এবং জাতি তখনই আত্মবিকাশের পথে পা বাড়ায়, যখন প্রত্যেক মানুষ যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে; বিশেষ করে আমাদের মতো দরিদ্র দেশে আমরা সব প্রয়োজন মেটানোর ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে বসে থাকতে পারি না। কিংবা এ রকম আশা করাও অনুচিত হবে যে, ব্যক্তিমালিকানার খাত আমাদের জন্য সব কাজ করে দেবে। একইভাবে দেশে যদি সবল ব্যক্তি খাত এবং সুশাসন না থাকে, তাহলে বেসরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষে এককভাবে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে না। প্রকৃতপক্ষে স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন সরকার, ব্যক্তিমালিকানাধীন খাত ও বেসরকারি সংস্থাগুলো হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। তাই আমরা টিকাদান থেকে শুরু করে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে মানবাধিকার পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে সরকার, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও ব্যক্তি খাতের সঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে ব্যাপক পরিসরে বহুবিধ উদ্যোগ নিয়েছি। এ ধরনের যৌথ উদ্যোগ থেকে কত বিরাট মাপের সাফল্য আসতে পারে তা আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি। আমি আশা করি, দেশে ও দেশের বাইরে সরকারি ও ব্যক্তি খাতের সঙ্গে আমাদের যৌথ কর্মকাণ্ড এবং সংযোগসূত্র তৈরি অব্যাহত থাকবে, যার মধ্য দিয়ে মানুষের জন্য আরও কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া সম্ভব হবে।
জীবনের গোধূলিবেলায় এসে আমি ভেবে স্বস্তি ও তৃপ্তি পাচ্ছি যে আমরা একটি সক্ষম ও উপযুক্ত নেতৃত্বদানকারী দল তৈরি করতে পেরেছি। এই নেতৃত্বের ওপর আমি আস্থাবান। আমি মনে করি, যে প্রতিষ্ঠানটি আমি গড়ে তুলেছি, তার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আমি যখন তাঁদের আহ্বান জানাব, তখন তাঁরা আরও নিশ্চিতভাবে বৃহত্তর সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং প্রতিষ্ঠানকে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হবেন।
ফজলে হাসান আবেদ: ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন। ব্র্যাকের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণের আলোকে তৈরি।
No comments