মোবাইল ফোনে জালিয়াতি-পরীক্ষার হলে ফোন কেন?

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় নয়, সব ধরনের পরীক্ষার হলেই মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ থাকার কথা। পরীক্ষার হলের নিয়মও তাই। মোবাইল ফোন পরীক্ষার হলের নীরব পরিবেশে বাধা সৃষ্টি করে। পরীক্ষা চলাকালে কেউ কথা বলে উঠলে তা অনেকের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, এমনকি এসএমএস এলেও শব্দে সমস্যা হতে পারে।


তাই সাধারণ ভব্যতা হলো, যে কোনো পাবলিক অনুষ্ঠান, বক্তৃতা, সভা ও পরীক্ষার হলে উপস্থিত ব্যক্তিরা মোবাইল ফোন বন্ধ রাখবেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এটি অবশ্যপালনীয় আচার হওয়া উচিত। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন আনার নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসৃত হওয়া উচিত। ভুলে কেউ আনলেও তা হলের পরিদর্শকের কাছে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে নানা অনাসৃষ্টি হতে পারে। এমন অনাসৃষ্টিই ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়। লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা সঙ্গে মোবাইল ফোন এনেছেন কি-না তা পরীক্ষা করা হয়নি। সুযোগ বুঝে কিছু পরীক্ষার্থী মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে হলের বাইরে থেকে প্রশ্নের সঠিক উত্তর জেনে নিয়েছেন। অপরাধটি অত্যন্ত গর্হিত। এ অপরাধের উপযুক্ত বিহিত হওয়া দরকার। অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের যেমন শাস্তি হওয়া দরকার, তেমনি পরীক্ষার হলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদেরও সজাগ ও দায়িত্বশীল হতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তিকে ঠেকিয়ে রাখার কোনো উপায় নেই। ফলে নিত্যনতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে হবে, সেগুলো কীভাবে নানা অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে সে সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা নিতে হবে। আর এসব অপরাধ দমনে নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে অনুসৃত হতে হবে। মোবাইলের মাধ্যমে জালিয়াতি করতে গিয়ে এ দফায় জালিয়াতচক্র ধরা পড়েছে, সেটি ভালো খবর। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সচেতনতাও জরুরি। প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন স্মার্ট একটি প্রজন্ম যদি জালিয়াতি করে, নকল করে ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এগোতে চায়, তবে এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?

No comments

Powered by Blogger.