চারদিক-এই সম্মেলনে আপনিও অংশ নিন

ক্ষ রাখুন, ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখের দিকে। এ সময়টিতে ‘দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন’ নারীর ক্ষমতায়নে সহায়তা করার লক্ষ্যে বার্ষিক বিশ্ব সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে একটি মঞ্চ গড়ে তোলা, যাতে করে নারীর কাজের বৈষয়িক প্রভাব বিস্তৃত হয়। পঞ্চম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১২০টিরও বেশি দেশের নানা স্তরের নারীর একত্র সমাবেশ ঘটবে। তাঁদের মধ্যে থাকবেন রাষ্ট্রপ্রধান, করপোরেট, ধর্মীয় ও


আধ্যাত্মিক নেতা, ছাত্র ও নারী নেতারা। সম্মেলনে গ্রামীণ নারীরা তাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। তাঁরা একটি মঞ্চ তৈরি করবেন, যেখানে নারীর মূল্যবোধ, দক্ষতা, সহজাত সৌন্দর্য ও তাঁদের সম্ভাবনার ইতিবাচক মূল্যায়ন করে নারীকে উজ্জ্বল পাদপ্রদীপের নিচে আনা হবে।
দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন এই সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশের ওই সব নারীকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, যাঁরা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রেখে অনন্যদৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদেও (ইকোসক) বিশেষ উপদেষ্টার মর্যাদার অধিকারী। এই ফাউন্ডেশন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, টেকসই উন্নয়ন ও সংঘাত নিরসনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কমিটি ও তাদের কর্মতৎপরতায় অংশীদার। এ যাবৎ এই ফাউন্ডেশন বিশ্বের ১৫১টি দেশের ৩০ কোটি মানুষের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করেছে।
আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনের প্রেরণা হচ্ছেন শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর, যিনি একজন বিশ্বখ্যাত মানবতাবাদী, আধ্যাত্মিক শিক্ষক ও শান্তির দূত। তাঁর স্বপ্নকল্প হলো এক মানসিক চাপমুক্ত, সহিংসতামুক্ত পৃথিবী, যার জন্য লাখো কোটি মানুষ নানা সেবা প্রকল্প ও কার্যক্রমের মধ্যে সম্মিলিত হয়েছে। দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান ভ্যালুজ প্রতিষ্ঠা করেছেন শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর। তাঁর মধ্যে রয়েছে এক অনন্য উদ্যোক্তার গুণ, রয়েছে তাঁর নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের আওতায় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রেরণা দেওয়া হয় এবং গোটা বিশ্বের দুস্থ নারীদের জন্য আত্মোন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন ও আত্মসহায়ক জনগোষ্ঠী বা গ্রুপ গড়ে তোলা হয়।
‘সমাজ উন্নয়নে নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবিকপক্ষে শুধু এটাই নির্ধারণ করে কোনো একটি জনসমাজ শক্তিশালী ও সম্প্রীতিময় কি না। অন্য কথায় নারীসমাজের মেরুদণ্ড।’
শ্রীশ্রী রবিশঙ্কর
আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন একটি দ্বিস্তর মডেলবিশিষ্ট সংগঠন। এর কাজ ব্যক্তিপর্যায়ের উন্নয়ন এবং সম্মিলিত কার্যব্যবস্থা গ্রহণ, যার মাধ্যমে অংশীদারি ও নেতৃত্ব গড়ে তোলা।
সমাজের একটা সিংহভাগ আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নের আন্দোলনে উপান্তে অবস্থান করলেও সেই নারীরা আজ ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় নানা ক্ষেত্রে ক্ষমতাধর ও আধিপত্যশীল সত্তা হিসেবে উঠে এসেছেন। আইডব্লিউসি এ ধারায় গড়ে উঠেছে। এ সংগঠন কাজ করে নারী নেতাদের সঙ্গে তাদের ব্যক্তি প্রভাব বাড়ানোর জন্য। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে নারীর অগ্রগতির জন্য সম্মিলিত লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করে।
এ সংগঠন তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইডব্লিউসির কার্যসূচিতে একীভূত করা হয়েছে নানা ধরনের ব্যতিক্রমী নেতৃত্ব উন্নয়ন মডিউল। আর এসব করা হয়েছে দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশনের ব্যক্তি-উন্নয়ন কার্যক্রমগুলোর নীতিমালার ভিত্তিতে।
সম্মেলনের কিছু উজ্জ্বল দিক—আইডব্লিউসির প্যানেল আলোচনা মানবিক মূল্যবোধগুলোর লালনে নারীর অনন্যসাধারণ দিকগুলো ফুটিয়ে তোলে এবং শান্তি ও উন্নয়নকে স্থায়িত্ব দেয়। এই সম্মেলন নারীর জন্য বিশ্বমঞ্চ। বিশ্বমঞ্চ যেসব নারী সাধারণত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও সিদ্ধান্ত প্রণয়নে নিয়োজিত তাদের জন্যও। আর এর সুবিধা নিয়ে এসব নারী সর্বোত্তম অনুশীলনমূলক কাজের বিষয়ে সংলাপ ও ভাববিনিময়ে নিয়োজিত হতে পারে। আইডব্লিউসি কার্যসূচির প্রধান বিষয় হলো দুটি মূল উদ্যোগ। এক. নাজুক ও সংঘাত জর্জরিত রাষ্ট্রগুলোর নারীর মর্যাদার উন্নতি এবং দুই. শিশুকন্যাদের শিক্ষার উন্নয়ন।
এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে ভারতের বেঙ্গালুরুতে। আয়োজক দ্য আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন। এই সম্মেলনে অংশ নেবেন সব স্তরের ও শ্রেণীর নারী। তাঁরা সাধারণভাবে সমাজ এবং বিশেষ করে নারীর জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা করবেন। সম্মেলন চলবে তিন দিন ধরে। সম্মেলনের মূলভাব হবে ‘নারী ও প্রযুক্তি’। এ সম্মেলনের প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশের নারীর ক্ষমতায়ন ও তাঁদের প্রযুক্তি শিক্ষার সহায়তার উপায় বের করা হবে।
বিশ্বের সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর নারী চিন্তাবিদ ও কর্মবীরেরা যোগ দেবেন এই সম্মেলনে। সম্মেলন একটি মঞ্চ তৈরি করবে, যা গড়ে তুলবে সমাজের নানা শ্রেণীর নারীর মধ্যে তথ্য যোগাযোগের একটি সেতুবন্ধন।
শ্রীমতী ভানুমতি নরসিংহম হবেন এই সম্মেলনের চেয়ারপারসন। ‘ধ্যানমগ্নতা মানুষকে তার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এটি আসলে মন ও মনন ব্যবস্থাপনার একধরনের প্রচ্ছন্ন প্রযুক্তি।’ বলেছেন ভানুমতি।
যাঁরা আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে যোগ দিতে আগ্রহী তাঁরা ইচ্ছে করলে ৭ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেল চারটায় ঢাকার কাকরাইলের হোটেল রাজমণিতে নির্ধারিত সভায় যোগ দিতে পারেন।
আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭১৩০৮৩৬৩৯ বা ই-মেইল: artofliving,bd@gmail.com.
তমাল তাহসীন

No comments

Powered by Blogger.