মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ছে
আরো এক বছর বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র আরো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করেন।
আগামী বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদিত হলে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা হবে ৬০ বছর। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা এ সুবিধার আওতায় আসবেন।মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। এখন তাঁর মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এবং তাঁদের সম্মানে এটিকে বড় পদক্ষেপ দাবি করে এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিজীবী এ সুবিধার আওতায় আসবেন। আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা এই সুযোগ ভোগ করবেন। তবে এরই মধ্যে যেসব মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, তাঁরা এই সুযোগের আওতায় আসবেন না।
২০১০ সালের অক্টোবরে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে তাঁদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯-এ উন্নীত করা হয়। এ সময় অবসর-পরবর্তী ছুটিতে থাকা অনেকেই নতুন করে চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হন।
পরে সরকার গত বছরের ডিসেম্বরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর লক্ষ্যে 'দি পাবলিক সার্ভিস (রিটায়ারমেন্ট) অ্যাক্ট' সংশোধন করে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করে। ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মতো সবাই একই সুবিধার মধ্যে আসেন। পরে এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং তাঁদের সম্মানের কথা বিবেচনায় রেখে সরকার আবারও চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন এই সুযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর পর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে তাঁদের চাকরির মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানোর দাবি তোলা হয়। দাবি আদায়ে রাজপথেও নামে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কমান্ড সমন্বয় পরিষদ। এই প্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে সরকারি চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবসংবলিত একটি সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এরপর নানা বিচার-বিশ্লেষণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
No comments