কেমন আছে ম্যান্ডেলাহীন দ. আফ্রিকা?
মানুষ চিরতরে চলে গেলে হারানোর বেদনায় শোকাতুর হয় প্রিয়জন। কিন্তু এক বছর আগে নেলসন ম্যান্ডেলার প্রয়াণের দিন দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ চোখের জল ফেলার পাশাপাশি রাস্তায় নেমে নেচেছে, গেয়েছে। নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁদের ছেড়ে চলে গেছেন—এ ভাবনায় বিমূঢ় হয়নি দেশবাসী। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে মানুষ বরং উদ্যাপন করেছে তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনকে। ম্যান্ডেলার মৃত্যুর পর দুই সম্প্রদায়ই একত্রে শোক করেছে। তবে অভিন্ন এই অনুভূতির মাঝেও দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরা আজ কিছুটা চিন্তিত। তাঁদের দুঃখ, বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের এই মহান নেতা একটু আগেই আলিঙ্গন করেছেন মৃত্যু।শ্বেতাঙ্গদের আশঙ্কা, ‘মাদিবার’ মৃত্যুতে বড় ক্ষতি হয়েছে তাদেরই। দরিদ্র ক্ষুব্ধ কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের শান্তির জীবনে বিপদ হয়ে উঠতে পারে। তারা হয়ে উঠতে পারে প্রতিশোধপরায়ণ। তবে স্বস্তির কথা হচ্ছে, গত ১২ মাসে আসলে শ্বেতাঙ্গরা শান্তিতেই কাটিয়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। ম্যান্ডেলার নাতনি এনদিলেকা ম্যান্ডেলা এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানালেন, দক্ষিণ আফ্রিকা আগের মতোই শান্তিতে আছে। গত এক বছরে এতটুকু বদলায়নি।
এনদিলেকা বলেন, ‘মানুষ এখনো তাদের অধিকার ভোগ করছে। মাদিবা শান্তি আর সহাবস্থান নিয়ে কাজ করার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।’ কিন্তু বাস্তবে ম্যান্ডেলার জন্মভূমির চিত্রটা কি আসলেই এতটা ভালো? চলতি সপ্তাহেই প্রকাশিত এক জরিপের ফলে দেখা গেছে, অংশ নেওয়া ২৪ শতাংশ মনে করেন, বর্ণবাদ কোনো অপরাধ নয়। আর এই অবস্থানের সঙ্গে একমত প্রায় অর্ধেক শ্বেতাঙ্গ। অথচ ২০০৩ সালে এই ধরনের প্রথম জরিপে দক্ষিণ আফ্রিকার ৮৬ শতাংশ মানুষ রায় দিয়েছিলেন, বর্ণবাদ অপরাধ। জরিপকারীদের প্রধান কিম ওয়েল বলেছেন, একসময় কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে হানাহানির কারণে মানুষ বর্ণবাদকে অপরাধ মনে করত। এখন সেই পরিস্থিতি নেই, তাই লোকের কাছে বর্ণবাদও অপরাধ নয়। সূত্র: বিবিসি
No comments