লেখা হবে সাঁওতালি ভাষার সফটওয়্যার 'হড় কাথা'য় by বিপ্লব রহমান
ভাষাগত সংখ্যালঘু সাঁওতাল জনজাতির ভাষার প্রথম ইউনিকোডভিত্তিক টাইপিং সফটওয়্যার 'হড় কাথা' তৈরি করেছেন দুই তরুণ সমর মাইকেল সরেন ও ফিরোজ আহমেদ। তাঁরা রাজশাহীর ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করছেন। উদ্ভাবকদের সূত্রে জানা গেছে, সফটওয়্যারটি যেকোনো অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার উপযোগী। এর মাধ্যমে এখন থেকে ওয়ার্ড, এঙ্লে, পাওয়ার পয়েন্টসহ মাইক্রোসফট অফিসের সব অ্যাপ্লিকেশনে সাঁওতাল ভাষায় লেখা সম্ভব হবে। ইউনিকোডভিত্তিক হওয়ায় অভ্র কিবোর্ডের মতোই হড় কাথা ব্যবহার করে ইন্টারনেট ও ব্লগেও লেখালেখি করা যায়। সাঁওতালি টাইপিং সফটওয়্যারটিতে প্রোগ্রামিং প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সি শার্প, জাভা ও ভিবি ডটনেট।
হড় কাথার অর্থ সাঁওতাল ভাষা। এর আগে চাকমা, মারমা, রাখাইন, মণিপুরী, ম্রোসহ বিভিন্ন জনজাতির ভাষার সফটওয়্যার তৈরি করা হলেও সাঁওতালি ভাষার টাইপিং সফটওয়্যার এটিই প্রথম। এর অভাবে এত দিন শিক্ষিত সাঁওতালরা কম্পিউটারে নিজস্ব ভাষায় রোমান হরফে বা বাংলা বর্ণমালায় লেখালেখি করত। এ ছাড়া এত দিন এই ভাষায় টাইপরাইটার বা ছাঁচ দিয়ে তৈরি হরফে ছাপাখানায় মুদ্রিত হতো সাঁওতালি ভাষার বিভিন্ন বইপত্র।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাসহ অল্প কয়েকটি দেশে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বসবাস, তবে বাংলাদেশ ও ভারতেই তারা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বাস করছে। তাদের রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, কৃষ্টি, রীতিনীতি, সাহিত্য, লোকগাথা ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। তারা নিজেদের 'সান্তাল' বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সিধুঁ-কানহু নামের দুই সাঁওতাল সহোদর জীবন দিয়ে গড়ে তোলেন সাঁওতাল বিদ্রোহ, যা ইতিহাসে ব্রিটিশরাজের সিংহাসন কাঁপানো 'সান্তাল হুল' নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাঁওতালরা সরাসরি সম্মুখ সমরে বীরত্বপূর্ণ লড়াই করে। স্বাধীন দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও রয়েছে তাদের সক্রিয় অবদান।
সাঁওতালি ভাষার টাইপিং সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা সমর মাইকেল সরেন নিজেও একজন সাঁওতাল। তথ্যপ্রযুক্তির পাশাপাশি ভাষাগত সংখ্যালঘু জনজীবনের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিয়মিত ব্লগ লেখেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি 'আদিবাসী বাংলা ব্লগ'-এরও প্রধান নির্মাতা। সমরের ব্লগ সাইটটি এ বছর মানবাধিকার বিভাগে জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এ দেশের ইতিহাস সংরক্ষণে তাঁর উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে আর্কাইভ এবং একটি ওয়েবসাইট। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজশাহীর এক সুধী সমাবেশে আর্কাইভ এবং ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া তরুণ এই উদ্ভাবক উইকিপিডিয়ার আদলে 'আদিবাসী তথ্যকোষ' নির্মাণের কাজেও হাত দিয়েছেন।
সমর মাইকেল সরেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আশা করছি, ইউনিকোডভিত্তিক সান্তাল ভাষার টাইপিং সফটওয়্যার হড় কাথা সারা বিশ্বের সাঁওতালি জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল জগৎ সম্পর্কে আগ্রহী করে লেখালেখির পথ সুগম করবে। সাঁওতাল ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই আমাদের এ প্রয়াস। প্রণোদনার অভাবে সমৃদ্ধশালী ভাষাটির ব্যবহার দিন দিন কমছে। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন এ ভাষার শিক্ষিতজনরা মাতৃভাষায়ই কম্পিউটারে লেখালেখি করতে পারবে। প্রথম প্রথম যারা সাঁওতালি ভাষার কিবোর্ডে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না, তাদের জন্য এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে মাউস চেপে লেখালেখিরও সুযোগ থাকছে।'
সমর মাইকেল সরেন জানান, আদিবাসী বাংলা ব্লগ 'ডাবি্লউ ফর স্টাডি ডটকম' সংস্কারের পাশাপাশি তাঁরা পুরোপুরি সাঁওতালি ভাষার একটি পৃথক ব্লগ সাইট এবং সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ওপর আরেকটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু করেছেন। সংস্কার ও নির্মাণের পর শিগগিরই এ দুটি ব্লগ সাইট এবং ওয়েব পেজ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
হড় কাথার আরেক উদ্ভাবক সমর সরেনের বন্ধু ফিরোজ আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, এ সফটওয়্যার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে। অনলাইন ছাড়াও এটি অফলাইনে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যার। একই সঙ্গে এটি সহজেই পেন ড্রাইভ ও সিডিতেও বহনযোগ্য। শিগগিরই 'আদিবাসী অনলাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশ'-এর এক আয়োজনে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করা হবে।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাসহ অল্প কয়েকটি দেশে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বসবাস, তবে বাংলাদেশ ও ভারতেই তারা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বাস করছে। তাদের রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, কৃষ্টি, রীতিনীতি, সাহিত্য, লোকগাথা ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। তারা নিজেদের 'সান্তাল' বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সিধুঁ-কানহু নামের দুই সাঁওতাল সহোদর জীবন দিয়ে গড়ে তোলেন সাঁওতাল বিদ্রোহ, যা ইতিহাসে ব্রিটিশরাজের সিংহাসন কাঁপানো 'সান্তাল হুল' নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাঁওতালরা সরাসরি সম্মুখ সমরে বীরত্বপূর্ণ লড়াই করে। স্বাধীন দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও রয়েছে তাদের সক্রিয় অবদান।
সাঁওতালি ভাষার টাইপিং সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা সমর মাইকেল সরেন নিজেও একজন সাঁওতাল। তথ্যপ্রযুক্তির পাশাপাশি ভাষাগত সংখ্যালঘু জনজীবনের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নিয়মিত ব্লগ লেখেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি 'আদিবাসী বাংলা ব্লগ'-এরও প্রধান নির্মাতা। সমরের ব্লগ সাইটটি এ বছর মানবাধিকার বিভাগে জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এ দেশের ইতিহাস সংরক্ষণে তাঁর উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে আর্কাইভ এবং একটি ওয়েবসাইট। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজশাহীর এক সুধী সমাবেশে আর্কাইভ এবং ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া তরুণ এই উদ্ভাবক উইকিপিডিয়ার আদলে 'আদিবাসী তথ্যকোষ' নির্মাণের কাজেও হাত দিয়েছেন।
সমর মাইকেল সরেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আশা করছি, ইউনিকোডভিত্তিক সান্তাল ভাষার টাইপিং সফটওয়্যার হড় কাথা সারা বিশ্বের সাঁওতালি জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল জগৎ সম্পর্কে আগ্রহী করে লেখালেখির পথ সুগম করবে। সাঁওতাল ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই আমাদের এ প্রয়াস। প্রণোদনার অভাবে সমৃদ্ধশালী ভাষাটির ব্যবহার দিন দিন কমছে। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন এ ভাষার শিক্ষিতজনরা মাতৃভাষায়ই কম্পিউটারে লেখালেখি করতে পারবে। প্রথম প্রথম যারা সাঁওতালি ভাষার কিবোর্ডে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না, তাদের জন্য এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে মাউস চেপে লেখালেখিরও সুযোগ থাকছে।'
সমর মাইকেল সরেন জানান, আদিবাসী বাংলা ব্লগ 'ডাবি্লউ ফর স্টাডি ডটকম' সংস্কারের পাশাপাশি তাঁরা পুরোপুরি সাঁওতালি ভাষার একটি পৃথক ব্লগ সাইট এবং সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর ওপর আরেকটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু করেছেন। সংস্কার ও নির্মাণের পর শিগগিরই এ দুটি ব্লগ সাইট এবং ওয়েব পেজ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
হড় কাথার আরেক উদ্ভাবক সমর সরেনের বন্ধু ফিরোজ আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, এ সফটওয়্যার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে। অনলাইন ছাড়াও এটি অফলাইনে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যার। একই সঙ্গে এটি সহজেই পেন ড্রাইভ ও সিডিতেও বহনযোগ্য। শিগগিরই 'আদিবাসী অনলাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশ'-এর এক আয়োজনে সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করা হবে।
No comments