আবিষ্কারের সুফল পেতে চাই সরকারি গবেষণা-সহায়তা-কৃষক অছিউদ্দিনকে অভিনন্দন

দিনাজপুরের বিরামপুরে যমজ ধানের চাষ হচ্ছে, যেখানে প্রতিটি ধানের মধ্যে দুটি করে চাল পাওয়া যাচ্ছে। আর কেউ নয়, খোদ কৃষকই এই জাতের ধানের আবিষ্কর্তা। দিনাজপুরের বিরামপুরের কৃষক অছিউদ্দিনকে অভিনন্দন, তাঁর কল্যাণেই নতুন জাতের একটি ধানের অধিকারী হলো বাংলাদেশ। ধান গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীতে এ ধরনের ধানের জাতের মধ্যে বাংলাদেশেরটিই সবচেয়ে উন্নত।


এখন জাতীয় ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিরির মাধ্যমে ত্রুটি সারিয়ে এই জাত নিয়ে সর্বত্র প্রচলন হওয়া দরকার।
হাজার হাজার বছর ধরে মূলত কৃষকেরাই ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করে চলেছেন। নতুন জাতের ধান শনাক্ত করে চাষবাসের মাধ্যমে সেগুলোর সংরক্ষণের কৃতিত্বও মূলত তাঁদের। পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পাওয়া ঐতিহ্যিক জ্ঞান ও নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা দিয়ে প্রায়ই কৃষকেরা ধান চাষে নতুন গতি নিয়ে আসেন। যমজ জাতের ধান আবিষ্কার তেমনই এক কৃতিত্ব।
খুশির আরও কারণ রয়েছে। যমজ চালের ধান কেবল বাড়তি ফসল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছে না, বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিও কমাচ্ছে। সাধারণ ধানগাছের চেয়ে লম্বা হওয়ায় বন্যায় ডুবে যাওয়া কিংবা ডুবে থেকে গোড়া নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থেকেও মুক্ত এই ধান। তবে এই ধানের দুটি দুর্বলতা দেখা গেছে: ১. আবাদের অর্ধেক ধানে যমজ চাল মেলে এবং ২. বিঘাপ্রতি ফলনও তুলনামূলক কম। বিরির বিজ্ঞানীরা বলছেন, গবেষণার মাধ্যমে এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তা যদি হয়, তবে উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড ধানের বিকল্প হতে পারে এই ধান। হাইব্রিড ধানের বীজ থেকে একবারই ধান হয় বলে বীজের ওপর কৃষকের অধিকার থাকে না। কিন্তু নতুন জাতের এই ধানের সংস্কার করা গেলে ফলন যেমন বাড়বে, তেমনি বীজের জন্য বাজারের ওপর নির্ভরশীলতাও কমবে।
এখন সরকারের কৃষি বিভাগ যদি উদ্যোগী হয়ে যমজ চালের ধানের ওপর আরও গবেষণা করে, মাঠপর্যায়ে ফলনের প্রচলন ঘটায়, তাহলে কৃষি ও কৃষক সত্যিকারভাবে উপকৃত হবেন। খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় এই জাতের ধান যে আশা তৈরি করেছে, তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। দেশে এ রকম নতুন নতুন যত উদ্ভাবন কৃষকের মাধ্যমে হচ্ছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা, পেটেন্ট করা এবং মাঠপর্যায়ে প্রয়োগ করার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।aaaaaaaaax

No comments

Powered by Blogger.