বিক্ষোভে দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র
শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ এরিক গার্নারের মৃত্যুর ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে বিক্ষোভ। রয়টার্স |
শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ নিহত এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়ার পর পর দুটি ঘটনায় উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। পুলিশের হাতে মধ্যবয়সী কৃষ্ণাঙ্গ এরিক গার্নারের মৃত্যুর ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিন নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে আরেক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউন হত্যা নিয়ে প্রতিবাদের রেশ কাটতে না কাটতেই নিউইয়র্কে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে এরিক গার্নার নামের ৪৩ বছর বয়সী আরেক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তার করার সময় ‘চোকহোল্ড’ প্রক্রিয়ায় শ্বাসরুদ্ধ করায় দম বন্ধ হয়ে মারা যান গার্নার। তবে ঘটনা তদন্তে গঠিত গ্র্যান্ড জুরি অভিযুক্ত শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ড্যানিয়েল প্যান্টালিওকে অভিযুক্ত না করার সিদ্ধান্ত দেন গত বুধবার। ওই সিদ্ধান্তের পর পরই বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অনেক বড় শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। হাজার হাজার লোক এসব বিক্ষোভে অংশ নিলেও তা প্রথম দিনের মতোই শান্তিপূর্ণ ছিল। অবশ্য স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি প্রতিবন্ধক সরানোর চেষ্টা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ আরও অন্তত ৩৩ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। নিউইয়র্কে বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ফলি স্কয়ার।
সেখানে উপস্থিত হাজারো বিক্ষোভকারীর অনেকের হাতে ছিল ‘শহর অচল করে দাও’, ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনেরও দাম আছে’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড। ম্যানহাটন, ব্রুকলিনসহ বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সেতুগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। শিকাগো, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া, বাল্টিমোর ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ বিভিন্ন শহরেও বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। এমনই উত্তেজনাকর প্রেক্ষাপটে আবার শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্স শহরে। স্থানীয় পুলিশের ভাষ্য, শহরের একটি বিপণিবিতানের সামনে মাদক নিয়ে অভিযোগের তদন্ত করতে যান এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি একপর্যায়ে ৩৪ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ রুমেইন ব্রিসবনকে তল্লাশি করতে গেলে তিনি নিজের পকেটে বাঁ হাত ঢোকান। তখন ব্রিসবন অস্ত্র বের করবেন, এ সন্দেহে ওই পুলিশ তাঁর হাত চেপে ধরেন। তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ফিনিক্স পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ধস্তাধস্তিতে পেরে উঠছেন না, এমন মনে হওয়ার পর ওই পুলিশ ব্রিসবনের বুক লক্ষ্য করে দুটি গুলি করেন। তবে নিহত ব্রিসবনের পরিবার পুলিশের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা আইনের আশ্রয় নেবে। চোকহোল্ড কী? অপরাধী পাকড়াও করতে মার্কিন পুলিশের শ্বাসরোধ করার এক প্রক্রিয়া ‘চোকহোল্ড’। এই বিতর্কিত কৌশলটি নিয়ে মার্কিন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে সমালোচনা বেশ পুরোনো। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের নির্দেশিকায় ‘চোকহোল্ড’ বলতে গলা বা শ্বাসনালিতে কোনো ধরনের চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করার উল্লেখ রয়েছে
No comments