চালকেরা গরু-ছাগল চিনছে, মানুষ চিনছে না!-সড়কে আর কত প্রাণ ঝরবে?
অজস্র অঘটনের দেশে সাংবাদিকের পরিচয় দুঃসংবাদের বাহক হিসেবে। কিন্তু একজন সাংবাদিক দীনেশ দাশ নিজেই গত রোববার হয়ে গেলেন এক মর্মান্তিক দুঃসংবাদ। বাসচাপা পড়ে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুধু সাংবাদিক সমাজকেই নয়, আপামর মানুষকে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। একই দিন গাজীপুরে বাসচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন তৈরি পোশাক কারখানার তিনজন কর্মী। এভাবে অকালে যানবাহনের নিচে পিষ্ট হয়ে আর কত জীবন যাবে? এ কি সড়ক, না মৃত্যুফাঁদ?
মাত্র ১০ দিন আগেই সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের পায়ের ওপর দিয়ে চলে গেল বাস। সেই পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আর মোটরসাইকেল আরোহী দীনেশ দাশকে জীবন দিয়ে শুধতে হলো পরিবহন কর্তৃপক্ষের গাফিলতির মূল্য। গত বছরের জুলাই মাসে সাংবাদিক বেলাল হোসেনকেও এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়। যার ওপর কারও হাত থাকে না, তাকে দুর্ঘটনা বলে। কিন্তু যে অঘটন মানুষের সৃষ্ট, তাকে আর দুর্ঘটনা বলা চলে না।
নিখিল ভদ্র ও দীনেশ দাশ উভয়েই প্রথমে বাসের ধাক্কায় পড়ে গেছেন। তখনই যদি চালক বাস থামিয়ে দিতেন, তাহলে হয়তো নিখিলের পা এবং দীনেশের জীবন বেঁচে যেতে পারত। সাম্প্রতিক আরেকটি ঘটনায় চালকদের অনেকের এই দায়িত্বহীনতার অভিযোগ ঘনীভূত হয়। পঞ্চগড় মহিলা কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষাসফরে যাওয়া একটি বাসের চালক দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখে গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালান। পাশে বসে ছিলেন ওই কলেজেরই শিক্ষক তৌহিদুল বারী। তিনি নিজের জীবন বাঁচাতে চালককে অনুসরণ না করে তাৎক্ষণিকভাবে চালকের আসনে বসে গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণে আনেন; বেঁচে যায় ৪০ জন ছাত্রীর জীবন। দীনেশের ঘটনায় এটুকু দায়িত্বশীলতা চালক দেখালে একজন সাংবাদিকের জীবন বাঁচত, তাঁর শিশুকন্যা তাহলে অনাথ হতো না, স্ত্রী হারাতেন না স্বামীকে।
প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদন বলছে, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৫৫ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। গত ১০ বছরে এভাবে মারা গেছে ৩৪ হাজার ৯১৮ জন। এগুলো থানায় মামলা হওয়া থেকে পাওয়া তথ্য, এর বাইরে আরও হতাহত আছে। এত বিপুল মৃত্যু বছরের পর বছর ঘটছে, অথচ প্রতিকারের তেমন উদ্যোগ নেই! কী বিচিত্র এই দেশ!
বাংলাদেশের বাসশ্রমিকদের নেতা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান কেবল গরু-ছাগল চিনতে পারাকেই চালকদের লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে দাবি করেছিলেন। তাঁর সেই দাবি প্রমাণিত হয়েছে, ঘাতক চালকেরা এখন গরু-ছাগল চিনছে, মানুষ চিনছে না। সড়কের সংস্কার হবে না, চালকদের যোগ্যতা পরীক্ষা করা যাবে না, দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না, নাজুক বাস রাস্তায় নামিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তুলে ব্যবসা করা হবে, নিরাপদ পাবলিক পরিবহন তথা মেট্রোরেলের ব্যবস্থা হবে না—কেবল মানুষ মরবে। এ অবস্থা আর চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। সড়কে সব মৃত্যুর দায় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি।
নিখিল ভদ্র ও দীনেশ দাশ উভয়েই প্রথমে বাসের ধাক্কায় পড়ে গেছেন। তখনই যদি চালক বাস থামিয়ে দিতেন, তাহলে হয়তো নিখিলের পা এবং দীনেশের জীবন বেঁচে যেতে পারত। সাম্প্রতিক আরেকটি ঘটনায় চালকদের অনেকের এই দায়িত্বহীনতার অভিযোগ ঘনীভূত হয়। পঞ্চগড় মহিলা কলেজের ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষাসফরে যাওয়া একটি বাসের চালক দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখে গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালান। পাশে বসে ছিলেন ওই কলেজেরই শিক্ষক তৌহিদুল বারী। তিনি নিজের জীবন বাঁচাতে চালককে অনুসরণ না করে তাৎক্ষণিকভাবে চালকের আসনে বসে গাড়িটিকে নিয়ন্ত্রণে আনেন; বেঁচে যায় ৪০ জন ছাত্রীর জীবন। দীনেশের ঘটনায় এটুকু দায়িত্বশীলতা চালক দেখালে একজন সাংবাদিকের জীবন বাঁচত, তাঁর শিশুকন্যা তাহলে অনাথ হতো না, স্ত্রী হারাতেন না স্বামীকে।
প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদন বলছে, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ৫৫ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। গত ১০ বছরে এভাবে মারা গেছে ৩৪ হাজার ৯১৮ জন। এগুলো থানায় মামলা হওয়া থেকে পাওয়া তথ্য, এর বাইরে আরও হতাহত আছে। এত বিপুল মৃত্যু বছরের পর বছর ঘটছে, অথচ প্রতিকারের তেমন উদ্যোগ নেই! কী বিচিত্র এই দেশ!
বাংলাদেশের বাসশ্রমিকদের নেতা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান কেবল গরু-ছাগল চিনতে পারাকেই চালকদের লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে দাবি করেছিলেন। তাঁর সেই দাবি প্রমাণিত হয়েছে, ঘাতক চালকেরা এখন গরু-ছাগল চিনছে, মানুষ চিনছে না। সড়কের সংস্কার হবে না, চালকদের যোগ্যতা পরীক্ষা করা যাবে না, দুর্ঘটনার জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না, নাজুক বাস রাস্তায় নামিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তুলে ব্যবসা করা হবে, নিরাপদ পাবলিক পরিবহন তথা মেট্রোরেলের ব্যবস্থা হবে না—কেবল মানুষ মরবে। এ অবস্থা আর চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। সড়কে সব মৃত্যুর দায় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি।
No comments