সর্বনাশা প্রকল্প-সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে
সারা বিশ্ব যখন পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট, আমরা তখন প্রকৃতিকে ধ্বংস করছি। নষ্ট করছি পরিবেশ। দেশের বনাঞ্চল আজ হুমকির মুখে। রীতিমতো পরিকল্পনা করে উজাড় করা হচ্ছে বনভূমি।
এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে সরকারিভাবে সুন্দরবনকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে হুমকির মুখে। প্রকৃতির রূপ-বৈচিত্র্য রক্ষার ব্যাপারে আমাদের চেয়ে অসচেতন জাতি বোধ হয় বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই।
সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ দূষণকারী কয়লাভিত্তিক বৃহৎ যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন যে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে, এ বিষয়টি নিয়ে দেশ-বিদেশে এত আপত্তি সরকারের নীতি-নির্ধারকরা আমলেই নিলেন না। এমনকি ইউনেস্কোও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তার পরও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
বাগেরহাটের কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হবে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে। এ জন্য সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত রবিবার যৌথ উদ্যোগে গঠিতব্য কয়লাভিত্তিক 'বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি (প্রা.) লি.'-এর কাছ থেকে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে। উপেক্ষা করা হয়েছে পরিবেশবাদীদের যৌক্তিক উদ্বেগ। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করা হচ্ছে জলাভূমির ক্ষেত্রে, উচ্ছেদ করা হচ্ছে ঘরবাড়ি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আশপাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। বনের আশপাশের নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ রুদ্ধ হবে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা একটি পরীক্ষাও চালিয়েছিলেন। তাতে ২৩ ধরনের ক্ষতি চিহ্নিত করলেও সরকারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে।
এটা ঠিক, একটি নয়, অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রই আমাদের প্রয়োজন। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে কলকারখানা। গৃহস্থালির কাজে যেমন বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তেমনি কলকারখানা চালু রাখতে গেলেও বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিদ্যুৎ ছাড়া আমাদের চলবে না। আধুনিক জীবন বিদ্যুৎনির্ভর। আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। এর চেয়েও বড় কথা বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েই চলেছে, যা সব সময় সরবরাহের তুলনায় বেশি হারে বাড়ছে। কাজেই বিদ্যুতের জন্য যেকোনো নতুন প্রকল্পকে স্বাগত জানাতেই হবে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে, পরিবেশের ক্ষতি হবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া যাবে না। রামপালে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হতে যাচ্ছে, সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে সেটি অন্য জায়গায় নির্মাণ করলে ক্ষতি কী? নাকি পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবিকে তোয়াক্কা না করার জেদ থেকেই সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্তে সরকার অনড় রয়েছে!
বলার অপেক্ষা রাখে না, সভ্যতার আদিপর্বে বন কেটেই বসতি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু এটাও তো সত্য যে বসবাসের উপযোগী একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে মানুষ অব্যাহতভাবে বনও সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী রাখতে যেকোনো ভূখণ্ডের একটি অংশ বনভূমি থাকা অপরিহার্য। বাংলাদেশে তা নেই। অন্যদিকে পরিবেশ বিনষ্ট হয়, বনভূমি হুমকির মুখে পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাই যেকোনো মূল্যে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে, রক্ষা করতে হবে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রাণবৈচিত্র্য। এ জন্য সরকারকেই মূল ভূমিকা নিতে হবে। রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সরকারের দ্বিতীয় চিন্তা ও শুভবুদ্ধির বিজয় হয়তো সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে দেবে- এটাই প্রত্যাশা।
সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ দূষণকারী কয়লাভিত্তিক বৃহৎ যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন যে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে, এ বিষয়টি নিয়ে দেশ-বিদেশে এত আপত্তি সরকারের নীতি-নির্ধারকরা আমলেই নিলেন না। এমনকি ইউনেস্কোও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তার পরও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।
বাগেরহাটের কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হবে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে। এ জন্য সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত রবিবার যৌথ উদ্যোগে গঠিতব্য কয়লাভিত্তিক 'বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি (প্রা.) লি.'-এর কাছ থেকে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে। উপেক্ষা করা হয়েছে পরিবেশবাদীদের যৌক্তিক উদ্বেগ। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করা হচ্ছে জলাভূমির ক্ষেত্রে, উচ্ছেদ করা হচ্ছে ঘরবাড়ি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আশপাশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। বনের আশপাশের নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ রুদ্ধ হবে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা একটি পরীক্ষাও চালিয়েছিলেন। তাতে ২৩ ধরনের ক্ষতি চিহ্নিত করলেও সরকারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে।
এটা ঠিক, একটি নয়, অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রই আমাদের প্রয়োজন। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে কলকারখানা। গৃহস্থালির কাজে যেমন বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তেমনি কলকারখানা চালু রাখতে গেলেও বিদ্যুৎ অপরিহার্য। বিদ্যুৎ ছাড়া আমাদের চলবে না। আধুনিক জীবন বিদ্যুৎনির্ভর। আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। এর চেয়েও বড় কথা বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েই চলেছে, যা সব সময় সরবরাহের তুলনায় বেশি হারে বাড়ছে। কাজেই বিদ্যুতের জন্য যেকোনো নতুন প্রকল্পকে স্বাগত জানাতেই হবে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে, পরিবেশের ক্ষতি হবে, এমন কোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া যাবে না। রামপালে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হতে যাচ্ছে, সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে সেটি অন্য জায়গায় নির্মাণ করলে ক্ষতি কী? নাকি পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দাবিকে তোয়াক্কা না করার জেদ থেকেই সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্তে সরকার অনড় রয়েছে!
বলার অপেক্ষা রাখে না, সভ্যতার আদিপর্বে বন কেটেই বসতি স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু এটাও তো সত্য যে বসবাসের উপযোগী একটি পরিবেশ গড়ে তুলতে মানুষ অব্যাহতভাবে বনও সৃষ্টি করেছে। পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী রাখতে যেকোনো ভূখণ্ডের একটি অংশ বনভূমি থাকা অপরিহার্য। বাংলাদেশে তা নেই। অন্যদিকে পরিবেশ বিনষ্ট হয়, বনভূমি হুমকির মুখে পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাই যেকোনো মূল্যে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে, রক্ষা করতে হবে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রাণবৈচিত্র্য। এ জন্য সরকারকেই মূল ভূমিকা নিতে হবে। রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সরকারের দ্বিতীয় চিন্তা ও শুভবুদ্ধির বিজয় হয়তো সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে দেবে- এটাই প্রত্যাশা।
No comments