ইন্ডিয়ান হয়ে থাকার সুযোগ চাইল সাজিদ
আদালতে বিচারকের সামনে নিজের মুখেই স্বীকার করলেন সব অপকর্মের কথা। তারপর একজন ‘ইন্ডিয়ান’ হয়ে ভারতে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। অনুরোধ জানালেন, বিচারক যেন তাকে সেই সুযোগটি করে দেন। আর এমন আবদার করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশের জঙ্গি নেতা সাজিদ খান। তার এমন আবদার শুনে রোববার কলকাতায় নগর দায়রা আদালতের এজলাসে থাকা সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা কানাঘুঁষা করতে শুরু করেন। অনেকে মুখ ফসকে বলেই ফেলেন, এ কি মামা বাড়ির আবদার নাকি! বাংলাদেশে বোমা ফাটিয়ে মানুষে মেরে এখন ‘ইন্ডিয়ান’ হয়ে ভারতে থাকতে দিতে হবে! এজলাসে সাক্ষীদের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এমন নাটকীয় আবদার করলেও বিচারক সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে বর্ধমানকাণ্ডের মূল হোতা সাজিদ খানকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। সাজিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইন, মানি লন্ডারিং, ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার পরিকল্পনাসহ মোট ১৬টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুর্ধর্ষ এ জঙ্গি নেতা সাজিদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দল বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়াকে হত্যার ছকের সঙ্গেও যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলে এনআইএ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে নারায়নগঞ্জ (বন্দর) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ফরাজিকান্দা লাহোরবাড়ি এলাকার মাসুমই ভারতে গ্রেফতার হওয়া জেএমবির প্রধান কমান্ডার মাসুম ওরফে শেখ সাজিদ। তারা বাবা মৃত সিদ্দিক ওরফে পচা মিয়া।
ভারতে এ ভয়ংকর জঙ্গি নেতা মাসুম ওরফে সাজিদ গ্রেফতারের পর তার ব্যাপারে খোঁজ নিতে শুরু করে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। রোববার বিকালে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সাজিদের গ্রামের বাড়ি পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। গত শনিবার ভারতের দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া যশোর রোড থেকে সাজিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাজিদ তার এলাকায় মাসুম নামে পরিচিত। এর আগে ২০০৭ সালে পিস্তল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও জিহাদি বইসহ চট্টগ্রাম থেকে প্রথমবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাজিদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মাসুম ওরফে সাজিদের পরিবার গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে জানান, প্রায় ৫ বছর জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে ২ বছর আগে দুবাই যাওয়ার কথা বলে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তার সঙ্গে পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তারা জানিয়েছেন, সাজিদ ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছে। সে এখান থেকে দাখিল পাস করে। তার বাবা সিদ্দিক ছিলেন একজন পাটকল শ্রমিক। ৫ ভাই, ৪ বোনের মধ্যে সাজিদ সবার ছোট। জুম্মন নামে তার এক ভাগ্নে আফগানিস্তানে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে সাহায্য করা হয় বলে সূত্র জানায়। এ ছাড়া বাংলাদেশে তার এক চাচা অর্থ সাহায্য করে থাকেন।
সাজিদের বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ সরকারি আইইটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন জানান, ৭ বছর আগে চট্টগ্রামে পিস্তল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও জিহাদি বইসহ মাসুম ওরফে সাজিদ প্রথমবার গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারের ৫ বছর পর বসতবাড়ি বিক্রি করে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়। এরপর সে আর এমন কাজ করবে না বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু ২ বছর আগে দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সে আর আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেনি।
গ্রেফতারের পর সাজিদকে রোববার ৩টা ২০ মিনিটে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের মুখ্য দায়রা বিচারক মহম্মদ মমতাজ খানের এজলাসে তোলা হয়। বিচারক সাজিদকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওই সময় সাজিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। ফলে বিচারক নিজেই সাজিদকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেন। সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাকে বলার সুযোগ দেন বিচারক। আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে নিজেকে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা বলে দাবি করেন সাজিদ। আর্তনাদ করে বলতে শুরু করেন, বাংলাদেশের নাগরিক হলেও ভারতে প্রাণে বাঁচার জন্যই পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। তার ভাষায়, ‘স্যার আমি যে অপরাধ করেছি সবটাই বাংলাদেশে। এখানে কোনো অপরাধ করিনি। এখানে আমি ইন্ডিয়ান হয়েই থাকতে চেয়েছিলাম। আমাকে সেই সুযোগ দেয়া হোক।’
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র দুজন আইনজীবী শ্যামল কুমার ঘোষ ও সঞ্জয়বর্ধন আদালতকে জানান, সাজিদ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসে বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে পশ্চিমবঙ্গে আস্তানা গড়ে তোলে। রাজ্যের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে অনায়াসেই বাংলাদেশী মোবাইল সিম ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।
আইনজীবীরা আদালতকে জানান, সাজিদ খান জেএমবির সক্রিয় নেতা। ২০১৪ সালের শুরু থেকেই সে ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। এখানে আল কায়দাসহ বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গি এজেন্টের সঙ্গে মিশে গেছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন বলে বিচারকের সামনে এনআইএয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জেরা করে গোটা দেশে জঙ্গি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ সময় সাজিদকে ১৪ দিনের পুলিশ রিমান্ডে দেয়ার দাবি করেন আইনজীবীরা। বিচারক ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে নারায়নগঞ্জ (বন্দর) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ফরাজিকান্দা লাহোরবাড়ি এলাকার মাসুমই ভারতে গ্রেফতার হওয়া জেএমবির প্রধান কমান্ডার মাসুম ওরফে শেখ সাজিদ। তারা বাবা মৃত সিদ্দিক ওরফে পচা মিয়া।
ভারতে এ ভয়ংকর জঙ্গি নেতা মাসুম ওরফে সাজিদ গ্রেফতারের পর তার ব্যাপারে খোঁজ নিতে শুরু করে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। রোববার বিকালে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সাজিদের গ্রামের বাড়ি পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা তার পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। গত শনিবার ভারতের দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া যশোর রোড থেকে সাজিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাজিদ তার এলাকায় মাসুম নামে পরিচিত। এর আগে ২০০৭ সালে পিস্তল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও জিহাদি বইসহ চট্টগ্রাম থেকে প্রথমবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাজিদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মাসুম ওরফে সাজিদের পরিবার গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে জানান, প্রায় ৫ বছর জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে ২ বছর আগে দুবাই যাওয়ার কথা বলে সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর তার সঙ্গে পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তারা জানিয়েছেন, সাজিদ ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছে। সে এখান থেকে দাখিল পাস করে। তার বাবা সিদ্দিক ছিলেন একজন পাটকল শ্রমিক। ৫ ভাই, ৪ বোনের মধ্যে সাজিদ সবার ছোট। জুম্মন নামে তার এক ভাগ্নে আফগানিস্তানে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে সাহায্য করা হয় বলে সূত্র জানায়। এ ছাড়া বাংলাদেশে তার এক চাচা অর্থ সাহায্য করে থাকেন।
সাজিদের বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ সরকারি আইইটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন জানান, ৭ বছর আগে চট্টগ্রামে পিস্তল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও জিহাদি বইসহ মাসুম ওরফে সাজিদ প্রথমবার গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারের ৫ বছর পর বসতবাড়ি বিক্রি করে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়। এরপর সে আর এমন কাজ করবে না বলে অঙ্গীকার করে। কিন্তু ২ বছর আগে দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সে আর আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেনি।
গ্রেফতারের পর সাজিদকে রোববার ৩টা ২০ মিনিটে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের মুখ্য দায়রা বিচারক মহম্মদ মমতাজ খানের এজলাসে তোলা হয়। বিচারক সাজিদকে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ওই সময় সাজিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। ফলে বিচারক নিজেই সাজিদকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেন। সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাকে বলার সুযোগ দেন বিচারক। আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে নিজেকে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা বলে দাবি করেন সাজিদ। আর্তনাদ করে বলতে শুরু করেন, বাংলাদেশের নাগরিক হলেও ভারতে প্রাণে বাঁচার জন্যই পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। তার ভাষায়, ‘স্যার আমি যে অপরাধ করেছি সবটাই বাংলাদেশে। এখানে কোনো অপরাধ করিনি। এখানে আমি ইন্ডিয়ান হয়েই থাকতে চেয়েছিলাম। আমাকে সেই সুযোগ দেয়া হোক।’
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র দুজন আইনজীবী শ্যামল কুমার ঘোষ ও সঞ্জয়বর্ধন আদালতকে জানান, সাজিদ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসে বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে পশ্চিমবঙ্গে আস্তানা গড়ে তোলে। রাজ্যের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে অনায়াসেই বাংলাদেশী মোবাইল সিম ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।
আইনজীবীরা আদালতকে জানান, সাজিদ খান জেএমবির সক্রিয় নেতা। ২০১৪ সালের শুরু থেকেই সে ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। এখানে আল কায়দাসহ বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গি এজেন্টের সঙ্গে মিশে গেছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন বলে বিচারকের সামনে এনআইএয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জেরা করে গোটা দেশে জঙ্গি নেটওয়ার্ক সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এ সময় সাজিদকে ১৪ দিনের পুলিশ রিমান্ডে দেয়ার দাবি করেন আইনজীবীরা। বিচারক ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
No comments