কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে ভাটায় করাতকল
ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর কোনো বিধান নেই। অথচ সেই বিধান উপেক্ষা করে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার মধুপুরে একটি ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, কাঠ চেরাই করার জন্য ওই ভাটায় বসানো হয়েছে করাতকল। ভাটার মালিকেরা এর জন্য বন বিভাগের কাছ থেকে কোনো অনুমতিও নেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে ঝিনাইদহ শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে মধুপুর গ্রামে এনএস ব্রিকস নামের ইটভাটা গড়ে তোলা হয়। সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতী গ্রামের রবিউল ইসলাম ও আবদুল মান্নান এর মালিক।ওই ভাটায় কাঠ সরবরাহকারী এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এনএস ব্রিকস বছরে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ ইট তৈরি করে। বিপুলসংখ্যক ইট পোড়াতে তাদের আনুমানিক ৫০ হাজার মণ কাঠের প্রয়োজন। এত কাঠ দূর থেকে আনতে গিয়ে মালিকদের অনেক সমস্যা হয়। এ কারণে তাঁরা ভাটায় করাতকল বসিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মধুপুর গ্রামে প্রায় ১০ একর জমিতে এনএস ব্রিকস গড়ে তোলা হয়েছে। ভাটার মধ্যে থাকা করাতকলের চারপাশে কাঠের স্তূপ। সেই কাঠ চেরাই করে ভাটার চুল্লিতে দেওয়া হচ্ছে। মধুপুর গ্রামের আবদুর রশিদ জানান, এই ভাটায় চার বছর ধরে ইট তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম দুই বছর এর মালিকেরা বাইরে থেকে কাঠ এনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেছেন। গত মৌসুমের শুরুতে তাঁরা ভাটার মধ্যেই করাতকল বসান।
পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয়ের ঝিনাইদহ অঞ্চলের পরিদর্শক আজাহারুল ইসলাম জানান, মালিকেরা তাঁদের অনুমোদন নিয়ে ভাটা স্থাপন করেছেন। কিন্তু ভাটায় কাঠ পোড়ানোর বিধান নেই। মালিকেরা করাতকল বসিয়ে অপরাধ করেছেন।
ভাটার মালিক রবিউল ইসলাম জানান, তাঁরা সব ইট কাঠ দিয়ে পোড়ান না। কিছু ক্ষেত্রে ইট পোড়াতে কাঠের প্রয়োজন হয়। কাজের চাপে অনেক সময় শ্রমিক দিয়ে কাঠ চেরাই করা হয় না। এ কারণে ভাটায় করাতকল বসানো হয়েছে।
জেলা বন কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন জানান, করাতকল বসানোর জন্য বন বিভাগের অনুমতি লাগে। আর বন বিভাগ কখনো এ অনুমতি দেবে না।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, ভাটায় ইট পোড়ানো যাবে না। এনএস ব্রিকসের মালিকেরা কাঠ চেরাইয়ের জন্য যে করাতকল বসিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। তবে খবরটি সঠিক হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে দ্রুত।
No comments