দাম কম, আলুতেও কৃষকের লোকসান

ত মৌসুমে আলুর লোকসানের ধকল কাটিয়ে না উঠতেই এবার আগাম আলু নিয়ে চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। দাম কম হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই তাঁদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে আলু চাষ করে কৃষকেরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েন। এবার তা পুষিয়ে নিতে তাঁরা হাড়ভাঙা খাটুনি ও অধিক ব্যয়ে আগাম আলু উৎপাদন করলেও খরচ উঠছে না। কৃষকেরা জানান, গত বছর এ সময় যেখানে আগাম আলুর দাম ছিল ৯০০ থেকে


এক হাজার ১০০ টাকা মণ, এবার তা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। সূত্র জানায়, উপজেলার তিন শ্রেণীর আলু চাষ হয়—আগাম আলু, মাঝারি সময়ের আলু (পলির আলু) ও শেষ পর্যায়ের আলু (খিয়ার বা লাল মাটির আলু)। আগাম আলু তোলার মাস খানেক পর মাঝারি সময়ের পলির আলু তোলা হয়। এর ১৫ দিন থেকে এক মাস পর ওঠে খিয়ারের আলু। এখন কৃষকেরা আগাম আলু তুলছেন। এ সময় সাধারণত আলুর দাম বরাবরই বেশ চড়া থাকে। কিন্তু এ বছর হয়েছে তার উল্টো।
কৃষকেরা আরও জানান, আগাম আলু জমি থেকে তুলে তাঁরা ওই জমিতে বোরো ধান ও কচু চাষ করবেন। এ কারণে এখন আর জমিতে আলু রাখা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে তা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখনো অনেকের বাড়িতে মজুদ করা পুরোনো আলু আছে। বাজারে পানির দরে বিক্রি হচ্ছে পুরোনো আলু। উপরন্তু এবার বাজারে আগাম আলুর সরবরাহও অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে আগাম আলুর দামও কমে গেছে।
টেপাগাড়ি গ্রামের কৃষক আজমল হোসেন (৪৫) জানান, ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে তিনি এক বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছেন। ফলন পেয়েছেন ২২ মণ। এ পর্যন্ত বাজারে প্রতি মণ ৪২৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করেছেন।
একই গ্রামের আলুচাষি সাবলু মিয়া (৩৫) বলেন, ‘হামার মেরুদণ্ড ভ্যাঙ্গা গেচে রে ভাই। দিন যত যাচ্ছে, আলুর দাম ততই কমিচ্ছে। আবাদের জন্যি সার-ওষুধ কিনতে বাজারোত লাগে আগুন; আর হামরা যকন বেচপার আসি, তকন বাজার পানি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, বাজারে এখন অনেক শাকসবজির সরবরাহ। এবার আগাম আলুর ফলনও হয়েছে বেশ। ফলে দাম কমে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.