সুবিচারের প্রত্যাশায় ভুক্তভোগীরা -ভূপাল ট্র্যাজেডির ২৫ বছর

ভারতের ভূপাল গ্যাস ট্র্যাজেডির ২৫ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো ন্যায়বিচার পায়নি ভুক্তভোগীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব ইতিহাসের বৃহত্তম শিল্প কারখানা দুর্ঘটনার ২৫তম বার্ষিকীতে ওই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগীরা। সুবিচার ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে দুর্ঘটনাস্থল পর্যন্ত একটি পদযাত্রা কর্মসূচিও পালন করে তারা। পাশাপাশি ওই দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দুর্ঘটনাস্থলে জমে থাকা রাসায়নিক বর্জ্য থেকে এখনো আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
১৯৮৪ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতের মধ্য প্রদেশের ভূপালে ‘ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া’ নামের একটি কীটনাশক তৈরির কারখানা থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক গ্যাস নির্গত হওয়ার কারণে ২০ হাজার মানুষ মারা যায় এবং প্রায় ছয় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক মানুষ রাসায়নিক তেজস্ক্রিয়তার কারণে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে।
এদিকে ওই দুর্ঘটনায় মধ্য প্রদেশ হাইকোর্টের দেওয়া ক্ষতিপূরণসংক্রান্ত একটি রায় হতাশ করে ভুক্তভোগীদের। ওই রায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৯৮৯ সালের প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ পরিশোধের কথা বলা হয়। ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করে, ভূপাল ট্র্যাজেডির ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। এ জন্য সরকার এবং ওই দুর্ঘটনার জন্য অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কার্বাইডের মধ্যকার একটি চুক্তি অনুমোদন করেন আদালত। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইউনিয়ন কার্বাইড ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭১৩ কোটি রুপি দিতে রাজি হয়। এর বিনিময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সব ফৌজদারি মামলা তুলে নিতে রাজি হয় সরকার। কিন্তু জনতার চাপের মুখে সরকার ১৯৯১ সালে আবার মামলার কার্যক্রম শুরু করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ওই মামলার কোনো নিস্পত্তি এখনো হয়নি।
তাই সুবিচার পাওয়ার লড়াই আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেই ধারণা করছে ভূপাল ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন।

No comments

Powered by Blogger.