আইসিএলের টাকা কি আর পাবেন ওঁরা?
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পথে প্রথম পদক্ষেপটা নিয়েই ফেলেছে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল)। আইসিসির ‘অপরাধ’—আইসিএলকে তারা মূল স্রোতের ক্রিকেট হিসেবে অনুমোদন দিচ্ছে না। তবে আইসিএলের আইনি লড়াই নিয়ে খুব কম লোকেরই এখন কৌতূহল আছে। জি নেটওয়ার্কের স্বত্বাধিকারী এসেল গ্রুপের সাড়া জাগানো এই টি-টোয়েন্টি লিগ এখন একটা মৃত ঘোড়ার বেশি কিছু তো নয়!
সমস্যা হলো, আইসিএলের মুমূর্ষু অবস্থা মুছে দিতে চাইছে আইসিএলের সঙ্গে ক্রিকেটারদের দেনা-পাওনার হিসাবগুলোও। অন্যদের কথা বাদ দিন—জ্যাসন গিলেস্পি, মাইকেল কাসপ্রোভিচ ও ডেমিয়েন মার্টিনের মতো সাবেক তারকারাও চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুত অর্থ পাননি। এবার তাই কাঠগড়ায় ওঠার উপক্রম আইসিএলেরই। ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা) আইসিএলের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। ফিকা-প্রধান টিম মের দাবি, আইসিএলের অনেক ক্রিকেটার, কর্মকর্তা এবং সাপোর্ট স্টাফ এক বছর ধরে আইসিএল থেকে কোনো টাকা পাচ্ছেন না, ‘সব মিলিয়ে টাকাটা কয়েক মিলিয়ন ডলার। আইসিএল এই টাকা দেওয়ার নানা তারিখ দিয়েছে ফিকাকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই তারিখগুলো অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর টাকা পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।’ ফিকা-প্রধান জানিয়েছেন, সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় ক্রিকেটাররা এখন আইনি পথে যাওয়ার কথাই ভাবছেন, ‘একটার পর একটা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ আর আইসিএল কর্মকর্তাদের ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতায় খেলোয়াড়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, ব্যাপারটা আর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার সুযোগ নেই। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই তাঁদের হাতে।’
ফিকা আইনি পদক্ষেপ নিয়ে সফল হলে সেটার সুফল হয়তো বাংলাদেশের আইসিএল-ফেরত ক্রিকেটাররাও পাবেন। তবে নিজেরাই চুক্তি বাতিল করে আসায় বকেয়া টাকার জন্য তাঁদের দাবি অতটা জোরালো নয়। ঢাকা ওয়ারিয়র্স অধিনায়ক হাবিবুল বাশার যেমন বললেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা ছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু চুক্তি বাতিলের সময় আইসিএল থেকে আসা অনাপত্তিপত্রে লেখা ছিল—এতে সই করার পর ২০০৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে আইসিএলের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক, কোনো লেনদেন থাকবে না। সে হিসাবে আমাদের আর কোনো পাওনা থাকার কথা না। আমরাও আশা ছেড়ে দিয়েছি। তবে উইনিং মানি ও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার বাবদ ঢাকা ওয়ারিয়র্সের অনেক টাকা পাওনা আছে আইসিএলের কাছে।’ হাবিবুল জানিয়েছেন, আইসিএলে জেতা পাঁচ ম্যাচে ২৫ লাখ ডলার করে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ ডলার উইনিং মানি হিসেবে পাওয়ার কথা তাঁদের। এর সঙ্গে যোগ হবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারের টাকা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার পর অলক কাপালি, নাজিমউদ্দিনরা যে মোটরবাইকগুলোয় বসে ছবির জন্য পোজ দিতেন, সেগুলো আসলে ছিল শুধু ছবি তোলার জন্যই। পুরস্কার হিসেবে মোটরবাইকের মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা আসেনি কারও পকেটেই।
আইসিএলের সঙ্গে ঢাকা ওয়ারিয়র্স ক্রিকেটারদের তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী প্রথম বছরের টাকার অর্ধেক তাঁরা প্রথম কিস্তিতে পেলেও এর পর আর কোনো টাকা পাননি। বাকি টাকা সমান দুই কিস্তিতে পাওয়ার কথা ছিল। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা ছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে, তৃতীয় কিস্তি তার দুই মাস পর। কিন্তু আইসিএল ছাড়ার অনাপত্তিপত্রটা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ায় কাগজে-কলমে বাকি অর্ধেক টাকা আর পাওয়ার কথা নয় কারও। শাহরিয়ার নাফীস এটা মেনে নিয়েও বলছেন, ‘যারা আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে, তারা দুই বছর খেলে এক বছরের টাকা পেয়েছে। আর আমরা ছয় মাস খেলে ছয় মাসেরই টাকা পেয়েছি। তার পরও ফিকা যদি কোনো উদ্যোগ নেয়, আশা করি, সেটার সুফল সবাই পাবে। অন্তত বকেয়া উইনিং মানির টাকাগুলো পাওয়া যেতে পারে।’ জানা গেছে, আইসিএল ক্রিকেটারদের ব্যাপারে ফিকা তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবকে।
ঢাকা ওয়ারিয়র্স ক্রিকেটারদের মধ্যে শাহরিয়ারের চুক্তিটাই ছিল সবচেয়ে বড় অঙ্কের। তিন বছরের চুক্তির প্রতিবছরে তাঁর পাওয়ার কথা ছিল ২ লাখ ২০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় কোটি) করে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অন্যদের চুক্তির অঙ্ক ছিল বছরপ্রতি এ রকম—আফতাব আহমেদ ২ লাখ ডলার, অলক কাপালি ১ লাখ ৭০ হাজার, নাজিমউদ্দিন ১ লাখ ৫০ হাজার, ফরহাদ রেজা ১ লাখ ৩০ হাজার, হাবিবুল ও ধীমান ঘোষ ১ লাখ করে, মোশাররফ হোসেন ৯০ হাজার, মোহাম্মদ রফিক ৬০ হাজার, মোহাম্মদ শরীফ ও মঞ্জুরুল ইসলাম ৩০ হাজার করে, তাপস বৈশ্য ২৫ হাজার এবং গোলাম মাবুদ ও মাহবুবুর রহমান ২০ হাজার ডলার করে। আইসিএলের কাছ থেকে সবাই পেয়েছেন এর অর্ধেক।
আইসিএল যতই বলুক আগামী ফেব্রুয়ারিতে আবার তারা মাঠে নামাবে ক্রিকেট, বাংলাদেশের সাবেক আইসিএল ক্রিকেটাররা সেটা নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাচ্ছেন না। পাওনা টাকাটাও সবাই যেন ছেড়েই দিয়েছেন। মোহাম্মদ শরীফ তো বলেই দিলেন, ‘টাকা নিয়ে আর ভাবছি না। আবার দেশের ক্রিকেটে ফিরেছি, দেশের মাঠে খেলতে পারছি—এটাই বড় কথা।’
সমস্যা হলো, আইসিএলের মুমূর্ষু অবস্থা মুছে দিতে চাইছে আইসিএলের সঙ্গে ক্রিকেটারদের দেনা-পাওনার হিসাবগুলোও। অন্যদের কথা বাদ দিন—জ্যাসন গিলেস্পি, মাইকেল কাসপ্রোভিচ ও ডেমিয়েন মার্টিনের মতো সাবেক তারকারাও চুক্তি অনুযায়ী প্রতিশ্রুত অর্থ পাননি। এবার তাই কাঠগড়ায় ওঠার উপক্রম আইসিএলেরই। ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা) আইসিএলের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। ফিকা-প্রধান টিম মের দাবি, আইসিএলের অনেক ক্রিকেটার, কর্মকর্তা এবং সাপোর্ট স্টাফ এক বছর ধরে আইসিএল থেকে কোনো টাকা পাচ্ছেন না, ‘সব মিলিয়ে টাকাটা কয়েক মিলিয়ন ডলার। আইসিএল এই টাকা দেওয়ার নানা তারিখ দিয়েছে ফিকাকে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই তারিখগুলো অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর টাকা পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।’ ফিকা-প্রধান জানিয়েছেন, সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় ক্রিকেটাররা এখন আইনি পথে যাওয়ার কথাই ভাবছেন, ‘একটার পর একটা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ আর আইসিএল কর্মকর্তাদের ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতায় খেলোয়াড়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, ব্যাপারটা আর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার সুযোগ নেই। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই তাঁদের হাতে।’
ফিকা আইনি পদক্ষেপ নিয়ে সফল হলে সেটার সুফল হয়তো বাংলাদেশের আইসিএল-ফেরত ক্রিকেটাররাও পাবেন। তবে নিজেরাই চুক্তি বাতিল করে আসায় বকেয়া টাকার জন্য তাঁদের দাবি অতটা জোরালো নয়। ঢাকা ওয়ারিয়র্স অধিনায়ক হাবিবুল বাশার যেমন বললেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা ছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু চুক্তি বাতিলের সময় আইসিএল থেকে আসা অনাপত্তিপত্রে লেখা ছিল—এতে সই করার পর ২০০৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে আইসিএলের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক, কোনো লেনদেন থাকবে না। সে হিসাবে আমাদের আর কোনো পাওনা থাকার কথা না। আমরাও আশা ছেড়ে দিয়েছি। তবে উইনিং মানি ও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার বাবদ ঢাকা ওয়ারিয়র্সের অনেক টাকা পাওনা আছে আইসিএলের কাছে।’ হাবিবুল জানিয়েছেন, আইসিএলে জেতা পাঁচ ম্যাচে ২৫ লাখ ডলার করে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ ডলার উইনিং মানি হিসেবে পাওয়ার কথা তাঁদের। এর সঙ্গে যোগ হবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারের টাকা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার পর অলক কাপালি, নাজিমউদ্দিনরা যে মোটরবাইকগুলোয় বসে ছবির জন্য পোজ দিতেন, সেগুলো আসলে ছিল শুধু ছবি তোলার জন্যই। পুরস্কার হিসেবে মোটরবাইকের মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা আসেনি কারও পকেটেই।
আইসিএলের সঙ্গে ঢাকা ওয়ারিয়র্স ক্রিকেটারদের তিন বছরের চুক্তি অনুযায়ী প্রথম বছরের টাকার অর্ধেক তাঁরা প্রথম কিস্তিতে পেলেও এর পর আর কোনো টাকা পাননি। বাকি টাকা সমান দুই কিস্তিতে পাওয়ার কথা ছিল। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা ছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে, তৃতীয় কিস্তি তার দুই মাস পর। কিন্তু আইসিএল ছাড়ার অনাপত্তিপত্রটা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ায় কাগজে-কলমে বাকি অর্ধেক টাকা আর পাওয়ার কথা নয় কারও। শাহরিয়ার নাফীস এটা মেনে নিয়েও বলছেন, ‘যারা আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে, তারা দুই বছর খেলে এক বছরের টাকা পেয়েছে। আর আমরা ছয় মাস খেলে ছয় মাসেরই টাকা পেয়েছি। তার পরও ফিকা যদি কোনো উদ্যোগ নেয়, আশা করি, সেটার সুফল সবাই পাবে। অন্তত বকেয়া উইনিং মানির টাকাগুলো পাওয়া যেতে পারে।’ জানা গেছে, আইসিএল ক্রিকেটারদের ব্যাপারে ফিকা তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবকে।
ঢাকা ওয়ারিয়র্স ক্রিকেটারদের মধ্যে শাহরিয়ারের চুক্তিটাই ছিল সবচেয়ে বড় অঙ্কের। তিন বছরের চুক্তির প্রতিবছরে তাঁর পাওয়ার কথা ছিল ২ লাখ ২০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় কোটি) করে। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অন্যদের চুক্তির অঙ্ক ছিল বছরপ্রতি এ রকম—আফতাব আহমেদ ২ লাখ ডলার, অলক কাপালি ১ লাখ ৭০ হাজার, নাজিমউদ্দিন ১ লাখ ৫০ হাজার, ফরহাদ রেজা ১ লাখ ৩০ হাজার, হাবিবুল ও ধীমান ঘোষ ১ লাখ করে, মোশাররফ হোসেন ৯০ হাজার, মোহাম্মদ রফিক ৬০ হাজার, মোহাম্মদ শরীফ ও মঞ্জুরুল ইসলাম ৩০ হাজার করে, তাপস বৈশ্য ২৫ হাজার এবং গোলাম মাবুদ ও মাহবুবুর রহমান ২০ হাজার ডলার করে। আইসিএলের কাছ থেকে সবাই পেয়েছেন এর অর্ধেক।
আইসিএল যতই বলুক আগামী ফেব্রুয়ারিতে আবার তারা মাঠে নামাবে ক্রিকেট, বাংলাদেশের সাবেক আইসিএল ক্রিকেটাররা সেটা নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাচ্ছেন না। পাওনা টাকাটাও সবাই যেন ছেড়েই দিয়েছেন। মোহাম্মদ শরীফ তো বলেই দিলেন, ‘টাকা নিয়ে আর ভাবছি না। আবার দেশের ক্রিকেটে ফিরেছি, দেশের মাঠে খেলতে পারছি—এটাই বড় কথা।’
No comments