দুষু্ব ছাতি by দীপংকর চন্দ
এক দেশে ছিলেন এক রাজা। তিনি ছিলেন ভীষণ প্রজাদরদি। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, দুর্দিনে-দুঃসময়ে প্রজাদের পাশে দাঁড়াতেন। প্রজাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামাল দিতেন সব বিপদ-আপদ। সেই রাজা একদিন বনে গেলেন শিকার করতে।
একাই গেলেন। সঙ্গীসাথি ছাড়া সারা দিন ঘুরলেন, কিন্তু কোনো শিকার পেলেন না। সন্ধ্যায় তিনি ক্লান্ত হয়ে বসে পড়লেন একটা বড় বটগাছের নিচে।
সেই বটগাছের কাছেই দুষ্টু একটা ছাতি বাসা বেঁধেছিল।
ছাতি মানে লম্বা লাঠি লাগানো, মোটা কাপড় জড়ানো বৃত্তাকার বস্তু অবশ্যই, তবে এই ছাতিটা অন্য ছাতিদের মতো ভালো নয়। ভীষণ দুষ্টু।
দুষ্টু ছাতি এই রাজ্যের বাসিন্দা নয়। ভিন রাজ্য থেকে সে এই রাজ্যে এসেছিল। তাই রাজা তো বটেই, এই রাজ্যের কেউই চিনত না তাকে।
রাজাকে দেখে কাছে এসে দাঁড়াল দুষু্ব ছাতিটা।
রাজা মুখ ঘুরিয়ে দুষ্টু ছাতির দিকে তাকাতেই সে করজোড়ে বলল, ‘অপরাধ নেবেন না প্রভু, আপনি নিশ্চয়ই এই রাজ্যের রাজা?’
‘হ্যাঁ। তা ঠিক। আমিই এই রাজ্যের রাজা। কিন্তু তোমাকে তো বাপু চিনলাম না আমি!’
‘চেনার কথা নয় প্রভু। আমি ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। বিশেষ কাজের খোঁজে এসেছি আপনার রাজ্যে।’
রাজা কিছুটা কৌতূহল বোধ করলেন, বললেন, ‘তা, কী ধরনের বিশেষ কাজ করতে পারো তুমি?’
‘আমি রোদ-বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর পাশাপাশি বিশেষ ধরনের আরাম দিতে পারি।’
আরামের কথায় অবাক হলেন রাজা। কিছুক্ষণ ভাবলেন, তারপর বললেন, ‘কিন্তু এ ধরনের কাজ যে নেই আমার রাজ্যে! তুমি বরং অন্য রাজ্যে যাও।’
দুষ্টু ছাতি রাজার পা জড়িয়ে ধরল, ‘যেমন করেই হোক আমাকে কাজের ব্যবস্থা করে দিন প্রভু। কোথাও যদি না-ও হয়, আপনার মাথার ওপর আমাকে ঠাঁই দিন আপনি। অন্ততপক্ষে আপনার সেবা করার সুযোগ দিন আমায়।’
দুষ্টু ছাতির অনুনয়-বিনয়ে মন নরম হলো রাজার। দুষু্ব ছাতিকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীতে ফিরলেন তিনি।
পরদিন থেকে দুষ্টু ছাতির স্থান হলো রাজার মাথার ওপর। রাজা যেখানেই যান, দুষ্টু ছাতি থাকে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে। রোদ হয়, বৃষ্টি হয়, রাজার মাথা বাঁচায় দুষ্টু ছাতি, বিশেষ আরাম দেয় রাজাকে।
দিন যায়, রাত যায়। রাজা অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন আরামে।
অবিরাম আরামের ব্যবস্থা করার সুবাদে দুষ্টু ছাতি হয়ে ওঠে রাজার প্রিয়ভাজন, ঘনিষ্ঠজন।
দুষু্ব ছাতির আরাম কর্মবিমুখ করে তোলে রাজাকে। প্রজাদের বিপদে-আপদে তিনি আগের মতো সাড়া দেন না আর। প্রজারা অভাব-অভিযোগ নিয়ে আসে রাজার কাছে। রাজা আরামে চোখ বুজে ঘুমিয়ে থাকেন। রাজার হয়ে কথা বলে দুষু্ব ছাতি। দুষ্টু ছাতির দুষু্ব কথায় রসাতলে যায় রাজ্য।
ধীরে ধীরে দুষ্টু ছাতির ভেতর লোভ তৈরি হলো। অতি লোভ। রাজাকে সরিয়ে রাজত্ব দখল করার লোভ।
প্রজারা টের পেল এই দুরভিসন্ধি। তারা চিন্তিত হলো ভীষণ; ভাবল, কী করা যায় এখন! কী করে বাঁচানো যায় রাজাকে! কী করে রক্ষা করা যায় রাজ্যকে!
মরিয়া হয়ে সবাই সঙ্ঘবদ্ধ হলো। একজোট হয়ে এগিয়ে গেল। ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল দুষু্ব ছাতিকে।
দুষ্টু ছাতিকে সরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ-বৃষ্টি স্পর্শ করল রাজার শরীর। ঘুম ভেঙে গেল রাজার। চোখ খুলে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। তাকালেন প্রজাদের দিকে। বোধোদয় হলো তাঁর। দ্রুত হাতে তিনি নষ্ট করলেন দুষ্টু ছাতিকে।
দুষু্ব ছাতিকে নষ্ট করার সুবাদে সুখ ফিরে এল রাজ্যে। প্রজাদরদি হিসেবে আবার প্রতিষ্ঠিত হলেন রাজা।
সেই বটগাছের কাছেই দুষ্টু একটা ছাতি বাসা বেঁধেছিল।
ছাতি মানে লম্বা লাঠি লাগানো, মোটা কাপড় জড়ানো বৃত্তাকার বস্তু অবশ্যই, তবে এই ছাতিটা অন্য ছাতিদের মতো ভালো নয়। ভীষণ দুষ্টু।
দুষ্টু ছাতি এই রাজ্যের বাসিন্দা নয়। ভিন রাজ্য থেকে সে এই রাজ্যে এসেছিল। তাই রাজা তো বটেই, এই রাজ্যের কেউই চিনত না তাকে।
রাজাকে দেখে কাছে এসে দাঁড়াল দুষু্ব ছাতিটা।
রাজা মুখ ঘুরিয়ে দুষ্টু ছাতির দিকে তাকাতেই সে করজোড়ে বলল, ‘অপরাধ নেবেন না প্রভু, আপনি নিশ্চয়ই এই রাজ্যের রাজা?’
‘হ্যাঁ। তা ঠিক। আমিই এই রাজ্যের রাজা। কিন্তু তোমাকে তো বাপু চিনলাম না আমি!’
‘চেনার কথা নয় প্রভু। আমি ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। বিশেষ কাজের খোঁজে এসেছি আপনার রাজ্যে।’
রাজা কিছুটা কৌতূহল বোধ করলেন, বললেন, ‘তা, কী ধরনের বিশেষ কাজ করতে পারো তুমি?’
‘আমি রোদ-বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর পাশাপাশি বিশেষ ধরনের আরাম দিতে পারি।’
আরামের কথায় অবাক হলেন রাজা। কিছুক্ষণ ভাবলেন, তারপর বললেন, ‘কিন্তু এ ধরনের কাজ যে নেই আমার রাজ্যে! তুমি বরং অন্য রাজ্যে যাও।’
দুষ্টু ছাতি রাজার পা জড়িয়ে ধরল, ‘যেমন করেই হোক আমাকে কাজের ব্যবস্থা করে দিন প্রভু। কোথাও যদি না-ও হয়, আপনার মাথার ওপর আমাকে ঠাঁই দিন আপনি। অন্ততপক্ষে আপনার সেবা করার সুযোগ দিন আমায়।’
দুষ্টু ছাতির অনুনয়-বিনয়ে মন নরম হলো রাজার। দুষু্ব ছাতিকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীতে ফিরলেন তিনি।
পরদিন থেকে দুষ্টু ছাতির স্থান হলো রাজার মাথার ওপর। রাজা যেখানেই যান, দুষ্টু ছাতি থাকে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে। রোদ হয়, বৃষ্টি হয়, রাজার মাথা বাঁচায় দুষ্টু ছাতি, বিশেষ আরাম দেয় রাজাকে।
দিন যায়, রাত যায়। রাজা অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন আরামে।
অবিরাম আরামের ব্যবস্থা করার সুবাদে দুষ্টু ছাতি হয়ে ওঠে রাজার প্রিয়ভাজন, ঘনিষ্ঠজন।
দুষু্ব ছাতির আরাম কর্মবিমুখ করে তোলে রাজাকে। প্রজাদের বিপদে-আপদে তিনি আগের মতো সাড়া দেন না আর। প্রজারা অভাব-অভিযোগ নিয়ে আসে রাজার কাছে। রাজা আরামে চোখ বুজে ঘুমিয়ে থাকেন। রাজার হয়ে কথা বলে দুষু্ব ছাতি। দুষ্টু ছাতির দুষু্ব কথায় রসাতলে যায় রাজ্য।
ধীরে ধীরে দুষ্টু ছাতির ভেতর লোভ তৈরি হলো। অতি লোভ। রাজাকে সরিয়ে রাজত্ব দখল করার লোভ।
প্রজারা টের পেল এই দুরভিসন্ধি। তারা চিন্তিত হলো ভীষণ; ভাবল, কী করা যায় এখন! কী করে বাঁচানো যায় রাজাকে! কী করে রক্ষা করা যায় রাজ্যকে!
মরিয়া হয়ে সবাই সঙ্ঘবদ্ধ হলো। একজোট হয়ে এগিয়ে গেল। ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল দুষু্ব ছাতিকে।
দুষ্টু ছাতিকে সরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ-বৃষ্টি স্পর্শ করল রাজার শরীর। ঘুম ভেঙে গেল রাজার। চোখ খুলে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। তাকালেন প্রজাদের দিকে। বোধোদয় হলো তাঁর। দ্রুত হাতে তিনি নষ্ট করলেন দুষ্টু ছাতিকে।
দুষু্ব ছাতিকে নষ্ট করার সুবাদে সুখ ফিরে এল রাজ্যে। প্রজাদরদি হিসেবে আবার প্রতিষ্ঠিত হলেন রাজা।
No comments