জলবায়ু সম্মেলনঃ স্থানীয় পর্যায়ে মিডিয়া ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক গড়তে হবে by মাহমুদ মেনন

আলোচনা ঘুরপাক খেয়েছে গোটা বিশ্বে। বিশ্ব উষ্ণায়নের উদাহরণ সাইবেরিয়া, হিমালয় হয়ে চর কুকরীমুকরী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।  উঠে এসেছে জলবায়ু রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের বাঘা বাঘা নাম, বড় বড় জলবায়ু সম্মেলনের কথা।
এসব জলবায়ু সম্মেলনে ফল কতটা হয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। তবে সবার বক্তব্যের একটাই মোদ্দা কথা, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে সংবাদমাধ্যমকে আরও জোরদার ভূমিকা নিতে হবে।
সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারের হোটেল ওশেন প্যারাডাইসে বিশ্বের ২২টি দেশের সাংবাদিক, শিক্ষক, গবেষকদের একটি বড় দল দুইদিন টানা আলোচনা করলেন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সংবাদমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে। সাংবাদিকতার জন্য এই জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলেই উঠে এলো তাদের বক্তব্যে।Climet-change-1

নরওয়েভিত্তিক মিডিয়া ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুইদিনের সম্মেলন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়।

তবে শেষ করার আগে বক্তারা স্থানীয় পর্যায়েও এ ধরনের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পক্ষে মত দেন। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কটির পাশাপাশি স্থানীয়ভাবেও নেটওয়ার্ক গড়ে উঠলে সাংবাদিকদের পক্ষে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা সহজ হবে বলেও মত দেন তারা।

মিডিয়া ক্লাইমেট নেটওয়ার্কের কো-চেয়ারপার্সন অধ্যাপক এলিজাবেথ আইডে বলেন, “সাংবাদিকদের গবেষণার সঙ্গেও সম্পৃক্ত হতে হবে। তাদের হাতেও থাকতে হবে গবেষণালব্ধ তথ্য, তত্ত্ব ও জ্ঞান।”

তিনি বলেন, “আমরা গবেষণায় দেখেছি, সবশেষ কপ-১৭ এর পরে সংবাদমাধ্যমগুলো জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে খবর প্রকাশ কমিয়ে দিয়েছে।”

এ বিষয়ে ফ্লোর নিয়ে কথা বলেন, যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার খ্যাতনামা সাংবাদিক জন ভাইডাল।

তিনি বলেন, “এটা সত্য, সংবাদপত্রগুলোতে রিপোর্ট কমেছে। তবে একই সঙ্গে এও দেখতে হবে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতিও চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে। ফলে, সংবাদপত্রগুলোর ফোকাস পয়েন্ট বার বারই ভিন্নদিকে চলে যাচ্ছে।”

ফিনল্যান্ডের প্যামপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিস্টু কুনেলিয়াস অবশ্য এর জন্য কপ-১৭ এ ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেছেন।
Climet-change-22
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে গুরুত্ব নিয়ে সংবদপত্রগুলোর নিজ উদ্যোগেই রিপোর্টিং করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আখতার সুলতানা।

আর দুইদিন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে তাদের উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার বাধাগুলো দূর করতে করণীয় দিক নির্ধারণ করার ওপর জোর দেন ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়েজিয়ান রাষ্ট্রদূত র‌্যাগনে বার্টে লান্ড।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন আখতার সুলতানা বলেন, “ক্লাইমেট চেঞ্জ ইস্যুতে রিপোর্টিং সাংবাদিকতা শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তিরও সময় এসেছে।”

কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ‘মিডিয়া মিটস ক্লাইমেট: দ্য চ্যালেঞ্জ ফর গ্লোবাল জার্নালিজম’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ফিনল্যান্ডের প্যামপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রিস্টু কুনেলিয়াস ও মিডিয়া ক্লাইমেট নেটওয়ার্কের কো-চেয়ারপার্সন অধ্যাপক এলিজাবেথ আইডে যৌথভাবে এ বইটি লিখেছেন।

বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকতায় এখন জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর সে বিষয়টি উঠে এসেছে গবেষণা থেকে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকরা তাদের ফাইন্ডিংস তুলে ধরে লিখেছেন, মিডিয়া মিটস ক্লাইমেট নামের বইটিতে।

No comments

Powered by Blogger.