'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' by একরামুল হক শামীম
বিটিভিতে ১৯৭৪ সাল থেকে ঈদ উপলক্ষে জব্বর আলী সিরিজের নাটক প্রচার শুরু হয়। আমজাদ হোসেনের লেখা ও অভিনীত এই নাটক সিরিজ দর্শকদের মধ্যে সে সময় অনেক সাড়া জাগায়। এখনও ঈদে জব্বর আলী সিরিজের নাটক প্রচারিত হয়। জব্বর আলী সিরিজের নাটকের একটি জনপ্রিয় সংলাপ_'টাকা দেন, দুবাই যাইমু।'
এই সংলাপটি এক সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়িয়েছে। অবশ্য 'টাকা দেন, দুবাই যামু' পদ্ধতি প্রয়োগ করে কেউ সত্যি সত্যিই দুবাই গিয়েছিলেন কি-না তা আমাদের জানা নেই। দুবাই যাওয়া জনশক্তির সংখ্যা সঠিকভাবে জানা না গেলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়া লোকের সংখ্যা জানা সম্ভব। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৯৭৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৭৯১ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করতে গেছে, যা মোট জনশক্তি রফতানির শতকরা ২৬ ভাগ।
'টাকা দেন, দুবাই যামু' সংলাপটি মনে পড়ছে ভিন্ন একটি প্রসঙ্গে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে এক বন্ধু একটি নোট দিয়েছে, যার শিরোনাম_ 'মাননীয় মন্ত্রী, টাকা দেন, গাড়ি কিনমু।' লেখাটার শিরোনাম পড়ে প্রথমেই যে প্রশ্নটা মাথায় এসে উপস্থিত হয়েছিল তা হলো_ 'টাকা দেন, দুবাই যামু' সংলাপের রূপান্তর কি তাহলে 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' হয়ে গেল? দুবাই যাওয়ার মতোও কি মধ্যবিত্তের 'শখ' হয়েছে গাড়ি কেনার। কিন্তু লেখার পুরোটা পড়লে ভিন্ন চিন্তা আসতে বাধ্য। রাস্তায় চলতে গেলে যানবাহন নিয়ে যে সংকটের মধ্যে প্রতিনিয়ত আমাদের পড়তে হয় তারই বহিঃপ্রকাশ এই লেখা। একদিকে রিকশায় উঠলেই সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়ার খড়্গ। রিকশা ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। সিএনজি ভাড়া বেড়েছে। রিকশা-সিএনজি ঠিকমতো পাওয়া এখন ভাগ্যের ব্যাপার। অন্যদিকে পাবলিক বাসগুলোর কী অবস্থা তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
ফেসবুক নোটের লেখক তার লেখা শেষ করেছেন এভাবে_ 'মাননীয় মন্ত্রী, ডিএমপি কমিশনার, আমলা, গাড়িওয়ালা সাহেবরা, আপনারা আমাদের বা রিকশাওয়ালাদের কষ্ট বুঝবেন না। কারণ, আপনারা চোখে লাল চশমা পইরা চলেন। আমরা গরিবরা বাসেও উঠতে পারি না, রিকশায়ও চড়তে পারি না। আমাদের জন্য সব নিষিদ্ধ! আমরা কি তাইলে রাস্তায় বাইরমু না? মাননীয় মন্ত্রী, টাকা দেন! গাড়ি কিনমু!' ঢাকার রাস্তার এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' জাতীয় সংলাপ বলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। নগরবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কিন্তু উল্টোপিঠে আরেকটি ভাবনা রয়েছে। ধারা যাক রূপকথার গল্পের মতো আমাদের 'মাননীয় মন্ত্রী' চাহিদামতো টাকা দিয়ে দিলেন। তখন সবাই যদি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উপস্থিত হয়, রাস্তার অবস্থা কী হবে কেউ কি ভেবে দেখেছেন? কেউ 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' উপায় অবলম্বন করে গাড়ি কিনলে যদি আপনার মনে আপত্তি তৈরি হয়, তাহলে জেনে রাখুন_ বিআরটিএর তথ্য অনুসারে প্রতিদিন প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ঢাকার রাস্তায় নামছে। ঢাকার রাস্তায় বর্তমানে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা দুই লাখ ১০ হাজারের বেশি। মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। এই ২ শতাংশ মানুষের ৫ শতাংশ দৈনিক ট্রিপের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। রাস্তায় গতি বাড়ানোর কথা বলে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে রিকশা পরিবহন। অথচ যেখানে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন, সেখানে গুরুত্ব নেই। পাবলিক পরিবহনে গুরুত্ব নেই এখানে। লোকজনকে পাবলিক বাসে আগ্রহী করে তুলতে হলে সুযোগ-সুবিধা অন্য যে কোনো সার্ভিসের তুলনায় বেশি করতে হবে। পাবলিক বাস ব্যবহার করে যাতে নির্দিষ্ট সময়ে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে কোথাও পেঁৗছানো যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
'টাকা দেন, দুবাই যামু' সংলাপটি মনে পড়ছে ভিন্ন একটি প্রসঙ্গে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে এক বন্ধু একটি নোট দিয়েছে, যার শিরোনাম_ 'মাননীয় মন্ত্রী, টাকা দেন, গাড়ি কিনমু।' লেখাটার শিরোনাম পড়ে প্রথমেই যে প্রশ্নটা মাথায় এসে উপস্থিত হয়েছিল তা হলো_ 'টাকা দেন, দুবাই যামু' সংলাপের রূপান্তর কি তাহলে 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' হয়ে গেল? দুবাই যাওয়ার মতোও কি মধ্যবিত্তের 'শখ' হয়েছে গাড়ি কেনার। কিন্তু লেখার পুরোটা পড়লে ভিন্ন চিন্তা আসতে বাধ্য। রাস্তায় চলতে গেলে যানবাহন নিয়ে যে সংকটের মধ্যে প্রতিনিয়ত আমাদের পড়তে হয় তারই বহিঃপ্রকাশ এই লেখা। একদিকে রিকশায় উঠলেই সর্বনিম্ন ১০ টাকা ভাড়ার খড়্গ। রিকশা ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। সিএনজি ভাড়া বেড়েছে। রিকশা-সিএনজি ঠিকমতো পাওয়া এখন ভাগ্যের ব্যাপার। অন্যদিকে পাবলিক বাসগুলোর কী অবস্থা তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন।
ফেসবুক নোটের লেখক তার লেখা শেষ করেছেন এভাবে_ 'মাননীয় মন্ত্রী, ডিএমপি কমিশনার, আমলা, গাড়িওয়ালা সাহেবরা, আপনারা আমাদের বা রিকশাওয়ালাদের কষ্ট বুঝবেন না। কারণ, আপনারা চোখে লাল চশমা পইরা চলেন। আমরা গরিবরা বাসেও উঠতে পারি না, রিকশায়ও চড়তে পারি না। আমাদের জন্য সব নিষিদ্ধ! আমরা কি তাইলে রাস্তায় বাইরমু না? মাননীয় মন্ত্রী, টাকা দেন! গাড়ি কিনমু!' ঢাকার রাস্তার এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' জাতীয় সংলাপ বলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। নগরবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। কিন্তু উল্টোপিঠে আরেকটি ভাবনা রয়েছে। ধারা যাক রূপকথার গল্পের মতো আমাদের 'মাননীয় মন্ত্রী' চাহিদামতো টাকা দিয়ে দিলেন। তখন সবাই যদি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উপস্থিত হয়, রাস্তার অবস্থা কী হবে কেউ কি ভেবে দেখেছেন? কেউ 'টাকা দেন, গাড়ি কিনমু' উপায় অবলম্বন করে গাড়ি কিনলে যদি আপনার মনে আপত্তি তৈরি হয়, তাহলে জেনে রাখুন_ বিআরটিএর তথ্য অনুসারে প্রতিদিন প্রায় ১৮৫টি গাড়ি ঢাকার রাস্তায় নামছে। ঢাকার রাস্তায় বর্তমানে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা দুই লাখ ১০ হাজারের বেশি। মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। এই ২ শতাংশ মানুষের ৫ শতাংশ দৈনিক ট্রিপের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। রাস্তায় গতি বাড়ানোর কথা বলে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে রিকশা পরিবহন। অথচ যেখানে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন, সেখানে গুরুত্ব নেই। পাবলিক পরিবহনে গুরুত্ব নেই এখানে। লোকজনকে পাবলিক বাসে আগ্রহী করে তুলতে হলে সুযোগ-সুবিধা অন্য যে কোনো সার্ভিসের তুলনায় বেশি করতে হবে। পাবলিক বাস ব্যবহার করে যাতে নির্দিষ্ট সময়ে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে কোথাও পেঁৗছানো যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
No comments