বাড়িতেই আনন্দ-আড্ডা by তৌহিদা শিরোপা
বন্ধুর বাড়িতে সবাই মিলে হাত-পা ছড়িয়ে আড্ডা। শুনলেই চোখের কোণে খুশির ঝিলিক দেয়। মুখে হাসির রেখা ফুটে ওঠে। কম বয়সী ছেলেমেয়েরা যেন সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে একসঙ্গে অন্য রকম দিন কাটানোর। আর সেটা হতে পারে নিজেদের মধ্যে কারও বাড়িতেই ‘আগে মনে হতো এসব শুধু বড়দের বেলায়ই হয়। তবে এ বছর মা বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে মজা করার অনুমতি দিয়েছেন।’ দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অবন্তীর আনন্দও তাই দেখার মতো।
অবন্তী বলে, ‘আমার বড় আপু-ভাইয়ারা বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে খেতে যায়। বেড়াতে যায়। সব সময় ভেবেছি আমি কবে যাব। বাইরে ঘুরতে না দিলেও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর অনুমতি মিলেছে। এ বছর আমরা ছয় বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করি। একেকবার একেক বন্ধুর বাসায় গিয়েছি। কখনো সারা দিন, কখনো বা একবেলা একসঙ্গে থাকার সুযোগ পাই। আমাদের ক্লাস-কোচিং আর পড়ার এত চাপ, আলাদা করে সময় কাটানোর সুযোগ কোথায়? বাইরে কোথাও যেতে গেলেও তো কেউ না কেউ সঙ্গে যায়। বন্ধুর বাসায় গেলে মা-ও বেশি ঝামেলা করে না। আমরাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’
ভিকারুননিসা নূন স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক পারভীন বানু মনে করেন, কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মানসিক আনন্দ প্রয়োজন। নানা কারণে তারা চাপের মধ্যে থাকে। একটি দিন তারা যদি কোনো বন্ধুর বাসায় নিজের মতো করে কাটাতে চায়, তাতে বাধা দেওয়া উচিত নয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোন ধরনের ছেলেমেয়ের সঙ্গে মিশছে। যে বাড়িতে যাবে, সে বাড়ির পরিবেশটা কেমন। এ ছাড়া আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ না করাই ভালো। ছেলেমেয়ের এসব আনন্দ-আহ্লাদে বড়দের প্রবেশ করা উচিত নয়। তারা যেন নিজেদের মতো করে হাসি-ঠাট্টা করতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এতে বড়দের প্রতিও তাদের শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে।
বাড়িতে কম বয়সী ছেলেমেয়েরা এলে তাদের খাবারের আয়োজন তো করতেই হবে। ভারি কিছু না করে বরং স্ন্যাকস-জাতীয় খাবার তৈরি করাই ভালো, যাতে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়া যায়। পারভীন বানু মনে করেন,
সব পরিবারের সামর্থ্য এক রকম নয়। বিভিন্ন পদের খাবার খাওয়ানোই আসল কথা নয়, খাওয়াদাওয়া কিংবা পুরো উপস্থাপনে আন্তরিকতা থাকতে হবে। তবে বন্ধুর বাড়িতে ছোট কেক, পেস্ট্রি বা বন্ধুর কোনো ছোট ভাইবোন থাকলে তার জন্য আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
একজন না নিয়ে সবাই মিলে চাঁদা দিয়ে এসব টুকটাক জিনিস কেনা যেতে পারে। এতে বন্ধুটিও খুশি হলো। কিন্তু উপহারের বিষয়টি আবশ্যিক না হয়ে বরং শখের কিছু হওয়াই ভালো। সংগ্রহে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের গান, ভালো চলচ্চিত্র থাকলে তা নিয়ে আসতে পারে। সবার পছন্দের ভিত্তিতে গান শোনা যেতে পারে। ভালো চলচ্চিত্র একসঙ্গে দেখতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এসবের যেন কোনো অপব্যবহার না হয়। প্রযুক্তির অপব্যবহার বা মা-বাবার বিশ্বাস ভঙ্গ করলে ভবিষ্যতে সে-ই
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মন স্পর্শকাতর হয়। ফলে তাদের সামনে বন্ধুর বাড়ির কোনো সদস্যের এমন আচরণ করা উচিত নয়, যাতে তারা কষ্ট পায়। খুশির আনন্দটা ম্লান হয়ে যায়। এদিন শুধু তাদেরই গুরুত্ব দিতে হবে।
কলেজপড়ুয়া সাইমুম বন্ধুর বাড়িতে আড্ডা দিতে ভালোবাসে। ‘কোনো রেস্টুরেন্ট বা ফাস্টফুডের দোকানে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে তো থাকা যায় না। বন্ধুর বাড়িতে আয়েশ করে আড্ডা দেওয়া যায়। বন্ধুর মায়ের হাতের রান্না খেতে ভালোবাসি আমরা। কখনো কখনো অবশ্য পিত্জা, বিরিয়ানি এসব কিনেও নিয়ে যাই। এমনও হয়েছে, বন্ধুর মা যে খাবার পছন্দ করেন, সেটি নিয়ে যাওয়া হয়।’
রান্নাবিদ সাশা মানসুর চৌধুরী বলেন, মুখরোচক খাবার কম বয়সী ছেলেমেয়েরা পছন্দ করে। নতুন ও বিচিত্র খাবারের স্বাদ নিতে ভালোবাসে। একটু পনির, একটু সস খাবারের স্বাদে ভিন্নতা আনে। ওদের জন্য পাস্তা, নুডলস, চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস করতে পারেন। এ ছাড়া স্যান্ডউইচ, মাংস-পরোটা, কাবাব, সসেজ, নাগেটও চলতে পারে। মিষ্টি খাবারের মধ্যে ফিরনি, কাস্টার্ডও করা যেতে পারে। সম্ভব হলে আগে থেকে ওদের পছন্দ-অপছন্দ জেনে নেওয়া যেতে পারে। কোনো বিশেষ খাবার খেলে তাদের সমস্যা হয় কি না, তা-ও জেনে নেবেন আপনার সন্তানের কাছ থেকে।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফিরোজা সুলতানা বলেন, বন্ধুরা যে ঘরে এসে বসবে আগের দিন তা একটু গুছিয়ে রাখতে হবে। রান্নাবান্নায় মাকে সাহায্য করা যেতে পারে, যেন তাঁর ওপর বেশি চাপ না পড়ে। প্লেট, গ্লাস হাতের কাছে রাখা যেতে পারে। এমনকি বন্ধুরা চলে যাওয়ার পর ঘরদোর পরিষ্কার করতেও মাকে সাহায্য করা উচিত। এতে মা খুশি হবেন। বন্ধুরা চাইলে নিমন্ত্রিত বন্ধুটির বাড়িতে প্রত্যেকে একটা করে খাবারের পদ আনতে পারে। এ ছাড়া সবাই মিলে বন্ধুর মায়ের জন্য ফুল আনলে তিনি খুশি হবেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক পারভীন বানু মনে করেন, কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মানসিক আনন্দ প্রয়োজন। নানা কারণে তারা চাপের মধ্যে থাকে। একটি দিন তারা যদি কোনো বন্ধুর বাসায় নিজের মতো করে কাটাতে চায়, তাতে বাধা দেওয়া উচিত নয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোন ধরনের ছেলেমেয়ের সঙ্গে মিশছে। যে বাড়িতে যাবে, সে বাড়ির পরিবেশটা কেমন। এ ছাড়া আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ না করাই ভালো। ছেলেমেয়ের এসব আনন্দ-আহ্লাদে বড়দের প্রবেশ করা উচিত নয়। তারা যেন নিজেদের মতো করে হাসি-ঠাট্টা করতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এতে বড়দের প্রতিও তাদের শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে।
বাড়িতে কম বয়সী ছেলেমেয়েরা এলে তাদের খাবারের আয়োজন তো করতেই হবে। ভারি কিছু না করে বরং স্ন্যাকস-জাতীয় খাবার তৈরি করাই ভালো, যাতে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়া যায়। পারভীন বানু মনে করেন,
সব পরিবারের সামর্থ্য এক রকম নয়। বিভিন্ন পদের খাবার খাওয়ানোই আসল কথা নয়, খাওয়াদাওয়া কিংবা পুরো উপস্থাপনে আন্তরিকতা থাকতে হবে। তবে বন্ধুর বাড়িতে ছোট কেক, পেস্ট্রি বা বন্ধুর কোনো ছোট ভাইবোন থাকলে তার জন্য আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
একজন না নিয়ে সবাই মিলে চাঁদা দিয়ে এসব টুকটাক জিনিস কেনা যেতে পারে। এতে বন্ধুটিও খুশি হলো। কিন্তু উপহারের বিষয়টি আবশ্যিক না হয়ে বরং শখের কিছু হওয়াই ভালো। সংগ্রহে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের গান, ভালো চলচ্চিত্র থাকলে তা নিয়ে আসতে পারে। সবার পছন্দের ভিত্তিতে গান শোনা যেতে পারে। ভালো চলচ্চিত্র একসঙ্গে দেখতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এসবের যেন কোনো অপব্যবহার না হয়। প্রযুক্তির অপব্যবহার বা মা-বাবার বিশ্বাস ভঙ্গ করলে ভবিষ্যতে সে-ই
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের মন স্পর্শকাতর হয়। ফলে তাদের সামনে বন্ধুর বাড়ির কোনো সদস্যের এমন আচরণ করা উচিত নয়, যাতে তারা কষ্ট পায়। খুশির আনন্দটা ম্লান হয়ে যায়। এদিন শুধু তাদেরই গুরুত্ব দিতে হবে।
কলেজপড়ুয়া সাইমুম বন্ধুর বাড়িতে আড্ডা দিতে ভালোবাসে। ‘কোনো রেস্টুরেন্ট বা ফাস্টফুডের দোকানে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে তো থাকা যায় না। বন্ধুর বাড়িতে আয়েশ করে আড্ডা দেওয়া যায়। বন্ধুর মায়ের হাতের রান্না খেতে ভালোবাসি আমরা। কখনো কখনো অবশ্য পিত্জা, বিরিয়ানি এসব কিনেও নিয়ে যাই। এমনও হয়েছে, বন্ধুর মা যে খাবার পছন্দ করেন, সেটি নিয়ে যাওয়া হয়।’
রান্নাবিদ সাশা মানসুর চৌধুরী বলেন, মুখরোচক খাবার কম বয়সী ছেলেমেয়েরা পছন্দ করে। নতুন ও বিচিত্র খাবারের স্বাদ নিতে ভালোবাসে। একটু পনির, একটু সস খাবারের স্বাদে ভিন্নতা আনে। ওদের জন্য পাস্তা, নুডলস, চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইড রাইস করতে পারেন। এ ছাড়া স্যান্ডউইচ, মাংস-পরোটা, কাবাব, সসেজ, নাগেটও চলতে পারে। মিষ্টি খাবারের মধ্যে ফিরনি, কাস্টার্ডও করা যেতে পারে। সম্ভব হলে আগে থেকে ওদের পছন্দ-অপছন্দ জেনে নেওয়া যেতে পারে। কোনো বিশেষ খাবার খেলে তাদের সমস্যা হয় কি না, তা-ও জেনে নেবেন আপনার সন্তানের কাছ থেকে।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফিরোজা সুলতানা বলেন, বন্ধুরা যে ঘরে এসে বসবে আগের দিন তা একটু গুছিয়ে রাখতে হবে। রান্নাবান্নায় মাকে সাহায্য করা যেতে পারে, যেন তাঁর ওপর বেশি চাপ না পড়ে। প্লেট, গ্লাস হাতের কাছে রাখা যেতে পারে। এমনকি বন্ধুরা চলে যাওয়ার পর ঘরদোর পরিষ্কার করতেও মাকে সাহায্য করা উচিত। এতে মা খুশি হবেন। বন্ধুরা চাইলে নিমন্ত্রিত বন্ধুটির বাড়িতে প্রত্যেকে একটা করে খাবারের পদ আনতে পারে। এ ছাড়া সবাই মিলে বন্ধুর মায়ের জন্য ফুল আনলে তিনি খুশি হবেন।
No comments