প্ররোচনাকারী শামীমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ফারহানার আত্মহত্যা
কলেজছাত্রী ফারহানা ইসলামকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী শামীম মিয়ার গ্রেপ্তারের দাবিতে রোববার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন,
ফারহানার আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীকে খুনি বলে আখ্যায়িত করে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।প্রশ্ন হলো, শামীম মিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ফারহানা ইসলামকে নানাভাবে হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেন? ফারহানার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও তারা ছিল নির্বিকার। এর আগে মেয়েটি প্রতিকার চাইলে গ্রাম্য সালিসে ওই দুর্বৃত্তকে জরিমানা ও জুতাপেটা করা হয়। কিন্তু তার দুর্বৃত্তপনা ঠেকানো যায়নি। গত শনিবার সকালে ফারহানা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় শামীম তাঁর গতিরোধ করে এবং শ্লীলতাহানি করে। তার পরনের ওড়না ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এই অপমান সইতে না পেরে মেয়েটি তখনই বাজার থেকে কীটনাশক কিনে এনে ঘটনাস্থলেই তা পান করে। মেয়েটি চিরকুটে আত্মহত্যার কারণও লিখে গেছে।
একটি মেয়ে কী দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে পড়লে বা নিজেকে কতটা অসহায় ভাবলে আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নেয়, তা ধারণা করা কঠিন নয়। ফারহানার পরিবারের দাবি, শামীমকে গ্রেপ্তার করা হলে ফারহানাকে বাঁচানো যেত। সে ক্ষেত্রে থানা-পুলিশও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
এর আগেও দেশে এ রকম আত্মহত্যার প্ররোচনার বহু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দায়ী ব্যক্তিরা কঠিন শাস্তি পেয়েছে, সেই উদাহরণ নেই। কয়েক বছর আগে সিমি নামের একটি মেয়ের আত্মহত্যার প্ররোচনা ঘটনার সঙ্গে এক পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন। বিচারে তাঁর এক বছর জেল হয়েছিল, যা নিষ্ঠুর পরিহাস ছাড়া কিছু নয়। ফারহানার ক্ষেত্রে এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, সেই নিশ্চয়তা সরকারকেই দিতে হবে।
আমরা জানি, কোনো প্রতিবাদ বা আইনি ব্যবস্থাই ফারহানাকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো ফারহানাকে এ ধরনের করুণ পরিণতির শিকার হতে না হয়, সে জন্যই আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী শামীমকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
No comments