সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বৈত জ্বালানিকরণে ব্যয় বাড়ছে by জাফর আহমেদ

সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রকে দ্বৈত জ্বালানিকরণ (ডুয়েল-ফুয়েল) প্রকল্পের ৫০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি আবারও ৬ মাস মেয়াদ বাড়িয়ে সংশোধন করা হচ্ছে। মাত্র ৪০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকা যুক্ত হয়ে এখন ৬০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হবে। অতিরিক্ত ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির এ সংশোধনী প্রস্তাব আগামীকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) উত্থাপন করা হবে। এ ছাড়াও বৈঠকে


রাজশাহী অঞ্চলের শহর এলাকায় বিদ্যুৎ পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের ৩০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবও উত্থাপন করা হতে পারে। বৈঠকে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ৬টি প্রকল্প অনুমোদন পেতে পারে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৬ সালে। ওই সময়ে ৬৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছর মেয়াদে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হলেও দু'বার সংশোধনীর মাধ্যমে তিন বছর মেয়াদের নিয়ে প্রকল্পটি শুরু করা হয়। ২৭৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় নির্ধারণ করে প্রকল্পটির ব্যয় ৯৬২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। প্রথমে এটি শুধু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু দেশে গ্যাসের সংকট দেখা দেওয়ার পর বর্তমান সরকার এটিকে তেল ও গ্যাস দ্বৈত জ্বালানিতে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সূত্র জানায়, দ্বৈত জ্বালানিকরণ প্রক্রিয়া ২০১১ সালের জুন মাসে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটি শুরু করা হয়। কাজ শুরু করার পর ক্রয় পদ্ধতির পরিবর্তনজনিত সমস্যায় পড়ে প্রকল্পটি গতি হারিয়ে বসে। ফলে মেয়াদ অনুযায়ী ২০১১ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। প্রথমবার ব্যয় না বাড়িয়ে এক বছর সময় বাড়িয়ে ২০১২ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে সংশোধন করা হয়।
প্রথম সংশোধনীর পর কাজ শুরু করতে গিয়ে প্রকল্পটি আবার বিদ্যুৎ নির্মাণ পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি সমস্যায় পড়ে। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটিতে আবারও সংশোধনী অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। তাই প্রকল্পটিতে এবার দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধনী আনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দেশে গ্যাস সংকটের কারণে মূলত দ্বৈত জ্বালানিতে উন্নীত করা অবশ্যম্ভাবী হয়েছিল। এখন গ্যাস সংকট থাকলেও দ্বৈত জ্বালানি হওয়া বিকল্প জ্বালানি দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এবার কেন্দ্রটি সফলতার মুখ দেখবে বলে আশা প্রকাশ
করেন তিনি।
এদিকে আগামীকালের একনেক বৈঠকে ৫ হাজার ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেতে পারে বলে জানা গেছে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ (দ্বিতীয়) পর্যায় প্রকল্প। এর ব্যয় ৭৮০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-২) প্রকল্প। এর ব্যয় ৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। ১৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ১০৪ কোটি টাকা। কন্সট্রাকশন অব এভিয়ান রিফুয়েলিং ফ্যাসিলিটিজ এট সিলেট প্রজেক্ট। এর ব্যয় ৫১ কোটি টাকা এবং ১১০ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ইমার্জেন্সি রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড এক্সপানশন অব আরবান এরিয়া পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সংশোধনী প্রকল্পটি।

No comments

Powered by Blogger.