খালেদা জিয়ার বিদেশী হস্তক্ষেপ কামনায় সংসদে নিন্দার ঝড়
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় এবং দেশের গণতন্ত্র
ও সার্বভৌমত্ব নস্যাত করতেই ওয়াশিংটন টাইমসে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া
নিবন্ধ লিখেছেন বলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মহাজোটের সিনিয়র নেতারা।
বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদকে অস্বীকার করে বিদেশে নালিশ করার কারণে তাঁর
বিরুদ্ধে সংসদীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানানো
হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ চেয়ে খালেদা জিয়া
রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন উল্লেখ করে তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর
দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি ওই নিবন্ধের জন্য খালেদা জিয়াকে দেশবাসীর
কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানান। তাঁরা বলেন, আগামী নির্বাচনে
ব্যালটের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতকে পরাজিত করে জনগণ এর জবাব দেবে।
বৃহস্পতিবার ডেপুটি স্পীকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে
ওয়াশিংটন টাইমস অনলাইনে প্রকাশিত খালেদা জিয়ার নিবন্ধ নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে
পড়ে। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা বলেন, ওই নিবন্ধন
খালেদা জিয়ার ‘প্রলাপ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। বেগম জিয়া যতই চেষ্টা করুন,
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিদেশী হস্তক্ষেপ চেয়ে মরিয়া হোন না কেন, এদেশের
মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। এটা দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রত্যাশা।
জামায়াতের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংসদে প্রস্তাব আনারও দাবি জানান
মহাজোটের নেতারা।
মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনা উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। পরে একে একে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আব্দুল মতিন খসরু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আবদুর রহমান, এ্যাডভোকেট তারানা হালিম, বেবী মওদুদ, এ্যাডভোকেট ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি, অপু উকিল, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, নাজমা আক্তার, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল এবং জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু। তবে হুইপ আসম ফিরোজ বক্তব্য না রাখলেও কারও কারও বক্তব্যে অসংসদীয় বক্তব্য রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তা এক্সপাঞ্জ করার অনুরোধ জানান।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নস্যাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমস অনলাইনে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করে দেশদ্রোহের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এসব অভিযোগ করে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। তাঁর পায়ের নিচে মাটি নেই। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় তিনি যে ধরনের বক্তব্য রেখে চলেছেনÑ তাতে ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। দেশদ্রোহের দায়ে তাঁর বিচার হওয়া উচিত।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি অখ্যাত পত্রিকা ওয়াশিংটন টাইমস। যার কোন সার্কুলেশন নেই। তিনি যা লিখেছেন তা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের বিষয়ে তাঁর কোন চেতনা নেই তা তাঁর লেখার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেন, তিনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, কোন যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী ব্যক্তির গাড়িতে পতাকা উড়বে না। জনগণই তা প্রতিহত করবে। ওয়াশিংটন টাইমসের লেখার আলোকে খালেদা জিয়াকে নতুনভাবে মূল্যায়ন এবং এ বিষয়ে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান অর্থমন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, একটি সাংবিধানিক পদে থেকে খালেদা জিয়া কীভাবে এ ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি একটি পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রোশ প্রকাশ করেছেন। একটি পরিবার যে পরিবারের প্রধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন বিপন্ন করে দেশবাসীর স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন সে কারণে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। খালেদার আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর ওই নিবন্ধের মধ্য দিয়ে তাঁর আসল চেহারা স্পষ্ট হয়েছে। তাঁর ভাষায় গোলাম আযম, মুজাহিদ, সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, জাতি যখন জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তখন তিনি এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেছেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় এগিয়ে আসুন। এটা যেন মার্কিনীদের প্রতি দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ প্রতিহত করার জন্য পাকিস্তানের আহ্বানের মতো মনে হয়েছে। খালেদা জিয়ার এ আবেদন অকল্পনীয় অপরাধ। এটা রাষ্ট্রদ্রোহী। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টার কারণে দেশের মানুষের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি মানবাধিকারের কথা বলেছেন, অথচ তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ওই নিবন্ধ খালেদা জিয়ার প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী সত্যিই ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। তবে সেই গৃহযুদ্ধ দেশে নয়, বিএনপি-জামায়াত নেতাদের গৃহে গৃহে শুরু হয়েছে। সংসদীয় পদ্ধতিতে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদকে অস্বীকার করে বিদেশে নালিশ করে প্রমাণ করলেন বিদেশে তাঁর প্রভু রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনা হোক।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের নির্বাচিত সরকারের ৪ বছর এবং আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছর পরিবারতান্ত্রিক অবস্থায় চলছে, এটা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে পাঠানো প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তারা দু’জনই উচ্চশিক্ষা অর্জন করে নিজ উপার্জনের মাধ্যমে জীবন চালাচ্ছেন। অথচ খালেদা জিয়া এরশাদ সরকারের সময়ে তার কাছ থেকে ভাতা নিয়ে তার সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যুগিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার এবং সন্তানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন হদিস নেই। তিনি খালেদা জিয়ার নিজের এবং তার সন্তানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, খালেদা জিয়া ইন্টারমিডিয়েট পড়া অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন। অথচ রেকর্ডে পাওয়া যায় দিনাজপুরের গার্লস স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ৩ বিষয়ে ফেল করেছেন। পাশাপাশি নির্বাচনের হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে মনোনয়ন বাতিল হবে মর্মে বিধান থাকায় তিনি নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে দাবি করেন। বড় ছেলে তারেক রহমান শাহীন স্কুল এবং সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। ক্যান্টনমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে তিনি মানিকগঞ্জ থেকে ডিগ্রী পাস করেছেন। অথচ এইচএসসি ও ডিগ্রী কোন্ কলেজ থেকে পাস করেছেন তার কোন রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন বলেন, খালেদা জিয়ার ওয়াশিংটন টাইমসে লেখা পড়লাম তখন উপলব্ধি করার চেষ্টা করলাম এমন লেখার যোগ্যতা তিনি কোথা থেকে অর্জন করলেন। এই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। পাকিস্তান সরকারকে ৭১ সালে অস্ত্র দিয়ে মার্কিন প্রশাসন সাহায্য করেছেন। পশ্চিমা দুনিয়া মৃত্যুদ-কে ঘৃণা করে এমনটি ভেবে খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে কথা বলছেন তা স্পষ্ট করেছেন। তার যে চক্রান্ত ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। আমার বিশ্বাস বিদেশীদের সাহায্য কামনা করে কোন লাভ হবে না। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাকে ওই নিবন্ধ যারা লিখে দিচ্ছে, তারা আপনাকে কিসের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন তা হয়ত আপনি বুঝতেও পারছেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পাগলা কুত্তা’ কামড়ায়নি যে আপনার নিবন্ধের প্রতি তারা সমর্থন দেবেন। আপনি একাত্তরে যা করেছেন, এখনও তা করতে চাইছেন। যেই আচরণ খালেদা জিয়া করছেন তা অন্য কেউ করলে ৩৩৩টি মামলা হতো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, তিনি নিবন্ধে যা লিখেছেন তা এদেশের মানুষ হিসেবে ব্যথিত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। অথচ তার জানা উচিত এখন দুই দেশের মধ্যে সবচাইতে ভাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চারটি বিশেষ কর্মসূচীর সব ক’টিতে বাংলাদেশ অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব সংলাপ হচ্ছে। খালেদা জিয়ার নিবন্ধের প্রথম প্যারাটিই অসত্য তথ্যে ভরপুর।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিদেশীদের কাছে নালিশ করে খালেদা জিয়া তাঁর রাজনৈতিক দৈন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। আপনি যত চেষ্টাই করুন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে পারবেন না। তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবেই।
এ্যাডভোকেট তারানা হালিম বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা যা করেছেন তা দেশের তরুণ প্রজন্ম ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধকে আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বলতে চান না। তিনি পরিবারতন্ত্রের কথা বলছেন, অথচ তদের সৃষ্টি হাওয়া ভবনের মাধ্যমে দেশের সম্পদ সব হাওয়া করতে দিয়েছিলেন। কতজনকে ডিঙ্গিয়ে তাঁর পুত্র তারেক জিয়াকে দলীয় পদ দেয়া হয়েছিল তা সবাই জানেন।
দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া ॥ ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার লেখা নিবন্ধ নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ওই নিবন্ধে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করে দেশের অর্থনীতিকে চাপের মুখে রাখার আহ্বান জানানোর প্রতিবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়েছে খালেদা জিয়ার এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশকে খাটো করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের প্রচার সম্পাদক ও পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য দেশদ্রোহীতার শামিল। খালেদা জিয়ার লেখার মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও প্রতিহিংসা প্রকাশিত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার যে মিশন নিয়ে তিনি দেশে ও বিদেশে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন, তা নতুন প্রজন্মের কাছে ক্ষমাহীন অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নিবন্ধে নিজের দেশকে খাটো করতে দ্বিধা করেননি। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতা কতটা অবিবেচক হলে এ ধরনের আহ্বান জানাতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়।
এদিকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানোর জন্য গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ওয়াশিংটন টাইমসের নিবন্ধে খালেদা জিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একাত্তরের বাংলাদেশের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের স্বীকৃতিদানকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে সে সময়ের ভূমিকা পালন করার কথা বলেছেন। অথচ এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাত্তরের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিরোধীতা করেনি। পাকিস্তানী শাসকদের অর্থ অস্ত্র ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে গণহত্যা ও অন্যায় আগ্রাসনকে সমর্থন যুগিয়েছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ যখন বিজয়ের পথে অগ্রসর হচ্ছে তখন সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে।
মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনা উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। পরে একে একে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা তোফায়েল আহমেদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আব্দুল মতিন খসরু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আবদুর রহমান, এ্যাডভোকেট তারানা হালিম, বেবী মওদুদ, এ্যাডভোকেট ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি, অপু উকিল, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, নাজমা আক্তার, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল এবং জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু। তবে হুইপ আসম ফিরোজ বক্তব্য না রাখলেও কারও কারও বক্তব্যে অসংসদীয় বক্তব্য রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তা এক্সপাঞ্জ করার অনুরোধ জানান।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব নস্যাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমস অনলাইনে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করে দেশদ্রোহের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এসব অভিযোগ করে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। তাঁর পায়ের নিচে মাটি নেই। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় তিনি যে ধরনের বক্তব্য রেখে চলেছেনÑ তাতে ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। দেশদ্রোহের দায়ে তাঁর বিচার হওয়া উচিত।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি অখ্যাত পত্রিকা ওয়াশিংটন টাইমস। যার কোন সার্কুলেশন নেই। তিনি যা লিখেছেন তা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের বিষয়ে তাঁর কোন চেতনা নেই তা তাঁর লেখার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেন, তিনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, কোন যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী ব্যক্তির গাড়িতে পতাকা উড়বে না। জনগণই তা প্রতিহত করবে। ওয়াশিংটন টাইমসের লেখার আলোকে খালেদা জিয়াকে নতুনভাবে মূল্যায়ন এবং এ বিষয়ে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান অর্থমন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, একটি সাংবিধানিক পদে থেকে খালেদা জিয়া কীভাবে এ ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি একটি পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রোশ প্রকাশ করেছেন। একটি পরিবার যে পরিবারের প্রধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন বিপন্ন করে দেশবাসীর স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন সে কারণে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। খালেদার আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর ওই নিবন্ধের মধ্য দিয়ে তাঁর আসল চেহারা স্পষ্ট হয়েছে। তাঁর ভাষায় গোলাম আযম, মুজাহিদ, সাঈদী যুদ্ধাপরাধী নন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, জাতি যখন জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তখন তিনি এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেছেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় এগিয়ে আসুন। এটা যেন মার্কিনীদের প্রতি দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ প্রতিহত করার জন্য পাকিস্তানের আহ্বানের মতো মনে হয়েছে। খালেদা জিয়ার এ আবেদন অকল্পনীয় অপরাধ। এটা রাষ্ট্রদ্রোহী। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টার কারণে দেশের মানুষের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি মানবাধিকারের কথা বলেছেন, অথচ তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ওই নিবন্ধ খালেদা জিয়ার প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী সত্যিই ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। তবে সেই গৃহযুদ্ধ দেশে নয়, বিএনপি-জামায়াত নেতাদের গৃহে গৃহে শুরু হয়েছে। সংসদীয় পদ্ধতিতে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে সংসদকে অস্বীকার করে বিদেশে নালিশ করে প্রমাণ করলেন বিদেশে তাঁর প্রভু রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনা হোক।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের নির্বাচিত সরকারের ৪ বছর এবং আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২ বছর পরিবারতান্ত্রিক অবস্থায় চলছে, এটা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে পাঠানো প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তারা দু’জনই উচ্চশিক্ষা অর্জন করে নিজ উপার্জনের মাধ্যমে জীবন চালাচ্ছেন। অথচ খালেদা জিয়া এরশাদ সরকারের সময়ে তার কাছ থেকে ভাতা নিয়ে তার সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যুগিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার এবং সন্তানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন হদিস নেই। তিনি খালেদা জিয়ার নিজের এবং তার সন্তানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, খালেদা জিয়া ইন্টারমিডিয়েট পড়া অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন। অথচ রেকর্ডে পাওয়া যায় দিনাজপুরের গার্লস স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ৩ বিষয়ে ফেল করেছেন। পাশাপাশি নির্বাচনের হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে মনোনয়ন বাতিল হবে মর্মে বিধান থাকায় তিনি নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে দাবি করেন। বড় ছেলে তারেক রহমান শাহীন স্কুল এবং সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। ক্যান্টনমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে তিনি মানিকগঞ্জ থেকে ডিগ্রী পাস করেছেন। অথচ এইচএসসি ও ডিগ্রী কোন্ কলেজ থেকে পাস করেছেন তার কোন রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন বলেন, খালেদা জিয়ার ওয়াশিংটন টাইমসে লেখা পড়লাম তখন উপলব্ধি করার চেষ্টা করলাম এমন লেখার যোগ্যতা তিনি কোথা থেকে অর্জন করলেন। এই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। পাকিস্তান সরকারকে ৭১ সালে অস্ত্র দিয়ে মার্কিন প্রশাসন সাহায্য করেছেন। পশ্চিমা দুনিয়া মৃত্যুদ-কে ঘৃণা করে এমনটি ভেবে খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে কথা বলছেন তা স্পষ্ট করেছেন। তার যে চক্রান্ত ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। আমার বিশ্বাস বিদেশীদের সাহায্য কামনা করে কোন লাভ হবে না। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাকে ওই নিবন্ধ যারা লিখে দিচ্ছে, তারা আপনাকে কিসের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন তা হয়ত আপনি বুঝতেও পারছেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘পাগলা কুত্তা’ কামড়ায়নি যে আপনার নিবন্ধের প্রতি তারা সমর্থন দেবেন। আপনি একাত্তরে যা করেছেন, এখনও তা করতে চাইছেন। যেই আচরণ খালেদা জিয়া করছেন তা অন্য কেউ করলে ৩৩৩টি মামলা হতো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, তিনি নিবন্ধে যা লিখেছেন তা এদেশের মানুষ হিসেবে ব্যথিত হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। অথচ তার জানা উচিত এখন দুই দেশের মধ্যে সবচাইতে ভাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চারটি বিশেষ কর্মসূচীর সব ক’টিতে বাংলাদেশ অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব সংলাপ হচ্ছে। খালেদা জিয়ার নিবন্ধের প্রথম প্যারাটিই অসত্য তথ্যে ভরপুর।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিদেশীদের কাছে নালিশ করে খালেদা জিয়া তাঁর রাজনৈতিক দৈন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। আপনি যত চেষ্টাই করুন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে পারবেন না। তাদের বিচার এদেশের মাটিতে হবেই।
এ্যাডভোকেট তারানা হালিম বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা যা করেছেন তা দেশের তরুণ প্রজন্ম ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধকে আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বলতে চান না। তিনি পরিবারতন্ত্রের কথা বলছেন, অথচ তদের সৃষ্টি হাওয়া ভবনের মাধ্যমে দেশের সম্পদ সব হাওয়া করতে দিয়েছিলেন। কতজনকে ডিঙ্গিয়ে তাঁর পুত্র তারেক জিয়াকে দলীয় পদ দেয়া হয়েছিল তা সবাই জানেন।
দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া ॥ ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার লেখা নিবন্ধ নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ওই নিবন্ধে খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করে দেশের অর্থনীতিকে চাপের মুখে রাখার আহ্বান জানানোর প্রতিবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়েছে খালেদা জিয়ার এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশকে খাটো করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের প্রচার সম্পাদক ও পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য দেশদ্রোহীতার শামিল। খালেদা জিয়ার লেখার মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও প্রতিহিংসা প্রকাশিত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার যে মিশন নিয়ে তিনি দেশে ও বিদেশে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন, তা নতুন প্রজন্মের কাছে ক্ষমাহীন অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নিবন্ধে নিজের দেশকে খাটো করতে দ্বিধা করেননি। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতা কতটা অবিবেচক হলে এ ধরনের আহ্বান জানাতে পারেন তা সহজেই অনুমেয়।
এদিকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক এক যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানোর জন্য গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ওয়াশিংটন টাইমসের নিবন্ধে খালেদা জিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একাত্তরের বাংলাদেশের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের স্বীকৃতিদানকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে সে সময়ের ভূমিকা পালন করার কথা বলেছেন। অথচ এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাত্তরের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিরোধীতা করেনি। পাকিস্তানী শাসকদের অর্থ অস্ত্র ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে গণহত্যা ও অন্যায় আগ্রাসনকে সমর্থন যুগিয়েছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ যখন বিজয়ের পথে অগ্রসর হচ্ছে তখন সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে।
No comments