বোটানিক এ্যারোমার প্রতারণা-মোহনীয় বিজ্ঞাপনে ঢাকা সত্য
চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে সত্যকে আড়াল করে অভিনব প্রতারণার জাল ফেঁদেছিল প্রসাধন সামগ্রী প্রতিষ্ঠান বোটানিক এ্যারোমা। এভাবে জনস্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক পণ্য বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে তারা। আয়করও ফাঁকি দিয়েছে বিপুল অঙ্কের।
পক্ষান্তরে এসব সামগ্রী ব্যবহার করে ভোক্তারা কিডনি, চর্মরোগ, অন্ধত্বসহ দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক রোগব্যাধির মুখে পড়েছেন বা পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ক্ষতিকারক উপাদান মিশিয়ে প্রসাধন সামগ্রী তৈরি ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে শনিবার র্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে অভিযান চালিয়ে বোটানিক এ্যারোমার মালিক ও তার স্ত্রীসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। কারখানাটিও সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। মালিকসহ তিনজনকে তাৎক্ষণিকভাবে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাও হয়েছে। প্রশ্ন হলো, প্রতিষ্ঠানটি এতদিন ক্ষতিকারক প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চালিয়ে যেতে পারল কীভাবে? ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠানটি থেকে উৎপাদিত স্পট আউট ক্রিমের মোড়কের গায়ে থাকা তথ্যের সঙ্গে বাজারজাত করা পণ্যের গুণমানের সাদৃশ্য না থাকার কারণে বিএসটিআই সে সময় কয়েক কোটি টাকার পণ্য পুড়িয়ে দেয়। কিন্তু এরপরও প্রতিষ্ঠানের মালিকের উচ্চাকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি হয়নি। বিলম্বে হলেও এ্যারোমার মতো প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়েছে র্যাব। এ জন্য তাদেরকে আমাদের অভিনন্দন। এ ধরনের দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে র্যাব তাদের ভাবমূর্তিতে সামাজিক দায়িত্বশীলতার প্রলেপ লাগাতে পারে। তবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান যেন আর কোনোভাবেই জনগণকে প্রতারিত করতে না পারে, সে জন্য বিএসটিআইর মতো প্রতিষ্ঠানকেও সক্রিয় হতে হবে। খাদ্য, প্রসাধনীর মতো পণ্যের মান নিশ্চিত করা এবং এসবের সঙ্গে যাতে ভেজাল বা ক্ষতিকারক উপাদান মিশ্রিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকেও সার্বক্ষণিক তৎপর থাকা চাই। ভোক্তাদেরও পণ্যের গায়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ ছাড়পত্র রয়েছে কি-না, কেনার আগে পরখ করে দেখা উচিত।
No comments