ক্রেন নয়, বাস তুলে ছাত্রীদের বের করল জনতা by আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ
(রাজশাহী পবা উপজেলার কাটাখালীতে আজ রোববার দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে এভাবেই টেনে তোলেন সাধারণ মানুষ। ছবি: শহীদুল ইসলাম) বেলা
একটা পাঁচ মিনিট। উল্টে যাওয়া বাসের তলা থেকে তখনো গোঙানির আওয়াজ আসছে।
আওয়াজ শুনে সমস্বরে চিৎকার উঠল ‘এই বেঁচে আছে, বেঁচে আছে’।
তখনো বাসের তলায় তিনজন ছাত্রী চাপা পড়ে ছিলেন। বাইরে থেকে ঠিক চাকার নিচে পড়া একজন ছাত্রীর পা দেখা যাচ্ছিল। বাস উঁচু না করে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী ঘটনাস্থলে গেছেন। তাঁদের কাছেও উদ্ধারসামগ্রী নেই। এরই মধ্যে সেখানে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছেন। বাসটি সোজা করতে ক্রেনের জন্য অপেক্ষা না করে সবাই হাত লাগালেন। একটু উঁচু হলো বাস। কয়েকজন গাছের ডাল ভেঙে ঠেকা দিলেন। একে একে বের করা করা হলো তিন ছাত্রীকে। তাঁদের মধ্যে তখন শুধু একজন কথা বলে উঠলেন। অন্য দুজন নিথর।
ইসলাম পরিবহনের যাত্রী ছিলেন পিন্টু নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি নগরের হাজরাপুকুর এলাকায়। দুর্ঘটনার সময় তিনি আতঙ্কে চাদর দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ছিলেন। কিছুক্ষণ পরেই টের পান, তাঁর কিছু হয়নি। তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন। লাকি পরিবহনের পেছনের কাচ লাথি দিয়ে ভেঙে পাঁচজন ছাত্রীকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
দুর্ঘটনার শিকার বাসের আহত যাত্রী রাজশাহী কলেজের সমাজবিজ্ঞান সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী খালেদা খাতুন জানান, তাঁর বাড়ি চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামে। পরীক্ষা শেষে তিনি ওই বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসের দরজার পরে দ্বিতীয় সারিতে বসা ছিলেন তিনি। কাটাখালীতে গিয়ে শুধু মনে হলো বাসটি ধাক্কা খেল। তারপর মুহূর্তের মধ্যে উল্টে গেল। অনেক ছাত্রী এসে তাঁর গায়ের ওপরে এসে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য তাঁর জ্ঞান ছিল না। পরে তাঁকে লোকজন টেনে বের করেন। হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে খালেদাকে। পা দুটি নাড়াতে পারছেন না তিনি।
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার কাঁটাখালীতে রাজশাহী কলেজের ছাত্রীদের বহনকারী বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে রাস্তা থেকে নিচে ঢালে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন ছাত্রী মারা গেছেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন ছাত্রী।
নিহত ছাত্রীরা হচ্ছেন: মাহমুদা আক্তার, বিউটি খাতুন ও শারমিন আক্তার। মাহমুদা আক্তার রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার কাপাশিয়া গ্রামে। বিউটি খাতুন রাজশাহী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার দুর্গাপুর উপজেলার রইপাড়া গ্রামে। শারমিন রাজশাহী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার চকধাদাস গ্রামে।
বিকেল চারটার দিকে তিন ছাত্রীর লাশ রাজশাহী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিয়ে আসা হলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। বিকেল চারটা ১০ মিনিটের দিকে মাইক্রোবাসে করে লাশগুলোকে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও তাঁর সহকারীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য আটটি বাস রয়েছে। এর মধ্যে একটি কলেজের নিজস্ব। আর অন্য সাতটি ভাড়া করা। ভাড়া করা বাসের মধ্যে লাকি পরিবহন নামে বাসটি প্রতিদিন সকালে পুঠিয়ার বানেশ্বর থেকে ছাত্রীদের নিয়ে আসে আবার কলেজের ক্লাস শেষে পৌঁছে দিয়ে যায়। আজ বেলা পৌনে একটার দিকে কাটাখালীতে বিপরীত দিক থেকে আসা ইসলাম পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাকি পরিবহন রাস্তার উত্তর পাশের ঢালে উল্টে যায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ইসলাম পরিবহনের বাসটি রাস্তার ওপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাসের সামনের কাচটি খুলে নিচে পড়ে আছে। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন বাসের জানালা ও সামনে পেছনের কাচ ভেঙে ছাত্রীদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
হাসপাতালে ভর্তি আহত ছাত্রীরা হচ্ছেন: উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের লাবণী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সেতু ও ফজিলা, সমাজকর্ম বিভাগের আদুরী, অর্থনীতি বিভাগের সুমী ও তুফানী হাওলাদার, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মুন্নী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের খালেদা, মিতা, আফিয়াসহ মোট ১৩ জন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামীকাল সোমবার কলেজের সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মিয়া জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ফোনে তাঁদের জানিয়েছেন, সরকারিভাবে চিকিৎসার সব খরচ বহন করা হবে।
তখনো বাসের তলায় তিনজন ছাত্রী চাপা পড়ে ছিলেন। বাইরে থেকে ঠিক চাকার নিচে পড়া একজন ছাত্রীর পা দেখা যাচ্ছিল। বাস উঁচু না করে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মী ঘটনাস্থলে গেছেন। তাঁদের কাছেও উদ্ধারসামগ্রী নেই। এরই মধ্যে সেখানে শত শত মানুষ জড়ো হয়েছেন। বাসটি সোজা করতে ক্রেনের জন্য অপেক্ষা না করে সবাই হাত লাগালেন। একটু উঁচু হলো বাস। কয়েকজন গাছের ডাল ভেঙে ঠেকা দিলেন। একে একে বের করা করা হলো তিন ছাত্রীকে। তাঁদের মধ্যে তখন শুধু একজন কথা বলে উঠলেন। অন্য দুজন নিথর।
ইসলাম পরিবহনের যাত্রী ছিলেন পিন্টু নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি নগরের হাজরাপুকুর এলাকায়। দুর্ঘটনার সময় তিনি আতঙ্কে চাদর দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ছিলেন। কিছুক্ষণ পরেই টের পান, তাঁর কিছু হয়নি। তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন। লাকি পরিবহনের পেছনের কাচ লাথি দিয়ে ভেঙে পাঁচজন ছাত্রীকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
দুর্ঘটনার শিকার বাসের আহত যাত্রী রাজশাহী কলেজের সমাজবিজ্ঞান সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী খালেদা খাতুন জানান, তাঁর বাড়ি চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামে। পরীক্ষা শেষে তিনি ওই বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসের দরজার পরে দ্বিতীয় সারিতে বসা ছিলেন তিনি। কাটাখালীতে গিয়ে শুধু মনে হলো বাসটি ধাক্কা খেল। তারপর মুহূর্তের মধ্যে উল্টে গেল। অনেক ছাত্রী এসে তাঁর গায়ের ওপরে এসে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য তাঁর জ্ঞান ছিল না। পরে তাঁকে লোকজন টেনে বের করেন। হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে খালেদাকে। পা দুটি নাড়াতে পারছেন না তিনি।
আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার কাঁটাখালীতে রাজশাহী কলেজের ছাত্রীদের বহনকারী বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে রাস্তা থেকে নিচে ঢালে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন ছাত্রী মারা গেছেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন ছাত্রী।
নিহত ছাত্রীরা হচ্ছেন: মাহমুদা আক্তার, বিউটি খাতুন ও শারমিন আক্তার। মাহমুদা আক্তার রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার কাপাশিয়া গ্রামে। বিউটি খাতুন রাজশাহী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার দুর্গাপুর উপজেলার রইপাড়া গ্রামে। শারমিন রাজশাহী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার চকধাদাস গ্রামে।
বিকেল চারটার দিকে তিন ছাত্রীর লাশ রাজশাহী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিয়ে আসা হলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। বিকেল চারটা ১০ মিনিটের দিকে মাইক্রোবাসে করে লাশগুলোকে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও তাঁর সহকারীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের শিক্ষার্থী পরিবহনের জন্য আটটি বাস রয়েছে। এর মধ্যে একটি কলেজের নিজস্ব। আর অন্য সাতটি ভাড়া করা। ভাড়া করা বাসের মধ্যে লাকি পরিবহন নামে বাসটি প্রতিদিন সকালে পুঠিয়ার বানেশ্বর থেকে ছাত্রীদের নিয়ে আসে আবার কলেজের ক্লাস শেষে পৌঁছে দিয়ে যায়। আজ বেলা পৌনে একটার দিকে কাটাখালীতে বিপরীত দিক থেকে আসা ইসলাম পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লাকি পরিবহন রাস্তার উত্তর পাশের ঢালে উল্টে যায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ইসলাম পরিবহনের বাসটি রাস্তার ওপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাসের সামনের কাচটি খুলে নিচে পড়ে আছে। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন বাসের জানালা ও সামনে পেছনের কাচ ভেঙে ছাত্রীদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
হাসপাতালে ভর্তি আহত ছাত্রীরা হচ্ছেন: উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের লাবণী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সেতু ও ফজিলা, সমাজকর্ম বিভাগের আদুরী, অর্থনীতি বিভাগের সুমী ও তুফানী হাওলাদার, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মুন্নী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের খালেদা, মিতা, আফিয়াসহ মোট ১৩ জন।
কলেজ কর্তৃপক্ষ আগামীকাল সোমবার কলেজের সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মিয়া জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ফোনে তাঁদের জানিয়েছেন, সরকারিভাবে চিকিৎসার সব খরচ বহন করা হবে।
No comments