ওমানে বাংলাদেশী এক নারীর করুণ কাহিনী

ওমানে গৃহপরিচারিকার কাজে গিয়েই অপহরণ ও দীর্ঘ প্রায় ১ মাস যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের এক নারী। এ ঘটনার মূলে রয়েছে অপর এক বাংলাদেশী। ওমান বিমানবন্দর থেকে ওই নারীকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উদ্ধার করেন।
এদিকে দেশটিতে বসবাসরত এক ভারতীয় নাগরিক অসহায় বাংলাদেশী ওই নারীকে ওমানি মুদ্রায় ৫০০ রিয়াল দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। টাইমস অব ওমানকে টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওই ভারতীয় বলেন, আমাদের অভাবী ও দুর্বলদের সহযোগিতা করতে হবে। সেটাই সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাছে আশা করেন। এর আগেই দূতাবাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে তিনি ওই অর্থ প্রদান করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ওমান। গত ৬ই জানুয়ারি সঙ্কটাবস্থায় পড়ে যাওয়া ওই নারীর বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছিল। ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে, গত বছরের ৮ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে ওই গৃহপরিচারিকা ওমানের মাসকাট বিমানবন্দরে নামেন। অপর এক বাংলাদেশী ওই নারীকে তার নিয়োগকর্তা পরিচয় দিয়ে বিমানবন্দর থেকে তাকে অপহরণ করে। ওই কর্মকর্তা জানান, তাকে দূরবর্তী একটি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। একটি কক্ষে আটকে রেখে তার ওপর প্রায় ১ মাস যৌন নির্যাতন চালানো হয়। গত শনিবার রাতে তাকে বিমানবন্দরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতকারী। বাংলাদেশী ওই কর্মকর্তা বলেন, একজন সাংবাদিকের কাছ থেকে ফোন কল পেয়ে আমরা দ্রুত বিমানবন্দরে যাই। সেখান থেকে রাত প্রায় ১১টার দিকে ওই নারীকে উদ্ধার করি। মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়া ওই নারী বর্তমানে সরকারি একটি বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। ওই কর্মকর্তা জানান, যেহেতু তিনি ওমানে নতুন এসেছেন, তাকে কোথায় আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়েছিল তিনি তার বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারেননি। বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতকারী ওই নারীর হাতে একটি প্যাকেট দিয়ে যায়। তাতে ছিল পাসপোর্ট, বিমানের টিকেট ও ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (বিএমইটি) ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড। ওমান পুলিশ দুষ্কৃতকারী, প্রকৃত নিয়োগকারী ও মধ্যস্থতায় থাকা ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পুরো র‌্যাকেটটিকে ধরতে অভিযান চালাবেন তারা।

No comments

Powered by Blogger.