উল্লাপাড়া মিল্ক ভিটা দুগ্ধ কারখানা- গুদাম নির্মাণের জন্য কাটা হচ্ছে ১৫০টি গাছ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী-মোহনপুরে অবস্থিত মিল্ক ভিটা দুগ্ধ কারখানার ১০ বছর বয়সের ১৫০টি মেহগনিগাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। গুদাম নির্মাণের জন্য দরপত্র ছাড়াই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কারখানার ভেতরে আরও খালি জায়গা থাকলেও গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের জন্যই যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে মিল্ক ভিটার কর্মকর্তারা গাছগুলো কেটে ফেলছেন।গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তির উপস্থিতিতে কারখানার ভেতরের মেহগনিবাগানের গাছ কাটা হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, গত শুক্রবার থেকে এই গাছগুলো কাটা শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ২০টি গাছ কেটে ফেলা হয়। প্রায় ১০ বছর আগে মিল্ক ভিটা এলাকায় সহস্রাধিক মেহগনিগাছ রোপণ করে বাগান গড়ে তোলা হয় বলে কারখানা সূত্রে জানা গেছে।
গাছ কাটার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে লাহিড়ী-মোহনপুর দুগ্ধ কারখানার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মিল্ক ভিটার প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশ অনুযায়ী গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তাঁর কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র নেই। তিনি বলেন, মেহগনিবাগানের ১৪৮টি গাছ কেটে এখানে মোট ১৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি গুদাম নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে এ স্থানে একটি গোখাদ্য প্ল্যান্ট স্থাপন করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত গুদাম নির্মাণকাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা গুদাম নির্মাণ করার জন্য জায়গা খালি করছি। এই গাছগুলো কেটে মিল্ক ভিটার নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। এ বিষয়ে আমাদের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
মিল্ক ভিটার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. হাসিব খান বলেন, যেহেতু গাছগুলো তাঁদের আওতাভুক্ত, সে কারণে মৌখিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই তা কাটা হচ্ছে। যে কারণে অনুমোদন বা গাছ কাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। গুদাম নির্মাণকাজের জন্য নিয়োগ করা ঠিকাদারকে দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে।
শিক্ষক মো. আবদুল হাইসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, মেহগনিবাগান ছাড়াও মিল্ক ভিটায় আরও খালি জায়গা রয়েছে। ইচ্ছা করলে সেখানে তারা গুদাম নির্মাণ করতে পারে। কিন্তু সেটি না করে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দরপত্র ছাড়াই এই গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছ কাটার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তা মানেনি।
No comments